পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের অভ্যাস করুন

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের অভ্যাস করুন

বিশ্বব্যাপী শিল্পায়ন ও নগরায়নের কারণে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশের ভারসাস্য নষ্ট হয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ও জলবায়ু হুমকির মুখে পড়ছে। তাই মানুষকে সচেতন করতে বিশ্বব্যাপী ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হয়। আমাদের পরিবেশ রক্ষায় গাছপালার ভূমিকা অপরিসীম। প্রত্যেকটি প্রাণীই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বৃক্ষা বা উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল। এক কথায় বৃক্ষ ছাড়া পৃথিবীতে জীবজগত অকল্পনীয় ব্যাপার।

পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষের ভূমিকা ব্যাপক। বৃক্ষ বাতাসে বিভিন্ন গ্যাসের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বাতাসে কার্বন-ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেশি হলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, কারণ ওই গ্যাস তাপ শোষণ করে রাখে। বর্তমানে গ্রিন হাউস ইফেক্ট নামে যা সুপরিচিত। বৃক্ষ বাতাস থেকে কার্বনডাইঅক্সাইড শোষণ করে গ্রিন হাউস ইফেক্টের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

Pop Ads

অপরদিকে বাতাসে অক্সিজেন যোগ করে বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত বজায় রাখতে সাহায্য করে। এভাবে বৃক্ষ বায়ুদূষণ কম করে বাতাস বিশুদ্ধ রাখে। বৃক্ষ বৃষ্টিপাত ঘটাতে সাহায্য করে। বৃক্ষের অভাবে উর্বর উৎপাদনশীল মাটি ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হয়। মাটির উর্বরতা বজায় রাখার জন্য দরকার বৃষ্টিপাত। বৃষ্টিপাত ঘটাতে আবশ্যক গাছপালা।

ভূমিক্ষয় রোধে গাছের ভূমিকা অনেক। বৃষ্টির প্রচণ্ড গতি ও শক্তিকে প্রশমিত করে ভূমিকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করে। গাছপালার শিকড় মাটিকে আঁকড়ে বেঁধে তার ক্ষয়রোধ করে। জীববৈচিত্র রক্ষার ক্ষেত্রে গাছপালা অপরিহার্য। অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা গাছই করে থাকে।

গাছপালা থেকে মানুষ খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি, গৃহ নির্মাণ ইত্যাদি তো পেয়েই থাকে। অন্যদিকে গাছপালা পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে মানুষের মনে আনন্দ দান করে। পরিবেশ দূষণ কমিয়ে এবং পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে উদ্ভিদ মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য উভয়ের উন্নতিতে সবচেয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

বর্তমানে আমরা যে পরিবেশ সংকটে ভুগছি তার জন্য আমরাই দায়ী। তাই এ সংকট থেকে মুক্তির জন্য প্রত্যেকেরই কিছু করণীয় আছে। নগরায়ন, শিল্পায়ন, কৃষির আধুনিকীকরণ ইত্যাদির ফলে পরিবেশ সংকট বেড়েই চলেছে। অথচ শিল্পায়ন-নগরায়নের গতি থামানো বা কমানো মোটেই সম্ভব নয়। তাই দরকার উন্নয়ন ও সংরক্ষণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা।

এ ক্ষেত্রে বৃক্ষ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। উদ্ভিদের সংরক্ষণ ও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রত্যেক মানুষই কিছু অবদান রাখতে পারে। তাই প্রত্যেকের উচিত প্রতিবছর বৃক্ষপোণের মৌসুমে বাড়ির আশপাশে কিংবা খোলা জায়গায় সাধ্য মতো গাছ লাগনো। তবেই পরিবেশ ভালো থাকবে। ভালো থাকবে আমাদের জীবন ও স্বাস্থ্য তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের অভ্যাস করুন।