
সুপ্রভাত বগুড়া (এমরান মাহমুদ প্রত্যয়,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি): নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার ভান্ডারপুর গ্রামের প্রখ্যাত জমিদার বিনোদ কুমার লাহিড়ী বহুকাল আগে তীর্থভূমি কাশীতে গিয়েছিলেন।
গঙ্গাতীরবর্তী কাশী বা বেনারস ভারতের প্রধান আম উৎপাদন এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম। জমিদার বিনোদ লাহিড়ী তীর্থকর্ম শেষে কাশী থেকে দেশে ফেরার পথে কয়েকটি নাগ ফজলী আমের চারা সংগ্রহ করে ভান্ডারপুরে নিজস্ব আমবাগানে রোপণ করেন।
এরপর নাগ ফজলী আম কলমের চারার মাধ্যমে আশপাশের গ্রামগুলোয় ছড়িয়ে যেতে থাকে। এভাবেই আমটি পরিচিতি পায় ভান্ডারপুর গ্রামের বাইরে। নওগাঁর দুবলহাটি ও বলিহার রাজবাড়ির বাগানেও এ আমের গাছ ছিল বলে জানা যায়।
নওগাঁ জেলার বদলগাছি, ধামইরহাট, সদর, রানীনগর মহাদেবপুর ও আত্রাই উপজেলায় নাগ ফজলী আমের চাষ হচ্ছে ব্যাপকভাবে। বদলগাছি থানার শ্রীরামপুর, দেউকুড়ী, কোলা, ভান্ডারপুর, দ্বীপগঞ্জ ও দুধকুরি গ্রামে সহধামইরহাট, সদর, রানীনগর মহাদেবপুর ও আত্রাইয়েআমের অসংখ্য বাগান গড়ে উঠেছে।
নাগ ফজলী আম লম্বায় প্রায় চার ইঞ্চি আর চওড়ায় দেড় ইঞ্চি হয়ে থাকে। এর নিম্নাংশ বাঁকানো। নাক বড় এবং স্পষ্ট বেরিয়ে আসা। আমটির গড় ওজন ৩০০ গ্রাম। আকারে অনেকটা বড় এবং নাক স্পষ্ট, এ কারণে এর নাম হয়েছে নাগ ফজলী।
পরিপক্ব অবস্থায় এর ত্বকের রং কলাপাতা সবুজ। পাকার পর বোঁটার আশপাশে হালকা লাল রঙের পাশাপাশি অনেকটা অংশজুড়ে হলুদ রং ধারণ করে। লাল, হলুদ ও সবুজের মিশ্রণে বিচিত্র একটি বর্ণের সৃষ্টি হয় আমটিতে। ফলটির ত্বক মসৃণ, খোসা পাতলা, শাঁস আঁশবিহীন অত্যন্ত মোলায়েম। স্বাদে–গন্ধে তুলনাহীন। অত্যন্ত রসাল এই আমের মিষ্টতা রানিপছন্দ ও গোপালভোগ আমের সমান। শাঁসের রং কমলাভ।
নাগ ফজলী আম প্রতিবছর ফলে। একেকটি গাছে ফল আসে প্রচুর পরিমাণে। গাছটির গড়ন মাঝারি। নাগ ফজলী মধ্য মৌসুমি জাতের আম। জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরু থেকে অর্থাৎ জুন মাসের ৮ তারিখ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত নাগ ফজলী আমের ভরা মৌসুম।
এরপর বাজারে (নওগাঁ এলাকার) এই আম পাওয়া যায় না। পরিপক্ব আম সংগ্রহের পর প্রায় ১৫ দিন ঘরে রেখে খাওয়া যায়।নাগ ফজলী আম স্বাদে অতুলনীয়,তাই এ নাগ ফজলী আমের বর্তমানে চাহিদা সর্বাধিক।