বগুড়ায় অরেঞ্জকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় খুনি রাসেলসহ গ্রেফতার ৩ !

বগুড়ায় অরেঞ্জকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় খুনি রাসেলসহ গ্রেফতার ৩ !

নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাজমুল হাসান অরেঞ্জকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি শুটার রাসেলকে রাজধানীর বনানী থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানান।

এ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা অরেঞ্জ হত্যায় তিন জন আসামিকে গ্রেফতার করা হলো। র‌্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের কমান্ডার (স্কোয়াড্রন লিডার) সোহরাব হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ঢাকাস্থ র‌্যাবের একটি দল সোমবার রাত ১০টায় অভিযান পরিচালানা করে রাসেলকে গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে ঢাকায় র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে প্রেস ব্রিফিং করা হয়েছে।

Pop Ads

গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিয়মানুযায়ী বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। র‌্যাব কমান্ডার আরো জানান, সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বগুড়া র‌্যাব-১২ এর একটি দল খাইরুল ইসলাম নামে আরেক আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত খায়রুল বগুড়া শহরের মালগ্রাম ডাবতলা এলাকার বাসিন্দা এবং শহর যুবলীগের ৮ নম্বর ওর্য়াডের সাধারণ সম্পাদক এবং অরেঞ্জ হত্যা মামলার ৩নং আসামী।

সোমবার রাত ১১টায় বগুড়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাজমুল হাসান অরেঞ্জ মৃত্যুবরন করেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে টানা আট দিন তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। নিহত অরেঞ্জ মালগ্রাম দক্ষিণপাড়ার রেজাউল ইসলামের ছেলে।

তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগ বগুড়া জেলা শাখার সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সহ-সম্পাদক ছিলেন। সোমবার রাতেই বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা অরেঞ্জের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে জানান, অরেঞ্জ এর মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে যোহর নামাজের পর অরেঞ্জের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিকেলে আরেকটি জানাজা শেষে নামাজগড় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। ওসি জানান, গত ২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া শহরের মালগ্রামের ডাবতলা এলাকায় প্রতিপক্ষের গুলিবিদ্ধ হয়ে অরেঞ্জ গুরুতর আহত হয়। এ সময় তার বন্ধু স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিনহাজ শেখ আপেলও গুলিবিদ্ধ হন।

তবে অরেঞ্জের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে আইসিইউ-তে নেয়া হয়। পুলিশ জানায়, একটি নারী ঘটিত কারণে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ হয়। এর জের ধরে অরেঞ্জ ও আপেলকে গুলি করা হয়। এর আগে ঈদুল ফিতরের ঈদের পর একবার হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ওই হামলার শিকার গ্রুপটিই প্রতিশোধ নিতে এবার গুলি চালায়।

ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে অরেঞ্জ ও আপেল মালগ্রাম ডাবতলার মোড়ে বসে কথা বলছিলেন। এ সময় মালগ্রাম বেলতলা মোড় থেকে ৪/৫টি মোটর সাইকেলে একদল যুবক ডাবতলা মোড়ের দিকে যায়। তাদের মধ্য থেকে দু’জন অরেঞ্জ ও আপেলকে লক্ষ্য করে পর পর কয়েকটি গুলি ছোঁড়ে। দু’টি গুলি অরেঞ্জের বাম চোখের নিচে লাগে।

আর তার সঙ্গে থাকা আপেলের পেটে গুলি লাগে। অরেঞ্জের স্ত্রী স্বর্নালি আক্তার বাদী হয়ে ওইদিন রাতেই সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনক আসামী করে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার এস আই জাকির আল আহসান জানান, গত বৃহস্পতিবার টিপু নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি মালগ্রামের কসাইপাড়া এলাকার বাসিন্দা । এ নিয়ে ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হলো।