বগুড়ায় পরকিয়ার বাধা দুর করতে স্বামীকে হত্যা, মাটির গর্ত থেকে লাশ উদ্ধার !

595

সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব বগুড়া প্রতিনিধি): পরকীয়া প্রেমের পথের বাধা দুর করতে ছেলেকে বাবার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানসিক ব্ল্যাক-মেইল করে মনের পরিবর্তন ঘটিয়ে পিতৃহত্যার মতো ঘৃণ্য কাজে ছেলেকে পক্ষে নিয়ে এবং প্রেমিককে সাথে নিয়ে স্ত্রী হয়ে স্বামীকে হত্যার এক অভিনব রহস্য উন্মোচন করেছে বগুড়ার সোনাতলা থানা পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রানিরপাড়া গ্রামে। নৃশংস ও বিভৎস ্এ ঘটনার দীর্ঘ তদন্ত শেষে শুক্রবার ২৯ মে সোনাতলা রেল লাইনের পাশে ডোবার ধারে তিন ফ্টু মাটির নীচ থেকে ওই ব্যাক্তির লাশ পুলিশ উদ্ধার করে এবং বগুড়া জেলা পুলিশের এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তাায় বলা হয়, ২০১৯ সালের পহেলা জুলাই সোনাতলা সদর ইউনিয়নের রানিরপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (৪৭) নামক এক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে মর্মে সোনাতলা থানায় একটি জিডি করে (জিডি নং ২৫)। নিখোজ ব্যক্তির ভাই শফিকুল ইসলাম।

কিন্তু রফিকুুলের স্ত্রী এবং তিনটি সন্তান থাকা সত্বেও ভাই হয়ে বাদী হয়ে জিডি করায় বিষয়টি রহস্যজনক মনে করে পুলিশ। এরপর বিষয়টি আমলে নিয়ে জুন মাসের ১৫ তারিখ থেকে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎপর হয় পুলিশ। দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেলেও হাল ছাড়েননি তদন্ত টিম প্রধান সোনাতলা সার্কেল এএসপি কুদরত ই খুদা শুভ ।

সাথে ছিলেন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাহিদ। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহঃবার রাতে তেকানি চুকাইনগরের শাকিল (২২) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেলে আটক করা হয় নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রী রেহানা এবং ছেলে জসিমকে। এরপর তাদের তথ্যমতে রফিকুলের স্ত্রীর গোপন প্রেমিক মুহিদুলকে।

মুহিদুল রফিকুলের প্রতিবেশী। একে একে সকলকে থানায় নিয়ে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে তারা একপর্যায়ে স্বীকার করে যে মুহিদুল, রফিকুলের স্ত্রী রেহানা, ছেলে জসিম এবং রেহানার বোনের ছেলে শাকিল মিলে রফিকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার লাশ বস্তায় ভরে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বগুড়া সোনাতলা রেললাইনের পাশে প্রায় তিনফুট গর্ত করে পুঁতে রেখেছে।

খুনের কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ জানা যায়, পরকীয়া প্রেমের পথের বাধা সরাতেই রফিকুলকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে রেহানা এবং মুহিদুল। ছেলেকে বাবার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানসিক ব্ল্যাক-মেইল করে পক্ষে নিয়ে এসে পিতৃহত্যার মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িত করে মা রেহানা। ঘটনাচক্রে ছেলে শাকিল জড়িয়ে যায়।

ঘটনার দিন মুহিদুল এবং জসিম ঘুমের বড়ি এনে রাতের খাবারের সাথে মিশিয়ে রফিকুলকে খাইয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করিয়ে গলা টিপে হত্যা করে। হত্যাকান্ডে চারজনই সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। এরপর শাকিল, মুহিদুল এবং জসিম লাশ ঘাড়ে করে রেললাইনের পাশে নিয়ে পুঁতে রাখে।

বগুড়া পুলিশ সুপার মোঃ আলী আশরাফ ভূঞার উপস্থিতিতে পানির মধ্য থেকে গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় আশেপাশের কয়েক গ্রামের কয়েক হাজার লোক জমায়েত হয়।