আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের খেলা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নজিরবিহীন পরিস্থিতি

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের খেলা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নজিরবিহীন পরিস্থিতি

খেলাটি হচ্ছে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে রোববার সকালে। সেটিকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কোপা আমেরিকার হাই ভোল্টেজের ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে মোতায়েন করা হয়েছে হাজারো পুলিশ।  ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মধ্যে সম্ভ্যাব্য সহিংসতার আশঙ্কায় রোববার ভোর থেকে জেলাজুড়ে সহস্রাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রাস্তায় রাস্তায় মাইকিং করে জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে। জেলা সদরে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। গত মঙ্গলবার দুই দলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও এতে কয়েকজনের আহত হবার প্রেক্ষাপটে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বিবিসিকে বলছেন, পুরো জেলার সব ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১১৬টি বিটেই এ ধরণের নির্দেশনা দিয়ে মাইকিং করছেন বিট কর্মকর্তারা।

Pop Ads

যেহেতু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছোট একটা ঘটনা ঘটে গেছে যেটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা হচ্ছে, তাই আমরা কোন সহিংসতার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছি না,বলেন মোহাম্মদ শাহীন। তিনি বলেন, ১১৬টি বিটের কর্মরত পুলিশ এবং চলমান লকডাউন উপলক্ষ্যে যে চল্লিশটি চেকপোস্ট ও টহলপার্টি আছে, এরা সবাই রোববার ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে খেলাকে ঘিরে কোনো সহিংসতা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে। সব মিলিয়ে পুলিশের হাজার খানেক সদস্য মোতায়েন থাকবে বলে জানান মোহাম্মদ শাহীন।

যে ঘটনার কারণে এই আশঙ্কা:
গত ৬ জুলাই কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল বনাম পেরুর মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলা শেষে ব্রাজিল ফুটবল দলের এক সমর্থকের সাথে আর্জেন্টিনার এক সমর্থকের কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাদের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে গেলে স্থানীয়রা তাদের নিবৃত্ত করেন।

কিন্তু সকালের এই ঘটনার জেরে বিকালে বড় আকারে সংঘর্ষ বেঁধে যায় দু দলের সমর্থকদের মধ্যে। এতে অন্তত ৫ জন আহত হন। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতিনিধি কাবেদ রহিম জানান, ঐ ঘটনা ঘটার পর রোববাবের ম্যাচ নিয়ে শহরে একটা উত্তেজনা রয়েছে। খেলা নিয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়াতে এর আগেও ছোট-খাট সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এবারের খেলা নিয়ে জেলা সদরেই সংঘর্ষ হয়েছে। তাই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

গোয়েন্দা তথ্য:পুলিশ মাইকিং করে যেসব নির্দেশনা দিচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে:
১. উন্মুক্ত স্থানে বড় পর্দায়, চায়ের দোকানে, হাট-বাজারে বসে খেলা দেখা যাবে না। প্রত্যেকে নিজ বাড়িতে বসে খেলা উপভোগ করবে।
২. খেলা পরবর্তী সময়ে কোনো প্রকার আনন্দ মিছিল, হৈ-হুল্লোড় করা যাবে না।
৩. খেলাকে কেন্দ্র করে কেউ কোনো উত্তেজনা ছড়াতে পারবে নাঅতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলছেন, অনেক সমর্থকই ম্যাচ পরবর্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে নৌকা ভ্রমণ ও ভোজের আয়োজন করেছিল বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। এটা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।

শাহীন আরো বলছেন, এমনিতেই লকডাউনের বিধিনিষেধের অংশ হিসেবে ঘরের বাইরে বের হওয়া ও কোথাও জড়ো হওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করা গেলেই ফুটবল ম্যাচকে ঘিরে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি ঘটবে না বলে মনে করেন তারা।