বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় যেভাবে ধরে রাখবেন নিজের সৌন্দর্য্য!

285

সুপ্রভাত বগুড়া(ফ্যাশন ও রুপচর্চা): গরমের পর একটু স্বস্তির আশ্বাস দিয়ে শহরের বুকে নেমে এসেছে বৃষ্টি৷ আর এই বর্ষাতেই স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় চুল ও ত্বকের খেয়াল রাখা বেজায় মুশকিল৷ তবে মুশকিল হলেও নিজেদেরকে তো ফিট,সুন্দর ও পরিবেশন যোগ্য করে তুলতেই হবে৷ এইনিয়ে কোনো খামতি রাখাই চলবে না৷ তাই বর্ষার কিছু টিপস রইল আপনাদের জানানো হলো৷-

চুলের যত্ন : বর্ষাকালে বৃষ্টির দিনে মনটা যেন খুশি-খুশি হয়ে ওঠে। কিন্তু মন খুশি হলেও চুল কিন্তু একটুও খুশি হয় না। কারণ বৃষ্টির জল মাথায় পড়তেই চুল হয়ে যায় রুক্ষ, শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল। বর্ষায় চুলের সমস্যা দূর করার জন্য রইল কয়েকটা সমাধান।

১)বর্ষার হাওয়ায় জলীয় বাষ্প বেশি থাকে বলে চুল কোঁকড়ানো দেখায়৷তাই নিয়মিত শ্যাম্পু ও কন্ডিসানার ব্যবহার করুন৷
২)বর্ষাকালে ঘন ঘন শ্যাম্পু করার প্রয়োজন হয়৷ তৈলাক্ত চুলে বেশি শ্যাম্পু করার দরকার হয়৷প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে পারেন৷ মাইল্ড হার্বাল শ্যাম্পু ব্যবহার করুন৷
৩)তিনটে পাকা কলা ও এক টেবিল চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করে মাথায় ৫০ মিনিট লাগিয়ে রাখবেন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নেবেন। এতে চুলের রুক্ষতা কমে এবং চুল হয়ে ওঠে চকচকে।
৪) দু’টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ও এক টেবিল চামচ মধু একটি পাত্রে নিয়ে হালকা গরম করে নেবেন। এরপর ওই তেল চুলের লেংথে ভাল করে লাগিয়ে নেবেন, খেয়াল রাখবেন স্ক্যাল্পে যেন না লাগে, কারণ এরফলে বর্ষাকালে চুল বেশি অয়েলি হয়ে যেতে পারে। ১৫-২০ মিনিট রাখার পর চুল ভাল করে শ্যাম্পু করে নেবেন।
৫)বর্ষাকালে অনেক সময় স্ক্যাল্প খুব অয়েলি হয়ে যায়। এর সমাধানের জন্য একটা পাতিলেবুর রস স্ক্যাল্পে ভাল করে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে নেবেন।
৬)মেথি চুলের জন্য খুব উপকারী। এরজন্য সারারাত একটা পাত্রে মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে জলটা ছেকে নেবেন। এরপর ছেকে নেওয়া জলটা আলাদা করে রাখবেন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধোওয়ার পর সবশেষে ওই মেথি ভেজানো জল দিয়ে চুল ধুয়ে নেবেন। এর ফলে চুল পড়া কমে, খুসকি দূর হয় এবং চুলের উজ্জ্বলতাও বাড়ে।

ত্বকের যত্ন:
গরমের অবসান ঘটিয়ে রিমঝিম ধারা মনে এনে দেয় শান্তি। কিন্তু সময়-অসময় অঝোর ধারা বা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে ভালোলাগা উবে যায়। আশপাশের পরিবেশ স্যাঁতসেঁতে হওয়ার সঙ্গে ত্বকেও দেখা দেয় নানা সমস্যা। এই সময়ে বাতাসের আর্দ্রতার কারণে রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ত্বক পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পায় না। ত্বক হয়ে যায় কালচে। ধরণ যেমনই হোক না কেন, ত্বকের যত্নে দিনে কয়েকবার করে মুখ ধোওয়া উচিৎ। আপনার ত্বকের সঠিক যত্ন নিশ্চিত করতে নিতে পারেন কিছু ব্যবস্থা।

  • শুষ্ক ত্বক:
    প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এক চা-চামচ গোলাপজল ও এক চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। কিছুক্ষণ পর জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এতে ত্বক থাকবে শুষ্ক, কোমল আর মসৃণ।
  • তৈলাক্ত ত্বক:
    গোলাপজল অথবা দুধের সঙ্গে বেসন মিশিয়ে পুরো মুখে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। মুখ ধুয়ে ত্বক উপযোগী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলেই হল।
  • মিশ্র ত্বক:
    পেস্তা বাদামের গুঁড়ো, গোলাপজল ও দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মুখের ত্বকে ভালো করে মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন। মিনিট কয়েক অপেক্ষা করে ধুয়ে নিলেই হল। ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ রোধ করবে, এমন ফেসওয়াসও কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করতে পারেন যাতে ত্বক ভালো থাকবে।

নখের যত্ন:
বর্ষায় নখের যত্ন নেওয়াও দরকার৷ বিশেষত পায়ের নখের যত্ন করুন। বর্ষায় পেডিকিওর খুবই দরকার। হাতের নখকে সুন্দর শেপ করে কাটুন। এরপরে সুন্দর উজ্জ্বল রঙের নেল পালিশ লাগিয়ে নিন। সুন্দর নেল আর্ট করুন।

মুখের মেক আপ:
বর্ষায় মুখে বেশি চড়া মেক আপ না করাই ভালো৷ এই সময় হাল্কা মেক আপ করুন। বৃষ্টির সময় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় ঘামও বেশি হয়৷ তাতে আপনার মেক আপ নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ মুখে অতি অবশ্যই ওয়াটার প্রুফ মেক আপ ব্যবহার করুন। ম্যাট ফিনিশের মেক আপ বর্ষায় ভালো লাগে।

এই বর্ষা কালে প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা বাইরে যাওয়ার দরকার হয় না। তাই আপনার ত্বকের মসৃণতা ফিরিয়ে আনতে পারেন বাড়াতেই কলা দিয়ে তৈরি একটা প্যাক ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে আপনি একটি পাকা কলা, ১ চা চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করতে পারেন।

কলার এই পাতলা প্রলেপটি মুখে ২০-৩০ মিনিট রাখুন। এরপরে ঠান্ডাজল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ দিন এই প্যাক ব্যবহারে আপনার ত্বক অনেক বেশি মসৃণ ও ফ্রেশ হয়ে উঠবে।

  • ঠান্ডা দই, লেবুর রস এবং মধুর মিশ্রণটি মুখে হালকাভাবে লাগিয়ে রাখুন। এটি ২০ মিনিট মুখে রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকে প্রাঞ্জলতা ফিরে আসবে।
  • শুষ্ক এবং রুক্ষ ত্বকের জন্য অ্যালোভেরার জেলটিও বেশ উপকারী। এরজন্য আপনি অ্যালোভেরার জেলটি সারা মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে তা ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা শুধু ত্বকের মসৃণতাই ফিরিয়ে আনে না ত্বকের বিভিন্ন ব্রণ ওঠারও প্রতিকার করে থাকে।