৬ দিনের মাথায় তালেব হত্যার রহস্য উন্মোচন, আসামি গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার!

857
৬ দিনের মাথায় তালেব হত্যার রহস্য উন্মোচন, আসামি গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার! ছবি-দিপংকর


সুপ্রভাত বগুড়া (এ কে দিপংকর,বগুড়া সদর প্রতিনিধি): গত ১৪ জুন রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাবগ্রাম বাজার ইউনিট যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আবু তালেব(৩৫) কে শহরের আকাশতারা জুট মিলের সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ঘটনার পরপরই পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুত ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন এবং আসামি গ্রেফতারের নির্দেশনা প্রদান করেন।

ঘটনার পরদিন নিহত তালেবের স্ত্রী বাদি হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটা হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়।

পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনায় বেশ কয়েকটি টিম মাঠে নামে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত এবং গ্রেফতারে তৎপর হয়।

পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার স্যারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নিরবিচ্ছিন্ন তদন্তে ঘটনার এজাহারনামীয় আসামি চাঁন মিয়া(২১) পিতা আফসার প্রামানিক এবং বাপ্পারাজ বাপ্পা পিতা কাইয়ুম প্রামানিক উভয় সাং আকাশতারা মধ্যপাড়া থানা সদর জেলা বগুড়াদ্বয়কে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটা চৌকস টিম ইন্সপেক্টর এমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে-

আজ(১৯/৬/২০২০) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের বারপুর এলাকা থেকে রক্তমাখা পোশাক পড়া গ্রেফতার করে। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়ানোর কারনে তারা পোশাক পরিবর্তন করতে পারেনি বলে জানায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে তাদের নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধারে যাওয়া হয় এবং আকাশতারা বগুড়া – গাবতলী রোড সংলগ্ন (এশিয়ান পেইন্ট এর গুদামের সাথে)ইউক্যালিপটাস বাগানের ভিতর থেকে আসামিদ্বয়ের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উপস্থিত জনগণের সামনে জব্দ করা হয়।

অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদ্বয় পুলিশকে জানায় মামলার আসামি তিনজনই একসাথে চলাফেরা করে।তারা প্রায় সবসময় বার্মিজ চাকু বহন করে থাকে। ১ নম্বর আসামি ফিরোজ ফোকরার সাথে খুন হওয়া তালেবের পূর্বে ভাল সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।

চাঁন এবং বাপ্পার সাথেও তালেবের সম্পর্ক ভাল ছিল না। তালেব বিভিন্ন সময়ে তাদের বিভিন্ন ইস্যুতে ডাকলেও তারা যেত না। তালেবের বড়ভাই সুলভ আচরণ তিনজনের কেউই মন থেকে মেনে নিতে পারেনি।

ঘটনার দিন এই তিনজন ঘটনাস্থলের পাশে আইয়ুবের দোকানে পান খাচ্ছিল। এমন সময় তালেব একটা মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে আসে। মোটরসাইকেল থেকে নেমে সে চাঁনকে ডাক দিলে তিনজনই এগিয়ে যায়।

তালেব চাঁনকে জিজ্ঞেস করে “কিরে,কথা শুনিস না কেন, বেশি সেয়ানা হয়ে গেছু? কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চাঁন চাকু বের করে তালেবের বুকে আঘাত করলে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পিছন থেকে তিনজনই তালেবকে এলোপাথারি ছুড়ি মারতে থাকে।

তালেব মাটিতে পড়ে যাবার পরেও তারা মারতে থাকে । এ সময় ফিরোজের চাকুর আঘাতে তালেবের শ্বাসনালী প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তাদের নিজেদের এলোপাথারি কোপে চাঁনের ডান হাতের কনে আংগুল এবং ফিরোজের ডান কনুই কেটে যায়।

ঘটনায় জড়িত অপর আসামি ফিরোজ ফোকরাকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে। আসামিদ্বয়কে আজ ২০/৬/২০২০ তারিখে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানা গেছে।