প্রকৃত যোদ্ধারা কখনও হার মানে না

208
ডা. শফিক আমিন কাজল। ছবি-ফেসবুক থেকে নেয়া

সুপ্রভাত বগুড়া (মিরাজুল ইসলাম): করোনা রোগীদের চিকিৎসায় জাতীয়ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আরএমও ডা. শফিক আমিন কাজল।

তবে গতানুগতিকভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি বসে থাকেন নি। বরং তার হাসপাতালকে যখন কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হিসেবে গড়ে তোলা হল তখন থেকেই ডা. কাজল করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পড়েন।

ঢাল-তলোয়ার ছাড়া সেই যুদ্ধে সহকর্মীদেরও উজ্জীবিত করেছেন। মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে করোনা যুদ্ধে জয়ী সকলের কাছে তার কর্মতৎপরতার প্রসংশা শোনা যায়।

যে কোন সময় করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন এমন আশংকা থাকলেও তাতে গ্রাহ্য করেন নি ডা. শফিক আমিন কাজল। রাস্তার পাশে পড়ে থাকা সংজ্ঞাহীন রোগীকে তুলে আনতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছুটে চলা, ভর্তি রোগীদের সার্বক্ষনিক খোঁজ নেওয়া, কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার জানাজা ও দাফন নিয়ে মৃতের স্বজনদের যাতে ভোগান্তি পোহাতে না হয়—

এমনকি চিকিৎসার প্রয়োজনে করোনা রোগীদের সংস্পর্শে যাওয়ার কারণে বাসার মালিকরা যখন ভাড়াটিয়া হিসেবে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বাসায় ঢুকতে দিতে নারাজ তখনও তিনি সহকর্মীদের পক্ষে সোচ্চার থেকেছেন।

এর বাইরে করোনাকালের নতুন ধরনের সাংবাদিকতাতেও সহযোগিতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ডা. কাজল। এজন্য করোনার এই দুর্যোগে বগুড়ার মানুষের ভরসার একটা জায়গাও করে নিয়েছেন তিনি।

তার জনবান্ধব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বগুড়ার সর্বস্তরের মানুষের প্রিয় চিকিৎসক জনাব সামির হোসেন মিশুর কাজের ধরণের কোথায় যেন একটা মিল পাওয়া যায়। আমার ঘরের মানুষ করোনা পজিটিভ হয়ে গৃহবন্দী।

১৩ জুন রাতে ফোনে এনিয়ে আলাপের এক পর্যায়ে ড. কাজল বললেন, ‘ভাই, আপাকে নিয়ে কোন চিন্তা করবেন না। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন ইনশাআল্লাহ। ‘ চিকিৎসা বিষয়ক সাজেশন নেওয়া শেষে তিনি বললেন, ‘ভাই আপাকে করোনা জয়ের কাহিনি লিখতে বলবেন।

যেহেতু তাকে অনেক মানুষ ফলো করে, তাই তার লেখা পড়ে করোনার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে সবাই সাহস পাবে।’ প্রিয় সেই যোদ্ধা ডা. শফিক আমিন কাজলের আশংকা অবশেষে সত্যি হয়েছে। তিনি করোনা পজিটিভ।

এতে আমরা খানিকটা দুশ্চিন্তায় পড়লেও হতাশ নই। কারণ জানি যার ওপর মানুষের ভরসা বেশি তাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অবশ্যই ব্যর্থ করেন না। তরুণ এই চিকিৎসক সবার বিশেষত বগুড়াবাসীর দোয়ায় দ্রুতই সুস্থ হবেন—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

তথ্যসূত্র : Mohon Akhand ভাইয়ের টাইমলাইন থেকে নেয়া।