বদলগাছীতে বোরোর বাম্পার ফলন, ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা

বদলগাছীতে বোরোর বাম্পার ফলন, ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা। ছবি-বুলবুল

সুপ্রভাত বগুড়া (বুলবুল আহম্মেদ, ( বুলু) বদলগাঁছী ( নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর বদলগাছীতে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দামেও সন্তুষ্ট কৃষক। তবে শ্রমিক সংকটের আশঙ্কায় কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ। দু এক জন কৃষক ধান কাটতে শুরু করলেও আট দিন পরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। বদলগাছী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১০ হাজার নয়’শত ৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অর্জিত হয়েছে ১১ হাজার সাত’শত ৫০ হেক্টর যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাত’শত ৬০ হেক্টর বেশি।

এ উপজেলায় প্রায় ১৪ টি জাতের বোরো ধান চাষ করা হয়। তবে ব্রিধান-৮১, ২৮, ১৫, ৫০, জিরা, কাটারি ও গোল্ডেন আতব জাতের বোরো ধান কৃষকেরা বেশি পরিমাণে চাষাবাদ করে থাকেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরো জানায়, স্থানীয় ও বহিরাগত মিলিয়ে আনুমানিক প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক এ উপজেলায় বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করে থাকে। এর মধ্যে স্থানীয় শ্রমিক রয়েছে ৬ থেকে ৭ হাজার। আর বহিরাগত শ্রমিক আসে ৮ থেকে ৯ হাজার। সাধারণত রংপুর ও নিলফামারির ডোমার উপজেলা থেকে শ্রমিকরা এ উপজেলায় বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করতে আসেন।

Pop Ads

বদলগাছী সদর ইউ’পির মুথরা পুর গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন দৈনিক মাতৃজগত কে বলেন, আমি আট বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করেছি। ফলন আলহামদুলিল্লাহ বাম্পার হয়েছে। ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে। আকাশ ভালো থাকলে বিঘা প্রতি ২৪ থেকে ২৫ মণ হারে ধান ঘরে তুলতে পারবো। তিনি আরো বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ করতে খরচ হয়েছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারে কাঁচা ধানের মূল্য মণপ্রতি এক হাজার টাকা।

এই দামে যদি ধান বিক্রয় করা যায় তবে লাভ খুব ভালো হবে। কিন্তু ধান কাটা শ্রমিক নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় রয়েছি। প্রতি মণে ৭ থেকে ৯ কেজি ধান মজুরি দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করাতে হয়। কিন্তু লকডাউনের কারণে এখনো বাহিরের শ্রমিক আসতে পারেনি। বাহিরের শ্রমিক না আসলে অতিরিক্ত মজুরী দিয়েও ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেবে।

মিঠাপুর ইউ’পির উজালপুর গ্রামের শ্রী, শাওন জানান, তিনি ডোমার থেকে আসা শ্রমিকদের দ্বারা ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ করান। লকডাউনের কারণে শ্রমিক আসতে পারবে কি-না তা নিয়ে তিনি ভীষণ দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। সময় মতো শ্রমিক না আসলে মাথায় বাজ পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান আলী বলেন, চলতি মৌসুমের আবহাওয়া বোরো ধান চাষের অনুকূলে ছিল। তাই ফলনও বাম্পার হয়েছে। লকডাউনের কারণে বাহিরের শ্রমিক আসায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর ৮ হাজার ছয়’শত ৩০ জন ধানকাটা শ্রমিকের চাহিদা দেওয়া আছে। বাহিরের শ্রমিক আসলে ধান কাটা মাড়াইয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না।