নওগাঁর রাণীনগরের শুকনো মৌসুমেই ঝুঁকিপূর্ণ নান্দাইবাড়ি বেড়িবাঁধ

সুপ্রভাত বগুড়া (এমরান মাহমুদ প্রত্যয়, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি):শুকনো মৌসুমেই ঝুঁকিপূর্ন নওগাঁর রাণীনগরে ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি বেড়ি বাঁধটি। বছরের পর বছর কোন সংস্কার না করায় উপজেলার ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকার প্রায় ৭কিলোমিটার বেড়ি বাঁধটি অভিভাবকহীন হওয়ার কারণে চরম ঝুঁকিপূর্ণ।

শুকনো মৌসুমে বেড়ি বাঁধটির সংস্কার কাজ না করায় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বর্ষা মৌসুমের আগেই আতংকে বসবাস করছেন। জানা গেছে, গত ২০১৭সালে নান্দাইবাড়ি এলাকার বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে দুই উপজেলার শতাধিক গ্রামসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

Pop Ads

এরপর ২০১৯সালে আবার তা ভেঙ্গে যায়। ভাঙ্গনের সময় পানি উন্নয় বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের আশ্বাস প্রদান ও আনাগোনা দেখা গেলেও বাঁশের খুঁটি আর বালুর বস্তা দিয়ে দায়সারা চেষ্টা করা হয়। ৪০বছর ধরে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা না হওয়ায় এই বেড়ি বাঁধটি এখন স্থানীয় মানুষদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীর পানি সামান্য বৃদ্ধিতে এলাকাবাসির চোখের ঘুম হারিয়ে যায়।

নদীর পানি কৃষির কাজে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহারের জন্য আশির দশকে উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ী, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকায় স্থানীয় সরকারের সহযোগীতায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে সরকারের কোন দপ্তরই বেড়ি বাঁধের সংস্কার না করায় শুধুমাত্র বালুর বস্তা আর বাঁশের খুঁটিই যেন শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্তমানে এই বাঁধের অবস্থা খুবই বিপদজনক। গোনা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খাঁন হাসান বলেন বাঁধটির সংস্কার কাজের জন্য বছরের পর বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উর্দ্ধতন কর্তাব্যক্তিদের দুয়ারে দুয়ারে ধর্না দিয়েও কোন লাভ হয়নি। শুধুমাত্র ভেঙ্গে যাওয়ার সময় বাঁধটি পরিদর্শনে এসে কর্তা ব্যক্তিরা বড় বড় আশ্বাস দিয়ে যান আর নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই আশ্বাসগুলো বস্তাবন্দি হয়ে যায়।

তবুও সরকারকে বলবো বর্ষা মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আগেই শুকনো মৌসুমেই বাঁধের এই অংশটুকু সংস্কার করার জন্য অর্থবরাদ্দ দেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম জানান, এই বাঁধটি এলাকাবাসির জন্য একটি অভিশাপ।

জরুরী ভাবে এই বাঁধটি মেরামত করা না হলে প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ফসলি জমিতে পানি প্রবেশ করে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই এই বাঁধের দিকে সরকারের নজর দেওয়া প্রয়োজন।   নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, এই ঝুঁকিপূর্ণ অংশটুকু নদীর বাঁধ নয়। এক সময় রাস্তা ছিলো।

কিন্তু নদী ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে এখন তা বাঁধে পরিণত হয়েছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ বেড়ি বাঁধটি সংস্কারের বরাদ্দ চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছি। অর্থ বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য মো: ইসরাফিল আলম বলেন ছোটখাটো বরাদ্দ দিয়ে এই বাঁধটির সংস্কার করা সম্ভব নয়। আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার এই বাঁধটির প্রতি সুদৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি।

কিন্তু বাঁধটির অবস্থা এতটাই ঝুঁকিপূর্ন যদি এই শুষ্ক মৌসুমে বাঁধটি সংস্কার করা না হয় তাহলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ভেঙ্গে দুই উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত ও হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here