ধুনটে আগুনে পুড়ল বিধবার বাড়ি , ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ

ধুনট থানার নিমগাছি উপজেলার শিয়ালী গ্রামের বিধাব মরিয়ম বেওয়ার বসত বাড়ি আগুনে পুড়ে সম্পুর্ণরুপে ভুস্মিভুত হয়ে যায়।-সুপ্রভাত বগুড়া

বগুড়া জেলার ধুনটে আগুনে পুড়ে এক বিধবার বসতবাড়ি ভুস্মিভুত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের শিয়ালী গ্রামে। এ ঘটনায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে ধুনট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বাড়ির মালিক মোছাঃ মরিয়ম বেওয়া (৬০)। তার বাড়িতে শক্রতাবশত আগুন লাগাতে পারে আশংকা প্রকাশ করে তিনি পাশের বাড়ির হাসিনা বেগম, মেহের আলী, অফফের মোল্লা, ফুলেরা খাতুন, ডেইজি খাতুন এবং তোতা মিয়ার নাম উল্লেখ করে অভিযোগটি দাখিল করেন।

কারন হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন তার বসবাসকৃত জায়গা নিয়ে তাদের সাথে পুর্বে থেকে দ্বন্দ, কলহ বিবাদ লেগেই ছিল এবং ওই জায়গা নিয়ে একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। অভিযোগ সুত্রে ও সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, শিয়ালী গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের স্ত্রী মরিয়ম বেওয়া তার স্বামীর ক্রয়কৃত ৯ শতক জায়গার উপর কয়েকটি ঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছিলেন। তার একমাত্র ছেলে কর্মসুত্রে বাহিরে থাকায় তিনি একাই ওই বাড়িতে বসবাস করেন।

Pop Ads

ঘটনার দিন গত ১৩/০৬/২২ ইং তারিখে আনুমানিক সন্ধ্যা ৭.৩০টার দিকে তার ঘরের দরজা তালা দিয়ে পার্শবর্তী বাড়িতে যান তার ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার জন্য। কিছুক্ষন পর ফিরে এসে ঘরের দরজা খুলে দেখেন যে ভেতরে দাউ দাউ করে আগুন জলছে। তখন তার ডাক চিৎকারে গ্রামের লোকজন আগুন নেভাতে আসেন।

কিন্তু এর মধ্যে কিছু লোক বলে যে ঐ বাড়িতে ৩টি গ্যাসের সিলিন্ডার রয়েছে সেগুলো বিস্ফোরন ঘটতে পারে এই আশংকার কথা বললে গ্রামের লোকজন আগুন নিভানো বাদ দিয়ে নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করে। তৎক্ষনাত ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে কিন্তু ততক্ষনে বাড়ির প্রায় ৯০ শতাংশ আগুনে পুড়ে ভুস্মিভুত হয়ে গেছে। মরিয়ম বেগম জানান তার এই জায়গাকে কেন্দ্র করে উপরেল্লিখিত ব্যক্তিদের সাথে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিলো এবং তারাই শক্রতাবশত এই আগুন লাগিয়েছে বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

এই ব্যাপারে তদন্ত অফিসার এস আই জাহাঙ্গীর হোসেন জানান এটি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে তিনি প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন। তবে সঠিক কারন জানতে আরো অধিক তদন্ত করতে হবে। সেটার জন্য ্কটু সময় লাগবে। ধুনট ফায়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার মো. সামছুল আলম আগুন লাগার প্রাথমিক কারন হিসেবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কথাই জানিয়েছেন। তবে আরো অধিক তদন্তের মাধ্যমে সঠিক কারন নির্ণয় করা যাবে বলে এই প্রতিবেদক কে জানিয়েছেন তিনি।

তবে মরিয়ম বেওয়া ও তার একমাত্র ছেলে মেহেী হাসান জানান উপরেল্লিখিত ব্যক্তিরাই শক্রতাবশত এই আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটিয়েছে। ইতিপুর্বেও তারা অনেকবার আমাদেরকে মারধর করা সহ প্রাণ নাশের হুমকি ধামকি দিয়েছে। সঠিকভাবে তদন্ত করলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে তারা বিশ্বাস করেন। এই ব্যাপারে তারা মাননীয় পুলিশ সুপার সহ প্রশাসনের সর্বস্তরের ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হলো ওই বাড়ি আগুনে পুড়ে সম্পুর্ণরুপে ভুস্মিভুত হলেও মাত্র দেড়ফিট দুরত্বে থাকা পাশের বাড়িটির একটি গাছের পাতাও পুড়েনি এবং যে বাড়িতে একটি গ্যাসের চুলাও নেই অথচ সেই বাড়িতে ৩টি গ্যাসের চুলার বিস্ফোরনের আশংকার কথা জানিয়ে কারা গ্রামবাসীদেরকে আগুন নিয়ন্ত্রনে রাখতে বিরত রেখেছিল তাদেরকে খুজে বের করে আইনের আওতায় আনলেই এই আগুন লাগার রহস্য উদঘাটন করা যাবে বলে একটি মহল মনে করেছেন।