সুপ্রভাত বগুড়া (শিমুল হাসান,আদমদীঘি( বগুড়া), প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদর থেকে ছাতিয়ানগ্রাম সড়কে লাগানো গাছগুলো দিনদুপুরে চুরি করে কেটে নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। গাছগুলো বন বিভাগের তালিকাভুক্ত না হওয়ায় তারা পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। ফলে চোর চক্র সুযোগ পেলেই সাবাড় করছে সড়ক ঘেষা এসব গাছ। সর্বশেষ শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় কাটা ৩টি গাছের মধ্যে ১টি গাছ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। চোর চক্রটি বাঁকি ২টি গাছ স্থানিয় ‘ছ’ মিলে বিক্রি করে দিয়েছে বলে জানান স্থানিয়রা।
এর আগে এ কৌশলেই চক্রটি প্রায় ২০-২৫টি গাছ সাবাড় করেছে বলেও জানান তারা। গাছগুলো রক্ষায় এ পর্যন্ত কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় নি। একে অপরের উপর গাছগুলো দেখভালের দায়িত্ব দেখিয়ে দিয়ে দায় সাড়ছেন কর্তাব্যক্তিরা। বন বিভাগের আদমদীঘি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামছুল আলম জানান, অনুমান করা হচ্ছে আদমদীঘি-ছাতিয়ানগ্রাম ৩ কিলোমিটার সড়কের পাশে গাছগুলো আশির দশকে লাগানো হয়েছে। তবে বাগানটি তাদের আওতায় নয়। আর একারনে তারা চুরি ঠেকাতে বা চোরদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
তিনি বলেন যেহেতু বাগানটি তাদের আওতায় নয় সেহেতু এটি এলজিইডি অফিসের তত্বাবধানে থাকার কথা। উপজেলা প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গাছগুলো বনবিভাগের আওতায় হলে আমাদের সাথে চুক্তি থাকে। আর গাছগুলো যদি বনবিভাগের না হয় তাহলে নিয়মনুযায়ী গাছগুলো এলজিইডি দপ্তরের হয়। তাছাড়া গাছের নীতিমালা অনুযায়ি যে রাস্তাগুলো এলডিইডির এ্যাকোয়ার করা থাকবে শুধু সেসবই গাছ এলজিইডির হবে। অন্যথায় এ্যাকোয়ার না থাকলে সেটি আমরা দাবি করতে পারিনা।
তবে এ রাস্তার গাছগুলো সম্ভবত উপজেলা পরিষদের হতে পারে, সেক্ষেত্রে গাছগুলোর এসিল্যান্ডের তত্বাবধানে থাকবে। সহকারি কশিশনার (ভূমি) মাহবুবা হক জানান, সরকারি জায়গার গাছগুলো এসিল্যান্ড অফিসের তত্বাবধানে। তবে গাছ চুরির বিষয়টি তাদের জানা নেই। চোরদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশে বড়-ছোট গাছগুলোর দুটি সারি। গাছের সারিতে তিনটি কাটা গাছের গোড়া দেখা যায়। এতে অনুমান করা যায় প্রকাশ্যেই কাটা হয়েছে গাছগুলো।
এসময় স্থানিয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় মানুষের আনাগোনা কম থাকার সুযোগে সংঘবদ্ধ চোরচক্রের ৪-৫ জন সদস্যরা দুপুরেই প্রকাশে ৩টি মেহগনি গাছ কেটে ফেলেছে। এসময় তারা আরো ৪টি গাছ কাটার জন্য গাছের ডাল কেটে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিষয়টি স্থানিয় সচেতন মহল জানতে পেরে থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে গাছ কাটার সরঞ্জাম রেখে চক্রটি পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এসব সরঞ্জাম ও একটি কাটা গাছ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
তবে পরের দিন শনিবার সকালে ওই চোর চক্রটির খড় দিয়ে ঢেকে রাখা গাছগুলো ভ্যানে করে খাড়িরব্রিজ এলাকায় একটি ‘ছ’ মিলে বিক্রি করে দেন। থানার ওসি জালাল উদ্দীন জানান, গাছ চোর চক্র ও চক্রের সাথে জড়িতদের চিহিৃত করে গ্রেপ্তারে জোড় তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিন সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি তার জানা ছিলো না। অপরাধিদের আইনের আওতায় এনে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে দন্ড দেয়া হবে।