বুকার প্রাইজ-২০২৩ এর জন্য মনোনীত লেখকদের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ১৩ জন লেখকের ১৩টি উপন্যাসের প্রাথমিক তালিকা থেকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে ৬টি উপন্যাস।
ম্যান বুকার পুরস্কার (বুকার পুরস্কার) বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত। প্রতি বছর বিচারকদের দ্বারা নির্বাচিত ইংরেজি ভাষার শ্রেষ্ঠ উপন্যাসটিকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এ বছরের সংক্ষিপ্ত তালিকার ৬ জন লেখকই প্রথমবারের মতো বুকারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তালিকায় ১ জন ব্রিটিশ লেখক ও ১ জন কানাডিয়ান লেখকের নাম রয়েছে। এছাড়া, আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ জন করে লেখক মনোনীত হয়েছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদন বলছে, ২৬ নভেম্বর একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২৩ সালের বুকারজয়ী লেখকের নাম ঘোষণা করা হবে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পাওয়া প্রত্যেক লেখক পাবেন ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড ও বিজয়ী লেখক পাবেন ৫০ হাজার পাউন্ড।
সংক্ষিপ্ত তালিকায় মনোনীত ৬ লেখক ও তাদের উপন্যাসে কী আছে, জেনে নেয়া যাক-
পল মারে- ‘দ্য বি স্টিং’
মারের চতুর্থ উপন্যাস ‘দ্য বি স্টিং’-এ রচিত হয়েছে এক পারিবারিক গল্প, যেখানে পারিবারিক রাজনীতি, ভাগ্য বদল ও স্ট্রাগলের মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এ গল্পের পিতা তার গাড়ির ব্যবসা হারিয়ে স্বর্বশান্ত হতে বসেছেন, দুশ্চিন্তায় তার কন্যা মাদকের দিকে ঝুঁকেছে, আর ছোট ছেলেটি পালিয়েছে বাড়ি থেকে। চরমভাবে বিপর্যস্ত এক পরিবারের ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে তা নিয়েই এগিয়েছে উপন্যাসটি।
চেতনা মারু- ‘ওয়েস্টার্ন লেন’
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ লেখকের প্রথম উপন্যাস এটা। এক তরুণীর খেলার জগতে টিকে থাকার এ গল্পে দুঃখ, লড়াই ও বোনদের ভালোবাসা চিত্রিত হয়েছে। মূলত মাতৃবিয়োগের ব্যথা ভুলতে কিভাবে একটা গোটা পরিবার স্কোয়াশ খেলা শুরু করে এবং এই খেলাকে কেন্দ্র করে মেয়ের সঙ্গে বাবার মধুর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়- সে গল্পই বলা হয়েছে উপন্যাসটিতে।
আরও পড়ুন: এডগার অ্যালান পো: সাহিত্যে রোমান্টিসিজম
পল লিঞ্চ- ‘প্রফেট সং’
এ গল্পে আয়ারল্যান্ডকে একটি নব্য ফ্যাসিবাদী জাতীয়তাবাদী সরকারের শাসনের অধীনে কল্পনা করা হয়েছে। অস্থির সময়কালের প্রেক্ষাপটের এ গল্পে ইউনিয়ন নেতা ও শাসনের অনুভূত শত্রুদের রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখা যায়। এর ফলে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি হয়, সঙ্গে অর্থনৈতিক পতন। এর মূল অংশে, ডাবলিনের একজন সাধারণ নারী কিভাবে তার পরিবারকে এ অস্থির সময়কালে রক্ষা করে তা-ই চিত্রিত হয়েছে।
পল হার্ডিং- ‘দিস আদার ইডেন’
এ বইটির পাঠকেরা মনে করছেন, সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা হয়েছে উপন্যাসটি। বলা হয়েছে, একটি ছোট কিন্তু বৈচিত্র্যময় সম্প্রদায়ের কথা। প্রচলিত বিচ্ছিন্নতা আইনের কারণে ওই সম্প্রদায় বাস্তুচ্যুত হয়ে ‘এপেল আইল্যান্ডে’ আশ্রয় নেয়। শোষকের চোখে বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা এ সম্প্রদায়ের প্রতিটি পরিবারের জীবন ও লড়াইয়ের গল্প এ উপন্যাসে বলা হয়েছে।
জোনাথন এসকফরি- ‘ইফ আই সারভাইব ইউ’
উপন্যাসটি এরইমধ্যে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। লেখক ৮টি গল্পকে এক সুতায় গেঁথে এক পারিবারিক গল্পের মালা তৈরি করেছেন। গল্পে আমরা পাই এক জ্যামাইকান পরিবারকে যারা যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে বাস করতে এসে নানা চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ছে। বর্ণবাদী আচরণ, নিজস্ব সংস্কৃতি বিলিনের ভয়, অর্থনৈতিক দুর্গতি, বেকারত্ব, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া- এ সবই যেন শত্রু হয়ে দাঁড়ায় পরিবারটির সামনে। যুক্তরাষ্ট্রের আধুনিক জীবনকে পেতে ভিন্ন দেশ থেকে যারা যায়, তাদের প্রত্যেকেই যেন উপন্যাসটির গল্পগুলোকে অনুভব করতে পারবেন।
সারাহ বার্নস্টাইন– ‘স্টাডি ফর ওবেডিয়েন্স’
জেনোফোবিয়া অর্থাৎ বহিরাগতদের প্রতি ভীতি- এই একটি বিষয়কে দারুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে উপন্যাসটিতে। এ গল্পে এক তরুণী তার ভাইকে সাহায্য করতে নিজ এলাকা ছেড়ে দূরের এক রাজ্যে যায়। সমস্যা বাধে তখন, যখন নতুন এলাকার বাসীন্দারা তার আগমনকে সহজভাবে নিতে পারে না।