নীল দিঘী (পর্ব ১ ও ২)

নীল দিঘী (পর্ব ১ ও ২)

প্রিন্স খান নিরব

সুপ্রভাত বগুড়া (শিক্ষা সাহিত্য): আমি দিঘী,কাল রাত ৪টার সময় ঘুমাতে যাওয়ার পর সকালে উঠে ঘড়ির দিকে তাকাই দেখি ১০টা বাজে।আমি ইতিমধ্যেই লেট।তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে পড়লাম কলেজের উদ্দেশ্যে।
কলেজে পৌছালাম ঠিকই কিন্তু,দাড়োয়ান কোনোমতেই আমাকে ঢুকতে দিচ্ছে না,মাত্র এক ঘন্টা লেট হলে কিছু হয় নাকি? আপনারাই বলেন তো হয় কিছু?এক ঘন্টা লেট হলে?
না তো?

কিন্তু এই দাড়োয়ান আংকেলকে কে বোঝাবে এটা?
তারপর উপাই না পেয়ে ভাবতে লাগলাম কি করবো?
কি করবো?
তখনই দেখি হুমায়ুন আহমেদের হিমু রুপা গল্পের সেই হিমু টাইপ একটা ছেলে হুরহুর করে ভেতরে চলে যাচ্ছে,দারোয়ান কিছুই বলছে না।
আমি হুট করে বলে উঠলামঃ এই জান! দ্বারাও,এই দেখো না ইনি আমাকে ঢুকতে দিচ্ছে না,তোমার জানরে ঢুকতে দিচ্ছে না।

Pop Ads

তারপর ওর হাতটা জোর করে ধরে ভেতরে ঢুকে পড়লাম।
ওই ছেলে আর দারোয়ানের রিএকশন পুরাই “থ”!
তারপর ওই ছেলেকে একটু ভয় দিলাম আর বললামঃ এই শোন আমি কিন্তু তোর সিনিয়র,আমার পেছনে ঘোরার চিন্তাভাবনাও করলে মেরে বৃন্দাবন পাঠিয়ে দিবো।
আচ্ছা তুই কে রে? যে তোকে ঢুকতে দিলো আর আমাকে দিচ্ছিলো না।
সেঃ কারণ আপনি স্টুডেন্ট আর আমি প্রফেসর তাই।
ইসস কেচ খাইছে রে!

সরি স্যার! সরি স্যার!
ভুল হয়ে গেছে, আসলে প্রথম দিন,তাও যদি ক্লাস করতে না পারি তাই আর কি।সরি
স্যারঃ প্রথম দিন তাই বলে কি আপনি লেট আসবেন?
আর আসলেই কি এমন মিথ্যা বলতে হবে?
আমি:সরি স্যার,এমন ভুল আর হবে না।
স্যার:আচ্ছা ক্লাসে যান,আজকের মতো ক্ষমা করে দিলাম।

আমি:ধন্যবাদ স্যার।
(মনে মনে বললাম:সালা স্যারটা তো বেশ ভালোই,দাড়িকাটলে আরো হ্যান্ডসাম দেখাবে রে!)
স্যার:এখানে পড়তে আসছেন,প্রফেসরের দাড়ি দেখতে নয়।
আমি: (ওওও মা গো ট্রু লাভ) আমি মনে মনে বললাম স্যার শুনলো কিভাবে?
স্যার:মনে মনেই এত জোরে বলেছেন,সব্বাই শুনতে পাবে।যান ক্লাসে যান,অনেক লেট হইছে।
আমি:জি,
যাই হোক তারপর ক্লাসে ঢুকলাম,তারপর এক ক্লাস শেষ হলো,কিছুক্ষন পরেই সেই হিমু স্যার আসলো।পরে জানতে পারলাম স্যারের নাম নীল।

স্যারের যেমন সুন্দর নাম তেমন সুন্দর তার চেহেরা।ক্লাসের সব মেয়েরাই লাইন মারার ধান্দাই ছিলো।
আমি এমন টাইট দিয়েছিলাম যে নীলের দিকে কেউ চোখ তুলেও তাকাতো না।
তবে নীল স্যার কাউকে পাত্তাও দিতো না,খুব চুপচাপ,অগোছালো,কেম্ন যেনো একা একা বেশি থাকতো।
আমি পুরা ৩বছর ধরে তার পিছনে ঘুরেছিলাম তার পরেও তার পাত্তা পেয়েছিলাম না,কিন্তু কিছু মনে হতো না,আমি আশা ছেড়েছিলাম না।

তবে যেদিন স্যার কলেজ থেকে চলে যাচ্ছিলেন তার দেশের বাড়ি,
কান্নায় আমার বুক ভেঙে আসছিলো,মনে হচ্ছিলো হারাই ফেললাম বুঝি নীলকে।
আমি নিজেকে সামলাতে না পেরে,দৌরে গিয়ে নীলকে জ্বরাই ধরে,কাঁদতে কাঁদতে ওকে বললাম:আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি,আমাকে বিয়ে করবা?
নীল রাজী হয়ে গেলো,আর আমরা বিয়ে করে নিলাম।
বিয়ের পর ভেবেছিলাম জীবনটা এখন অনেক সুন্দর,
কিন্তু আমি যে কত বড় অন্ধকারের মধ্যে ছিলাম আমার সাথে গত কয়েকদিনে যে ঘটনাগুলা ঘটলো সেগুলা না ঘটলে হইতো বুঝতাম না। যাই হোক ঘটনাই আসি।

নীল আসলে এতিম,অনেক ছোট থাকতেই নাকি ওর বাবা মা মারা গেছিলো।তাই বিয়ের পর ওর দেশের বাসাই গিয়ে কাউকে দেখতে পাই নাই।মস্ত বড় বাড়ি তবে সেখানে আমি আর নীল একা।বাড়ির পরিবেশটা অনেক সুন্দর ছিলো,গ্রামের একদম এক কোনাই,একটা গাছগাছালি যুক্ত দুই তওলা বাড়ি।প্রথম প্রথম কিছুদিন বেশ ভালো লাগতো পরিবেশটা,আমি যে নীলকে দেখেছিলাম,সে যে এতটা মিশুক আমি জানতাম না।আমায় অনেক ভালোবাসে ও।

তবে বেশ কিছুদিন ধরে আমি খেয়াল করছি নীল একা থাকলে কাদের সাথে যেনো কথা বলে।কিন্তু বাসাই তো আমি আর ও ছাড়া কেউ নেই! আবার আমায় ওর থেকে এক মুহুর্তও দূরে থাকতে দেয় না,চিল্লাতে থাকে আমায় কাছে না পেলে।পাগোলের মত করে।

তবে শুধু এগুলাই না আমার সাথেও কিছু ঘটনা ঘটেই যাচ্ছিলো।আমি ঘুমিয়ে থাকলে মনে হতো আমার আশেপাশে অনেক লোক দ্বারাই আছে।বিষেশ করে একটা ছোট বাচ্ছাকে দেখতাম।তবে নীল আমার সাথে থাকলে এমনটা হতো না। যায় হোক আমি নীলের সাথে হ্যাপিই ছিলাম।কিন্তু সেদিন আমার সাথে যা ঘটলো তাতে আমার মনে হয় না আমি বেশিদিন বাঁচবো।নীল এর সম্পর্কে এমন কথা আমি কল্পনাতেও ভাবতে পারি নি!

চলবে…………

গল্প অনেক বড় হয়ে গেছে তবে অসংখ্য আপনার মূল্যবান সময় ব্যায় করে আমার এই পচা গল্পটি পড়ার জন্য।আপনার কৃতজ্ঞতা ছিলো ভাইজান জাযাকাল্লাহ। আর জানি অনেক ভুল হয়েছে,ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।