কমিউনিটি ক্লিনিকের জাতিসংঘ স্বীকৃতি গর্বের: রাষ্ট্রপতি

কমিউনিটি ক্লিনিকের জাতিসংঘ স্বীকৃতি গর্বের: রাষ্ট্রপতি

সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্যোগ জাতিসংঘের ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় শুক্রবার এ অভিন্দন জানানো হয়।

শুভেচ্ছা বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় আপনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে ‘কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামে কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক রেজুল্যুশন গৃহীত হওয়ায় আপনাকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।

Pop Ads

‘বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় আপনার উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসাবে উল্লেখ করেছে যা আপনার এবং আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের।’

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা সেবা জনগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার। দেশের অন্যান্য সেক্টরের মতো স্বাস্থ্যখাতেও লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। আপনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগের অন্যতম কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম আজ জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে।

‘দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত ১৪ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক তৃণমূল পর্যায়ে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পুষ্টিস্তর উন্নয়ন, জীবনমান বৃদ্ধি ও সার্বিক জনস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এ উদ্যাগের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আপনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ফসল।’

রাষ্ট্রপতি আশা করেন, বিশ্বের যেসব দেশে স্বাস্থ্যসেবা স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় সেসব দেশে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ মডেল হিসাবে কাজ করবে।

বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্য নিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘে পাস হওয়া এক রেজুলেশনে কমিউনিটি ক্লিনিককে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। বুধবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘আপনার সুদূরপ্রসারী চিন্তা, মেধা, প্রজ্ঞা, সাহস ও যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বাত্মক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

‘কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে সে প্রচেষ্টা থামিয়ে দেয়। কিন্তু বাঙালি বীরের জাতি। তারা পরাভব মানে না। ১৯৭৫ থেকে দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশে আপনার প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে সুগম হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার কন্যা হওয়া সত্ত্বেও আপনার চলার এ পথ কখনো কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ১৯৯৬ সালে আপনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে উন্নয়নের অভিযাত্রা শুরু হয়। কিন্তু ২০০১ সালে আবার তা মুখ থুবড়ে পড়ে। উন্নয়নের চাকা উল্টোপথে ঘুরতে থাকে।

‘২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলাসহ বহুবার আপনার উপর হামলা হয়েছে। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতই আপনাকে সকল বিপদ থেকে রক্ষা করেছে। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠনের পর আপনার সুযোগ্য নেতৃত্বে শুরু হয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পালা।’