জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে কালের সাক্ষী বহন করছে আত্রাইয়ের সিদ্ধেশ্বরী মন্দির 

জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে কালের সাক্ষী বহন করছে আত্রাইয়ের সিদ্ধেশ্বরী মন্দির 

এমরান মাহমুদ প্রত্যয়,নওগাঁ : নামের পরিক্রমায় আত্রাই নদীর নামেই নামকরণ নওগাঁর আত্রাই উপজেলা। আটটি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে আত্রাই উপজেলা গঠিত। উপজেলার কিছু ঐতিহ্যবাহি স্থান কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে। আত্রাই উপজেলা ঐতিহ্যবাহি এলাকা বান্দাইখাড়া,যা আত্রাই নদী অববাহিকায় অবস্থিত।
বান্দাইখাড়ার ঐতিহাসিক স্থান  সিদ্ধেশ্বরী তলা বর্তমানে সিদ্ধেশ্বরী মোড় নামে পরিচিত।

সেই ঐতিহ্যবাহি স্থানে যে একটি মন্দির আছে তা ভুলে যেতে বসছে এলাকার জনসাধারণ। সম্ভবত ১১৬০ সাল। আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৬০০শত বছর আগে এখানে কিছু সময়ের জন্য এসেছিল মোঘল সম্রাট।( সঠিক নাম পাওয়া যায়নি) ঐ সময়ে তিনি তাঁর সৈন্য সমান্ত নিয়ে ছোট মট আকৃতির একটি মন্দির নির্মাণ করেন।

Pop Ads

কালের বিবর্তনে জরাজীর্ণ অবস্থায় আজও দাঁড়িয়ে আছে সনাতন ধর্মালম্বীদের এক সময়ের তীর্থস্থান সিদ্ধেশ্বরী তলা মন্দির কালের সাক্ষী হয়ে ।অযতেœ অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মোঘল আমলের  কীর্তিময় এই মন্দিরটি।
বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ড উজ্জীবিত উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকা।

আজ পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছু সময়ের সাথে। বান্দাইখাড়া সিদ্ধেশ্বরী তলা মন্দির ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে মোঘল আমল থেকে আজ অবধি। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর প্রাচীন এই মন্দিরের ইতিহাসের দিক বিবেচনা করে একটু সংস্কার করলে তা হয়ে উঠতে পারে  পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে।

বান্দাইখাড়া তৎকালীন সময়ে ছিল মহকুমার অন্তর্ভুক্ত। তখন নদী ছিল যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম।দূর-দূরান্ত থেকে নদী যোগে মানুষ এখানে ব্যবসা করার জন্য আসতো বড় বড় কোঁশা পাল তুলা নৌকা নিয়ে।
বর্তমানে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার হয়েছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

যেখানে ছিল দূর্গম পথ সেখানে হয়েছে সড়ক ব্যবস্থা। সড়ক হয়েছে পাকা।যেখানে চলতো নৌকা এখন চলছে বড় বড় যন্ত্র চালিত গাড়ি। রাস্তাঘাট হওয়ার কারণে আর চোখে পড়েনা পাল তুলা নৌকা। বর্তমান আধুনিকায়ন যুগে গাড়িতে করে মানুষ যাওয়া আসা করে।বিভিন্ন জায়গার মানুষ আসে বান্দাইখাড়া এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বী থাকায় জেলার বৃহত্তম কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয় এখানে।

বান্দাইখাড়ায় আছে ১৯৭১ সালের ভয়াবহতা। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন বধ্যভুমি। বান্দাইখাড়াতে অনেক যায়গার লোকজন আসে কেনাকাটাসহ যাবতীয় বাজার করার জন্য এখানে সপ্তাহে দুদিন হাট বসে। অত্যান্ত দুঃখের বিষয় ঐতিহ্যবাহি জায়গা হলো ও এখানে সে রকম কোন বিনোদন স্পট।

সিদ্ধেশ্বরী তলা জায়গাটি একটি উঁচু ছোট পাহারের মত দেখতে,পূর্ব ও পশ্চিম দিকে একটি করে পুকুর আছে, উত্তর দিক দিয়ে বয়ে গেছে  প্রবহমান অত্রাই নদী,সামান্য পূর্ব দিকে বান্দাইখাড়া বিশাল হাট,আর হাটের পূর্বে অবস্থিত কালী মন্দির। আত্রাই নদীর উপর সুন্দর অবয়বে গড়ে তোল হয়েছে বান্দাইখাড়ার ঐতিহ্য  বয়তুল্যাহ সেতু।

বান্দাইখাড়া ঐতিহাসিক স্থান সেখানে রয়েছে,কালের বিবর্তনে সময়ের শেষ অধ্যায়ে এসে দাঁড়ানো সিদ্ধেশ্বরী তলা প্রাচীন মন্দির,বধ্যভুমি,বিশাল হাট,কালী মন্দির, নন্দিত বায়তুল্যা সেতু সহ অনেক দর্শনীয় স্থান।
উপর মহলের একটু নজরদারিতে আত্রাই এর বান্দাইখাড়া হতে পারে সকল ধর্মের মানুষের কাছে বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্র।

একটাই দাবী এই এলাকাতে একটি তথা ঐতিহাসিক স্থান সিদ্ধেশ্বরী তলা মন্দির সংস্কার করে এলাকায় একটি বিনোদনের স্থান হিসেবে ঘোষনা করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। সরকার ও প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর একটু সুনজরে বদলে যেতে পারে এলাকার পটভূমি,মানুষ খুঁজে পাবে বিনোদনের স্থান।খ্যাতি অর্জন করতে পারে পর্যটন এলাকা হিসেবে।