নওগাঁ বদলগাঁছী তে সরকারী জলাশয়ের সাথে বাক্তি মালিকানাধীন জমি লিজ দেওয়ার অভিযোগ

262
নওগাঁ বদলগাঁছী তে সরকারী জলাশয়ের সাথে বাক্তি মালিকানা জমি লিজ দেওয়ার অভিযোগ। ছবি-বুলবুল

সুপ্রভাত বগুড়া (বুলবুল আহম্মেদ ( বুল) (বদলগাছী, নওগাঁ): নওগাঁর বদলগাছীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সরকারী জলাশয়ের সাথে ব্যক্তি মালিকানা ৩ একর ৫৮ শতক জমি জোর পূর্বক লীজ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মথুরাপুর ইউপির থুপশহর মৌজার বড়বিলা জলাশয়ে।

অভিযোগে জানা যায়, বড়বিলা ২৩.৬০ একর জলাশয়ের মধ্যে ৩.৫৮ একর জলাশয় ব্যক্তি মালিকানা রয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মালিকানা উপেক্ষা করে সরকারী জলাশয়ের সাথে মালিকানা জলাশয় প্রতি বছর অবৈধভাবে লীজ দেওয়া হয়। জমির মালিক তার মালিকানা জলাশয় লীজ না দেওয়ার জন্য এসিল্যান্ড, ইউএনও সহ জেলা প্রশাসক বরাবরে বারবার অভিযোগ করে কোনো লাভ হয়নি।

অবশেষে জমির মালিক সহিদুল ইসলাম ২০০২ সালের ২৯ এপ্রিল আদালতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মামলা করলে দুতরফা শুনানী অন্তে ২০০৪ সালের ২১ অক্টোবর নওগাঁ ৬ নং সহকারী জজ আদালত সরকারের বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মামলা নং ৪১/২০০২ নং সঃ প্রঃ। পরবর্তীতে এই আদেশের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ আদালত নওগাঁ ৩২৮/২০০৪ নং আপীল মামলা দায়ের করলে ২০০৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তা না মঞ্জুর হয়।

এরপর ২০০৭ সালে মালিকানা জমি বাদ দিয়ে ৩ বছর মেয়াদে লীজ দেওয়া হয়। তারপর থেকে আবারও অবৈধ পন্থায় মালিকানা জলাশয় লীজ দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ভ’মি মন্ত্রনালয় থেকে আশিক চৌধুরী শাহিনের নামে ৬ বছর মেয়াদে বাংলা ১৪২৩ সন হতে ১৪২৮ সন পর্যন্ত লীজ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ১ মার্চ নওগাঁ জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় কার্য বিবরণীতে সাবেক জেলা প্রশাষক ড. মো. আমিনুর রহমান উল্লেখ করেছেন বড়বিলা জলাশয়ে ২৩.৬০ একর জলাশয়ের মধ্যে ৩.৫৮ একর সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানা রয়েছে এবং তাদের খাজনা খারিজ রয়েছে।

৬ বছর মেয়াদে বর্তমান লীজের মেয়াদ শেষ হলে বড়বিলা জলমহাল থুপশহর মৌজায় সাবেক ১৭০ ও হাল ৩০২ নং দাগের ৩.৫৮ শতক জলাশয় বাদ দিয়ে পরবর্তীতে বড়বিলা জলাশয় লীজ দেওয়া হবে। জমির মালিক সহিদুলের ছেলে ময়েন উদ্দিন বলেন, বারবার বড়বিলা জলাশয় লীজ গ্রহিতাদের বিশেষ তদবীরে খুশি হয়ে অবৈধ ভাবে তাদের মালিকানা জলাশয় লীজ দেওয়া হয়। তারা প্রতিবাদ করলে থানা পুলিশ দিয়ে তাড়ানো হয়। মারপিট করে ও মামলা দিয়ে হয়রানী করছে প্রশাসন।

তাদের সীমানা ঘেড়াও করা ছিল। বর্তমান লীজ গ্রহিতা তা তুলে ফেলে দিয়ে দখল করেছে। লীজ গ্রহিতা আশিক চৌধুরী শাহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার আমাকে লীজ দিয়েছে তাই আমি দখল করেছি। মথুরাপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বলেন, আমি কাগজপত্র দেখিনি কিন্তু শুনেছি ঐ বিলে মালিকানা জমি আছে।মথুরাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাদি চৌধুরী টিপু বলেন, বড়বিলা জলাশয়ে দুটি ভাগ আছে।

তার এক অংশ পুরোটাই মালিকানা। আর এক অংশ খাস। কিন্তু সরকারীভাবে লীজ দেওয়া হয় পুরো জলাশয়।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার(ভ’মি) মোঃ নাহারুল ইসলাম বলেন, আমি কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারবো না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাঃ আবু তাহির বলেন, ঐ বিল কত তারিখে লীজ দিয়েছে এটা আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।

আদালতের চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যক্তি মালিকানা জমি খাস জলাশয়ের সাথে কেন অবৈধভাবে লীজ দেওয়া হয় এবিষয়ে জানার জন্য নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোঃ হারুন আর রশীদ এর সঙ্গে বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করা হয়নি।