তথ্য জালিয়াতি করে ৫ বছর ধরে সরকারি চাকরি 

সুপ্রভাত বগুড়া (নিজস্ব প্রতিবেদক): জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলালে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে  কর্মরত অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোছাঃ  সুরাইয়া নাসরিন। যার  চাকুরীতে আবেদন করার যোগ্যতা নির্ধারণ করা ছিল ১৮ হতে ৩০ বছর কিন্তু তিনি ১৭ বছর ০৭ মাস ০৩ দিন বয়সে  আবেদন করে জালিয়াতির মাধ্যমে সেই চাকুরী নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায় তার বাবা মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক এক সময়ে দুপচাঁচিয়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের  ইউনিয়ন সমাজকর্মী ও কর্মচারী ইউনিয়নের প্রভাবশালী কর্মচারী  ছিলেন।  সাধারণ জনগণ বলছেন  তার কন্যা হওয়ায় এই জালিয়াতি করে চাকুরী নিয়েছেন ।  সাধারণ জনগণ আক্ষেপ করে বলছেন যাদের এই চাকুরীতে আবেদন করার যোগ্যতা ও বয়স নেই তারা চাকুরী পাচ্ছে জালিয়াতির মাধ্যমে আর যাদের বয়স ও যোগ্যতা দুই আছে তারা এই ধরনের সরকারি চাকুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

Pop Ads

সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের উদ্বৃত্ত কর্মচারী শাখার   নং -০৫.১৬৬.০১১.০০.০০.০৯২.২০০৫-১৯৭ তারিখঃ ২৮/০৩/২০১০খ্রিঃ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্মারক নং সকম/প্রঃ৩/এ-১৬/০২(অংশ-৪)- ১৮৫ তারিখ ১৮/০৩/২০১০ ইং মূলে ছাড়পত্র পাওয়ায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়াধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের ১১৩ জন অফিস সহকারী কাম- কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক এর শূন্য পদে নিয়োগের নিমিত্তে প্রকৃত বাংলাদেশী নাগরিকদের নিকট হতে দরখাস্ত আহবান করা হয়।

আবেদনের শর্তাবলীর ১নং ধারায় উল্লেখ করা হয় যে, সকল পদের প্রার্থীর ক্ষেত্রে বয়স ০১/ ০৭/২০১০ খ্রিঃ তারিখে ১৮ হতে ৩০ বছর হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা/ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য।

এইচ এস সি সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে মোছাঃ সুরাইয়া নাসরিন, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক,সমাজসেবা কার্যালয়,ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট এর জন্ম তারিখ ২৮/১১/১৯৯২ ইং, আবেদনের শর্তবলী অনুযায়ী আবেদনের সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর ০৭ মাস ০৩ দিন।

সনদ জালিয়াতি করে রাষ্ট্রের এতো বড়ো গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকুরী করে আসিতেছে এই খবর ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ জনগণ  উদ্বেগ প্রকাশ করছেন । নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মরত কয়েকজন বলেন, সরকারি চাকরি নামের সোনার হরিণ ধরতেই তারা তথ্য জালিয়াতি করেছেন।

এ বিষয়ে মোছাঃ সুরাইয়া নাসরিন কে সরাসরি  জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সঠিক তথ্য দেননি, তবে তিনি  বলেন,  আমি ২০১০ সালের সার্কুলারের   পুনঃবিজ্ঞপ্তি ২০১২ সালে দেওয়ায় আমি সেখানে আবেদন করি।  তবে কাগজে কলমে তার কোন প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। কাগজ পত্র দেখতে চাইলে বলে আমার সমস্ত কাগজ পত্র আছে দেখাব সময় করে কিন্তু বারবার সময় পেছাতে থাকেন।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে জয়পুরহাট সমাজ সেবা   অফিসের উপপরিচালক মোঃ ইমাম হাসিম এর কাছে বারবার যাওয়ার পরেও তিনি এ বিষয়ে কিছু না বলে শুধু বলেন এটা আমার জেলা অফিসের বিষয় নয় এটা ক্ষেতলাল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের বিষয় সেখানেই কথা বলেন।

এই বিষয়ে জনাব মোঃমিজানুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার,ক্ষেতলাল,জয়পুরহাট কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন “আমি নতুন অফিসার আর অফিস সহকারী যোগদান করেছেন অনেক আগে তার জালিয়াতির বিষয়টি আপনাদের নিকট থেকে প্রথম শুনলাম। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেয়া হবে”।