আপনার যাকাতের টাকায় বেঁচে যেতে পারে রবিউল

আপনার যাকাতের টাকায় বেঁচে যেতে পারে রবিউল । ছবি-হাদিসুর রহমান

একটি মানবিক সাহায্যের জন্য আবেদন :

সুপ্রভাত বগুড়া (হাদিসুর রহমান, কাহালু (বগুড়া): ছবিতে যাকে দেখছেন সে মো. রবিউল ইসলাম সোহাগ। সে অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সে আর্থিক সংকটের কারণে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই কৃষিকাজ,ভ্যান ,রিকশা চালানো ও দিনমজুরের কাজ করেছে, এমনকি চট্টগ্রামে রড কোম্পানিতেও শ্রমিকের কাজ করেছে। আর্থিক সংকটে যাযাবরের ন্যায় দূর-দূরান্তের বিভিন্ন জায়গায় শ্রম দিয়েছে। এলাকার বেশিরভাগই তাকে কৃষক বা রিকশাচালক হিসেবেই জানতো।

আলিম পাশ করার পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তি হয়, ভার্সিটি লাইফে ছুটি পেলেই বাবার সাথে কাজ করতো। অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে তার পরিবারে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মতো ঋণ হয়েছিল।এমনও দিন গেছে কাজ না থাকলে খাবারও জোটেনি।মাদ্রাসার শিক্ষকরা তার দাখিল ও আলিম পরীক্ষার সমস্ত বই/গাইডের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন।

Pop Ads

পারিবারিক সমস্যার কারণে দাখিলের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা বাড়ি থেকে পালিয়ে গোপনে বন্ধুর বাসা থেকে দিয়েছিল। শিক্ষকগণ দাখিলের ফর্মফিলাপ ফ্রি না করলে হয়তো লেখাপড়া বাদ দিয়ে চট্টগ্রামেই কাজ করতে হতো। পরীক্ষার সময়ে তাকে খাবার, খরচ ও টেনশন থেকে নিরাপদে রাখতে এক বড়ভাই আমাকে মেসে রাখেন। চট্টগ্রামেই কাজ চলাকালীন দাখিল পরীক্ষার ফলাফল জি.পি.এ ৫.০০ জানতে পারে। বাড়িতে এসে প্রায় দেড় বছর গ্রামে কৃষি কাজ ও শহরে রিকশা চালাতো এবং রাতে চতুর্থ,পঞ্চম,ষষ্ঠ,সপ্তম,শ্রেণির ছাত্রদের টিউশনি করাতো।

চট্টগ্রাম থেকে ফিরে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে জি.পি.এ ৫.০০ পেয়েছিল। আলিমের প্রত্যেক পরীক্ষা শেষে বিকেলে বৃদ্ধ বাবার সাথে মাঠের কাজে সাহায্য করতো। সে সময় সপ্তাহে ৬ হাজার টাকা কিস্তির ঋণ শোধ করতে হয়েছে তার পরিবারের।তাই অর্থাভাবে লেখাপড়া বন্ধই করে দিয়েছিল। কিন্তু পরের বছর সে অনুধাবন করে যে, এইসব কাজ করে সে তার পরিবারের সমস্যা দূর করতে পারবো না এমনকি ভবিষ্যতে কোনদিনই সাফল্য ধরা দিবে না, এজন্যই দরকার ভালো একটা চাকরী। তাই আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে পরবর্তী বছরে যাকাত/ফিতরার টাকা চেয়ে এডমিশনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল। এলাকার বড়ভাই ফ্রি কোচিংয়ের ব্যাবস্থা করে দিলেও তাকে সামলাতে হয়েছে সংসারের অভাব,তাই কোচিং করার পরিবর্তে বাড়িতে একা একাই এডমিশনের প্রস্তুতি গ্রহন করে।

একবছর লেখাপড়া বন্ধ রেখে আবারও লেখাপড়ার প্রস্তুতি গ্রহন করার কারণে অনেকেই তার পরিবারকে অপমান ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পর ভাবলো আমি কি লেখাপড়া করতে পারবো?আর ভর্তির টাকায় বা কোথায় পাবো? যাইহোক,ভার্সিটিতে কয়েকজন বন্ধু পেয়েছিল যারা তার কষ্টে কষ্ট পায় আবার আমার সাফল্যে হাসে। সেই বন্ধুগুলোই ছিল তার ভার্সিটি জীবনের প্রেরণা।

বন্ধুরা ভার্সিটির কঠিন বিষয়গুলো সবসময় সহজ করে দিয়ে তাকে মানসিক ভাবে শক্তিশালী রাখার চেষ্টা করেছিল। এরই মধ্যে আরো অনেক ট্রাজেডি রয়েছ যা বলার অযোগ্য। গত দেড়বছরেই তার পরিবারে একের পর এক যে আঘাত এসেছে তা সে কখনোই কাউকে জানতে দেইনি। গত ৫ মাস যাবত সে পেট,পিঠ ও বুকের ডানপাশে কোমরের উপর পর্যন্ত অসহ্য ব্যাথা অনুভব করে।

৩ বার মেডিকেলে ভর্তিসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হসপিটালে চিকিৎসা নিয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শে ১৯টি পরীক্ষা পরও রিপোর্টে সুনির্দিষ্ট কোন রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়নি।পরিবারের সদস্য বাবা-মাসহ পাঁচভাই ও চারবোন। তার পরীক্ষা চলাকালীন মায়ের হাত ভেঙ্গে যায়। দুইবার অপারেশনের জন্য মাকে নিয়ে মেডিকেল থাকতে হয়েছে। ৫ মাস আগে বাবার মেরুদণ্ড চিকন হয়ে পা পর্যন্ত ১১টি স্থানে হাড় ক্ষয় হয়েছিল।

এখনও ঔষধ ধরে রাখছে। বাবা গতকয়েক সপ্তাহ ধরে জটিল শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে ভর্তি করাতে চাইলেও ডাক্তার বাবার জটিল শ্বাসকষ্ট দেখে এ বিষয়ে কথাই বলতে দেননি। এখন কোন প্রাইভেট হসপিটালে বাবার চিকিৎসা করাতে হবে। হঠাৎ করে বড়ভাইয়ের এক্সিডেন্ট ও ভগ্নিপতির হাত ভেঙে যায়,তারা উভয়’ই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। মেজো ভাই লিভার জন্ডিসের যন্ত্রণা নিয়ে শহরে শ্রমিকের কাজ করেন।

দুইভাই ও এক বোন ঢাকার গার্মেন্টস কর্মী। একভাইয়ের গলায় কনসেল ও অন্য ভাইয়ের জন্ডিস এবং চর্মরোগ প্রায় ১১ মাস হচ্ছে। বোনের কোমরের হাড়ের সমস্যা ১ বছরেও ভালো হয়নি।বিভিন্ন সমস্যার কারণে বিবাহযোগ্য ছোটবোনের লেখাপড়াও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। প্রায় ৩ মাস হচ্ছে দুই ভাইয়ের বেতন বন্ধ।আম্মা এসব দুশ্চিন্তায় হঠাৎ তালার উপর থেকে পড়ে ভাঙা হাতে প্রচন্ড ব্যাথা পেয়েছেন।

এইসব তো গত দেড় বছরের কথা। আর গত ১২ বছরের ট্রাজেডি?আহা! কতইনা তৃপ্তির! গত ১২ বছরের বাস্তব জীবনমুখী ট্রাজেডির কষ্টে বুক ফেটে কান্না আসে। গত ১২ বছরের জ্বালা- যন্ত্রণা,দুঃখ-কষ্ট নিজের মধ্যে গোপনে রাখলেও বর্তমানে সেই সামর্থ্য, শক্তি ও ধৈর্য কোনটায় নেই। তার পরিবারে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ থাকার পরও আবার প্রায় ১ লক্ষ টাকা ঋণ করে রবিউলের চিকিৎসার পেছনে ব্যায় করছে। কোন জমিও নেই যে বিক্রি করবো।

ডাক্তার জানিয়েছেন তার চিকিৎসা করতে মাদ্রাজে যেতে হবে , অথচ তাদের কাছে কোন টাকা নেই। আশা করি আপনারা তার পরিবারের দুঃখ-কষ্ট,জ্বালা-যন্ত্রণা মন থেকে অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন। সে আপনাদের নিকটে আর্থিক সাহায্যের জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন। তাকে বন্ধু/ভাই/সন্তানের মতো ভেবে সাহায্যের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিবেন। আপনাদের আর্থিক সাহায্যে সে ভারতে চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে আমার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পারবো,ইনশাআল্লাহ।

সাহায্য কামনায়,
মো. রবিউল ইসলাম সোহাগ
পিতা-মো. রজিব উদ্দীন
মাতা-ছোবেদা বিবি
গ্রাম-ভেটি সোনাই
ডাকঘর-অঘোর মালঞ্চা
উপজেলা -কাহালু
জেলা-বগুড়া
বাংলা বিভাগ,
ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

রকেট পার্সোনাল-০১৭৩৫-১৯৭৮৫৩০
বিকাশ পার্সোনাল -০১৭৩৭-৮৮৬৩৮৭

স্টুডেন্ট একাউন্ট
মো. রবিউল ইসলাম
স্টুডেন্ট একাউন্ট নম্বর-২০৫০০১৫৬৭০০১৪০০১০
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
কাহালু এসএমই ব্রাঞ্চ,
কাহালু,বগুড়া।