ফের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে। এর মধ্য দিয়ে নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে দুই দেশের মধ্যকার কয়েক দশকের পুরনো শত্রুতার আবারও সামনে এলো। সংঘর্ষে ৪৯ সেনা নিহত হয়েছে বলে আজারবাইজান স্বীকার করেছে। তবে নিজেদের সেনা হতাহতের কথা জানায়নি আর্মেনিয়া। রাতভর সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
২০২০ সালে ছয় সপ্তাহের এক লড়াইয়ে আজারবাইজান নাগর্নো-কারাবাখের ওপর নিজেদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। এবারের এই সংঘর্ষের জন্য দুই পক্ষই একে অপরকে দায়ী করেছে। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণায় জানিয়েছে, আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনীর ইউনিটগুলো মর্টারসহ বিভিন্ন ক্যালিবারের অস্ত্র দিয়ে আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কয়েকটি অবস্থান, আশ্রয়স্থল ও রিইনফোর্সমেন্ট পয়েন্টে তীব্র গোলাবর্ষণ করেছে। এতে প্রাণহানি ও সামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজারবাইজানের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, তাদের সীমান্তে আর্মেনিয়ার বাহিনী গোয়েন্দা তৎপরতা চালাচ্ছে, এই এলাকায় অস্ত্র নিয়ে এসেছে এবং সোমবার রাতে খনন অভিযান চালিয়েছে। সামরিক লক্ষ্যস্থলে হামলার জন্যই তারা এসব করেছে বলে অভিযোগ দেশটির। এদিকে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তুমুল গোলাগুলি চলমান রয়েছে। আজারবাইজানের বড় ধরনের উসকানির পর এই গোলাগুলি শুরু হয়েছে। আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দিচ্ছে।
দুই পক্ষকেই অবিলম্বে সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রি অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকার সময় নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে মধ্যে প্রথম দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। নাগর্নো-কারাবাখ ভূখণ্ডটি আজারবাইজানের অংশ, দীর্ঘদিন ধরে এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হলেও এখানে আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর বিপুল উপস্থিতি আছে।
২০২০ সালের লড়াইয়ে আজারবাইজান এসব অঞ্চল পুনরুদ্ধার করে। ওই সময় রাশিয়ার মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতিতে লড়াই থামে এবং ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া বহু মানুষ ফিরে আসে। এরপর থেকে দুই দেশের নেতারা স্থায়ী একটি শান্তিচুক্তির লক্ষ্যে বেশ কয়েকবার মিলিত হয়েছিলেন।