ঈদে সব কিছুতেই চাই নতুনত্ব। নিজের ঘরটাকেও তাই পরিপাটি রাখা চাই এ সময়। আর তা নিয়েই যেন পরিকল্পনার শেষ নেই। নিজের ঘরটাকে একটু যত্ন করে রাঙানোর শখ সবার। তাসমিয়া-মারুফ দম্পতির কথাই ধরা যাক না!একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন মারুফ হাসান আর তাসমিয়া আছেন একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে। মাত্র কিছুদিন আগেই বিয়ে করছেন তারা। বিয়ের পর এবারই প্রথম ঈদ তাদের।
খরচ নয় ,চাই সৃজনশীলতা
অনেকেই ভেবে থাকতে পারেন ঘর সাজানোতে বুঝি খরচটা একটু বেশি-ই। মধ্যবিত্তদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু ভাবনাটা একদমই ঠিক নয়। নবীন ইন্টেরিওর ডিজাইজার সুলতানা টুম্পা মনে করেন, দৃষ্টি নন্দন ঘর সাজাতে খুব বেশি টাকার দরকার হয় না। দরকার হয় সৃজনশীল চিন্তা ও আপনার মননশীলতা। মাটির তৈরি জিনিস পাতি , হালকা পেইন্টিং কিংবা সবুজ গাছ পালা দিয়ে খুব সহজেই গুছিয়ে নেয়া যায় নিজের ঘর। তবে কীভাবে সাজাবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার ঘরটির আয়তনের ওপর।
চমক থাকুক করিডোরে
ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই অতিথিকে চমক দিতে চান! তাহলে করিডোরটাকে একটু ভালোমত সাজিয়ে নিন। সে ক্ষেত্রে দরজার ঠিক পাশেই রাখতে পারেন মাটির তৈরি শো-পিচ ও টেরাকোটা। দরজার উল্টো দিকের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন আয়না। তবে আয়নাটা নান্দনিক ডিজাইনের হওয়া চাই। এছাড়া ঈদের কথা চিন্তা করে ফুল দিয়েও সাজাতে পারেন আপনার ড্রয়িং। মাটির তৈরি এসব জিনিসপাতি পেতে পারেন দোয়েল চত্বর কিংবা ঢাকা কলেজের সামনে। এছাড়া সাভার স্মৃতি সৌধের পাশে থেকেও কিনতে পারেন।
বসার ঘর আলোকবাতি
ঈদে মেহমানরা বসার ঘরেই বেশি সময় কাটাবে। খানিকটা দেশীয় পরিবেশ আনতে চাইলে বাঁশ ও বেতের চেয়ার টেবিল দিয়েও সাজাতে পারেন। এছাড়া ঘরটা যেন ঝলমল করে এ জন্য কিনতে পারেন ডেকোরেটিভ লণ্ঠন কিংবা টেবিল বাতি । গল্পের সময় আলো-আধারির খেলাটা মন্দ হবে না নিশ্চয়। বাজারে দেয়াল সাজানোর জন্য চমকপ্রদ ঘড়ি আছে বেশ কিছু। সেগুলোও লাগাতে পারেন। ক্রিস্টেলের পাত্রে রাখা তাজা ফুল আপনার ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে।
খাবার ঘরে অ্যামব্রয়ডারি
ঈদে অপ্যায়নের পাশাপাশি খাবার ঘরটা গুছিয়ে ফেলাও জরুরি। খাবার টেবিলের মাঝ বরাবর ঝুড়িতে কিছু তাজা ফলমূল রাখুন। টেবিলের কাভারটা হতে হবে হালকা উজ্জ্বল রঙের। আর সেখানে যদি অ্যামব্রয়ডারির কিছু কাজ থাকে তবে তো কথাই নেই! আলতো সবুজ রঙের পর্দা সতেজ রাখবে আপনার খাবার ঘরকে।
বেডরুমের সৃজনশীলতা
ঈদে আপনজনরা আপনার বেড রুমও দেখবে। শোবার ঘরের বেড শিটটা পর্দার রঙের সাথে মিলিয়ে কিনুন। একটি বা দুইটি পেইন্টিং বদলে দেবে বেডরুমের চেহারা। ঘাটের উপরে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন ছোট একটা বুক সেলফ। এছাড়া স্ট্যান্ড লাইট আর ফুলদানি বেড রুমকে করবে আকর্ষণীয়।
ঘরে থাক সবুজের ছোঁয়া
ঘরের কোণায় রেখে দিন টবে লাগানো গাছ। ইট-পাথরের শহরে পেতে পারেন কিছুটা প্রকৃতির স্বাদ । এজন্য সাধারণত মানিপ্ল্যান্ট,অর্কিড কিংবা লতাবাহার বেশ মানানসই । এছাড়াও পাথর-কুচি, ক্যাক্টাস,পাতাবাহারেও সাজাতে পারেন আপনার ঘর। দেখুন কেমন নির্মল আর স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে এবার।
ঝুলবারান্দায় কফি টেবিল
বেলকোনিতে ঝুলিয়ে রাখুন কিছু গাছ পালা। মাঝে সাজিয়ে রাখুন একটা কফি টেবিল আর হেলানো চেয়ার। কফি টেবিলে ঠাই পাক কিছু ম্যাগাজিন।
কোথায় পাবেন?
আপনি ঘর সাজানোর সুন্দর সুন্দর জিনিস খুব কম খরচেই পেয়ে যাবেন ঢাকার দোয়েল চত্বর, ঢাকা কলেজের সামনে, মিরপুর রোডের কলাবাগান।আপনি চাইলে খরচ বাঁচাতে, সময় নিয়ে চলে যেতে পারেন সাভারের পর্যটন কর্পোরেশন মৃৎ কুটির শিল্প মার্কেটে ও।
দাম?
এসব পণ্যের দাম ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০০ টাকার মধ্যে পাবেন। আপনি আপনার ঈদ শপিং করেও ঘর সাজানোর জন্য বাজেট রাখলেই হয়ে যাবে আপনার পছন্দের ঘরটি আরও বেশি সুন্দর।
এই বিষয়ে দোয়েল চত্বরের এক বিক্রেতা নজরুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ঈদের শপিং করে ঘর সাজানোর জন্য শৌখিন জিনিস কেনার জন্য মানুষ খুব কম। তাই বেচা বিক্রি খুব একটা হয় না ঈদ উপলক্ষ্যে। তবে পহেলা বৈশাখে এখানে বেচা বিক্রি থাকে জমজমাট ।