মেঘালয় বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করতে আগ্রহী

মেঘালয় বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করতে আগ্রহী। ছবি-সংগৃহীত

সুপ্রভাত বগুড়া (জাতীয়): বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের অধিকাংশ জুড়েই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে। বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রেও ভারতের বাংলাভাষী এই অঞ্চলটির রয়েছে প্রাধান্য। ভারতের অন্য তিনটি রাজ্য মেঘালয়, আসাম ও ত্রিপুরার সঙ্গে সীমানা ভাগাভাগি করে আসলেও তাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক বা অর্থনৈতিক সম্পর্ক ততটা উন্নত নয় বাংলাদেশের। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা আন্তর্জাতিক সীমান্তে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করতে আগ্রহী ভারতের মেঘালয় রাজ্য সরকার। সম্প্রতি সে কারণেই দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

এ সপ্তাহে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী প্রেস্টোন টিনসংয়ের সঙ্গে দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানের বৈঠকেই এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। মেঘালয় যে তার আন্তর্জাতিক সীমান্তকে অর্থনৈতিক দিক থেকে ‘চাঙা’ করে তুলতে চায়, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক আগ্রহের কথা জানিয়েছেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী টিনসং। প্রথমত, মেঘালয় সরকার চায় তাদের রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তে অনেক ‘বর্ডার হাট’ গড়ে উঠুক—যেখানে সীমান্তের দুপাড়ের মানুষই তাদের নিজ নিজ মুদ্রায় নানা ধরনের জিনিসপত্র বেচাকেনা করতে পারবে।

Pop Ads

মেঘালয় ও বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় মূলত গারো, খাসিয়া প্রভৃতি জনজাতির বাস। তাদের মধ্যে এ ধরনের বর্ডার হাট খুবই জনপ্রিয় হবে বলে উভয় সরকারই মনে করছে। দ্বিতীয়ত, সীমান্তে আরও ‘ল্যান্ড ট্যারিফ স্টেশন’ বসানোর ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে মেঘালয়। তারা মনে করছে, এতে স্থলপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উৎসাহ পাবে এবং বাণিজ্যের পরিমাণও বাড়বে।

মেঘালয়ের ডাউকি ও বাংলাদেশের তামাবিলের মধ্যে যে সীমান্ত, সেখানে অবশ্য ইতোমধ্যে একটি ল্যান্ড ট্যারিফ স্টেশন আছে—এবং হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান তার মেঘালয় সফরের সময় সেটির কাজকর্ম সরেজমিন দেখেও গেছেন। তৃতীয়ত, মেঘালয় চায় তাদের সীমান্ত দিয়ে আরও বেশি সংখ্যায় বাংলাদেশি পর্যটক ভারতে বেড়াতে আসুক।

ডাউকি পোস্ট অবশ্য এরমধ্যেই বাংলাদেশি পর্যটকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়, কিন্তু এই পথ দিয়ে এখনকার তুলনায় অন্তত দ্বিগুণ পর্যটক আসতে পারেন বলে মেঘালয় মনে করছে। উপ-মুখ্যমন্ত্রী টিনসং বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে চারশ কিলোমিটার লম্বা ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার আছে। কিন্তু এই সীমান্তের বেশিরভাগ অংশই একেবারে ঘুমন্ত বলা চলে। আমাদের সরকার চায় সেটাকে একটা প্রাণবন্ত করে তুলতে।’

দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে জারি করা এক প্রেস বিবৃতিতেও জানানো হয়, রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। হাইকমিশনার বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এখন আন্তর্জাতিক বিশ্বেরও প্রশংসা কুড়াচ্ছে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দুই দেশের সরকারের যৌথ উদ্যোগে যেসব স্থাপনা গড়ে উঠছে, সেগুলো পরিদর্শন করতেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত চার দিনের সরকারি সফরে এ সপ্তাহে আসাম ও মেঘালয়ে গিয়েছিলেন। গুয়াহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনারও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এই সফরে আসামের রাজ্যপাল জগদীশ মুখী ও মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।