ঠাকুরগাঁওয়ে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয়ে চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন !

ঠাকুরগাঁওয়ে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয়ে চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ! ছবি-আলমগীর

সুপ্রভাত বগুড়া (আলমগীর হোসেন): অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মোবাইল চুরির অভিযোগ এনে দুই শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্য ও তার ৬ সহযোগীর বিরুদ্ধে।

তবে এ ঘটনায় গত ৫ জুন থানায় মামলা হলেও আসামীরা এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। জানাযায়, পীরগঞ্জ উপজেলার দেওধা গ্রামের এক গৃহবধূর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয় ওই এলাকার মোতালেব আলী নামে এক ব্যক্তি।

Pop Ads

এতে ওই গৃহবধূ সায় না দেওয়ায় এর ক্ষোভ মিটাতে ওই গৃহবধূর শিশু সন্তান সুমন ও ভাতিজা কমিরুলের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে গত ২২ মে সেনগাঁও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এক সালিশ বৈঠক বসানো হয়।

সেখানে ওই দুই শিশুকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে সেই নির্যাতনের ভিডিও করে রাখে। পরে সেই নির্যাতনের ভিডিও চিত্র দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছে ৫০ হাজার টাকাও দাবি করা হয়।

না পেয়ে পরবর্তীতে গৃহবধূকে মারপিট করে তার বাড়ি থেকে একটি গরু তুলে নিয়ে যায় নির্যাতনকারীরা। এ ঘটনায় ৫ জুন থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগি ওই গৃহবধু। তবে মামলার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি মহল তৎপর বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। ঘটনার পর ইউপি সদস্য ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম সহ অন্যান্য আসামীরা পলাতক রয়েছে।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বলেন, ঘটনার পর থেকে ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা আমাকে ও আমার সন্তানদের একঘরে করে রেখেছিল। হাসপাতালেও যেতে দেয়নি। পরে লুকিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আমরা পীরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হই।

তিনি বলেন, ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা মিলে আমার ছেলে ও ভাতিজাকে হাত-পা বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করেছে। এছাড়াও তারা আমাকে নির্যাতন ও খারাপ আচরণ করেছে। আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই।

সেনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামসহ তার সহযোগীরা মিলে দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে যেভাবে নির্যাতন করেছেন। এটি বড় ধরনের অপরাধ।

এই নির্যাতন আসলে আদিম যুগের মানে মধ্যযুগীও কায়দায় নির্যাতন। তারা এভাবে নির্যাতন করা ঠিক করেনি। তাদের শাস্তি হোক। পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারেরও চেষ্টা চলছে।

এদিকে মামলা দায়েরের সাত দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here