কর্ম জীবনের দিক নির্দেশনায় যা বলে ইসলাম

কর্ম জীবনের দিক নির্দেশনায় যা বলে ইসলাম

জীবন পরিচালনায় চাকরি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চাকরির ওপর নির্ভর করেই অনেকের পুরো পরিবার পরিচালনা হয়। আর এই চাকরিই কখনো খাঁচায়বন্দি বাঘের মতো আটকে যায়। কর্মকর্তা-কর্মচারী যে অবস্থানেই থাকুক না কেন, চাকরিও ইহ-পরকালীন উত্থান-পতনের বাহন হতে পারে।

মহান আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘… তুমি দুনিয়া থেকে তোমার অংশ নিয়ে যাওয়ার কথা ভুলে যেও না।’ (সুরা: কাসাস, আয়াত: ৭৭) মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি। এসবের ওপর নির্ভর করেই সফলতাও আসে কর্মজীবনে। সেই সঙ্গে আবেগ-অনুভূতি এবং পরিশ্রম, সাধনা ও কর্মের মাধ্যমে পরিণতি ঠিক হয়ে থাকে মানুষের।

Pop Ads

আল্লামা ইকবাল বলেন, ‘কর্মেই গড়ে মানুষের জীবনসত্তা, কর্মেই বণ্টিত হয়— জান্নাত-জাহান্নামের ফায়সালা।’ একজন চাকরিজীবীর যোগ্যতা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে— ‘সে নিশ্চয় ভালো কর্মচারী হবে, যে শক্তিশালী ও বিশ্বাসী রয়।’ (কাব্যানুবাদ, সুরা: কাসাস, আয়াত: ২৬)

এখানে একজন চাকরিজীবী কর্মকর্তা বা কর্মচারী উভয়ের জন্য ‘শক্তি ও বিশ্বস্ততা’কে প্রধান যোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে। এছাড়া জীবনের জন্য জীবিকার্জন ইবাদততুল্য কর্তব্য। পেশাগত জীবনে চাকরি হচ্ছে উপার্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এটা পেশাগত পরিচয়ও।

প্রতিটি মানুষের জন্যই আল্লাহ ‘রিজিকদাতা’। তিনি মানুষের জন্য ‘রিজকান কারিমা‘ (সম্মানজনক জীবিকা)-এর ব্যবস্থা করেছেন। আর এর অর্জন কৌশল অবশ্যই হালালান তাইয়্যেবা (বৈধ ও পবিত্র) হতে হবে। এদিকে ধর্মীয়ভাবে ইসলামের দৃষ্টিতে চাকরি নির্বাচনের ক্ষেত্রে বৈধ-অবৈধতার বিষয়েও বলা হয়েছে।

সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আদেশ ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ বিবর্জিত উপায়ের মাধ্যমে বা চাকরি ও চাকরির আয়-রোজগার হারাম। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়— সুদ ও মাদক সংশ্লিষ্টতা।

একজন চাকরিজীবীর করণীয়-বর্জনীয়: নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানের আরোপিত শর্ত মেনে চলা। প্রতিষ্ঠানের কর্মীর কাছে চাকরিও অঙ্গীকার। মহান আল্লাহ বলেন, ‘… অঙ্গীকারগুলো পূরণ কর তোমরা।’ (সুরা: মায়িদা, আয়াত: ১)

এছাড়া প্রতিষ্ঠানের কর্মী হিসেবে কর্তৃপক্ষের আনুগত্য, বৈধ আদেশ-নিষেধ ঠিকভাবে পালন করা, কর্তব্যে কোনো অবহেলা না করা, কর্তৃপক্ষের সম্পদ ও স্বার্থ রক্ষা করা। ব্যক্তিস্বার্থে অফিসের গাড়ি, অধীন কর্মচারী ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার না করা এবং দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার না করা।