যেভাবে রোস্ট বানাবেন খাসির আস্ত রান; দেখুন রেসিপি

যেভাবে রোস্ট বানাবেন খাসির আস্ত রান; দেখুন রেসিপি । ছবি-সংগ্রহ

সুপ্রভাত বগুড়া (রান্না-বান্না): খাসির রান বা পায়ের রোস্ট বাঙালির কাছে নতুন কোনো রেসিপি নয়। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে অন্যতম একটি খাবার এই খাসির রানের রোস্ট। এই রান্না দুটো ধাপে করা হয়। প্রথম ধাপ চুলায় আর দ্বিতীয় ধাপ ওভেনে।

যাদের ওভেন নেই, তারা অল্প আঁচে হাঁড়ির মুখ ভাল করে আটকে রান্না করতে পারেন। তাতেও ওভেনের মতোই রান্না হবে। এই রান্না করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন বাচ্চা খাসির রান নিতে। সোয়া থেকে দেড় কেজির মধ্যে হলে ভাল।

Pop Ads

উপকরণ :
১ কেজি ওজনের খাসির রান
ঘি ১ কাপ
পেঁপে বাটা ২ টেবিল চামচ (চামড়া সহ বাটলে মাংস ভালো নরম হয়)
টক দই আধা কাপ
শুকনো মরিচের গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ
চিমটি পরিমাণ হলুদের গুঁড়ো
১ চা চামচ লবণ
১ চা চামচ আদা বাটা
১ চা চামচ রসুন বাটা
দুধ আধা কাপ – ভালো করে জ্বাল করে নিতে হবে
বাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ
আধা কাপ কাপ বেরেস্তা
পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ (পোস্ত বাটা না দিলে গ্রেভি করার জন্য দিতে হবে ৩ কাপ)
পোস্ত বাটা ১ টেবিল চামচ
টমেটো আধা কাপ (সস দেয়া যাবেনা)
আলুবোখরা ৪ টি
কিসমিস ১ টেবিল চামচ
কেওড়ার জল ১ টেবিল চামচ
গোলাপ জল ১ টেবিল চামচ

রোস্টের মসলা তৈরীর উপকরণ :
ছোটো এলাচ ৫ টি
বড় এলাচ ২ টি
তেজপাতা ২ টি
দারুচিনি ১০/১২ সে.মি.
১০টি লবঙ্গ
গোল মরিচ আধা চা চামচ
কাবাব চিনি আধা চা চামচ
স্টার এনিস মসলা ২ টি
জিরা ১ চা চামচ
মৌরী ১ চা চামচ
শাহী জিরা আধা চা চামচ
ধনে ১ টেবিল চামচ
জয়ফল ১ টি
জয়ত্রী আনুমানিক ২ গ্রাম

ব্রাইনের জন্য:
১/২ কাপ লবন
প্রয়োজন মতো দুধ

গ্রেভির জন্য উপকরণ:
১/৩ কাপ পিয়াজ বাটা
২ টেবিল চামচ আদা – রসুন বাটা
১/২ কাপ বেরেস্তা
আস্ত ৫-৬ টা ছোট এলাচ
২ টুকরা দারচিনি
৬-৭ টা লং
৮-১০ টা গোল মরিচ
আস্ত কাঁচামরিচ
১/৩ কাপ ক্রিম
১/২ টেবল চামচ কিশমিশ বাটা
১ টেবিল চামচ পোস্ত আর কাঠ বাদাম বা কাজু বাদাম একসাথে বাটা
চিনি স্বাদ অনুযায়ী
মেরিনেটের বেঁচে যাওয়া মশলা

প্রণালী :
১. ব্রাইন – ব্রাইন হলো লবনাক্ত পানিতে মাংস বেশ অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রাখা। এতে মাংস খুব জুসি থাকে, ড্রাই হয়ে যায় না। অনেকে খাসি বা ছাগল থেকে গন্ধ পান। ব্রাইন করলে এই গন্ধটাও থাকে না।

প্রথমে রানটা ধুয়ে কাঁটা চামচ দিয়ে কেচে নিন। এরপর আধা কাপ লবণ দিয়ে শুকনা ভাবে মাখিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। ১ ঘণ্টা পর ভাল করে ধুয়ে আরও ২ ঘণ্টা দুধে ভিজিয়ে রাখুন। দুধে ভিজানো হলে আর কোন গন্ধ থাকে না। দুধ মিশানো পানি হলেও ক্ষতি নেই। ২ ঘণ্টা পর ভাল করে ধুয়ে কিচেন টিস্যু দিয়ে মুছে নিন।

২. মেরিনেটের সব মশলা মাখিয়ে ফ্রিজে ২৪ ঘন্টা রেখে দিন। কমপক্ষে ৮-১০ ঘন্টা।

৩. বড় কড়াইতে তেল গরম করে মাংসের এক পিঠ দিন। ঢেকে দিন। চুলার আচ মাঝারি থাকবে। ৫ মিনিট পর উল্টে আরেক পিঠ দিন। আরও ৫ মিনিট ঢেকে রাখুন।

৪. আস্ত গরম মশলাগুলো দিয়ে দিন। একটু ভাজুন।

৫. এখন পেঁয়াজ বাটা, আদা, রসুন বাটা আর মেরিনেটের বাকি মশলা দিয়ে কশাতে থাকুন। মাঝারি থেকে কিছু কম আঁচ থাকবে চুলায়। ১০-১৫ মিনিট কশিয়ে আধা কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট পরে রানটি উল্টে দিন। আরও ১৫ মিনিট রান্না করুন। অল্প পানি লাগলে যোগ করুন।

৬. মেরিনেটের সময় যেহেতু লবণ দেয়া হয়েছে তাই চেখে দেখে লবন যোগ করুন।

৭. ১৫ মিনিট পর অল্প পানি দিন। বেরেস্তা, কাঁচামরিচ, কিশমিশ বাটা, বাদাম-পোস্ত বাটা আর ক্রিম দিয়ে দিন। আরও ৫ মিনিট রান্না করুন। নীচে যেন ধরে না যায়। প্রয়োজনে অল্প পানি যোগ করা যায়। স্বাদ অনুযায়ী চিনি দিন। কেওড়া আর গোলাপ জল দিন। চুলা বন্ধ করে দিন।

৮. এবার দ্বিতীয় ধাপ বা ওভেনে দেয়ার পালা। ফয়েল বা বেকিং ডিশে রানটি রেখে গ্রেভি’র অর্ধেক মশলা দিয়ে দিন। কিছু মশলা বাঁচিয়ে রাখলে ভালো।

৯. ফয়েল দিয়ে ঢেকে রেখে প্রি-হিটেড ওভেনে ৩৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে বা ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ১ ঘণ্টা বেক করুন। ১ ঘণ্টা পর মুখের ফয়েল খুলে দিয়ে অভেনের টেম্পারেচার কমিয়ে আরও ১ ঘণ্টা বেক করুন। চাইলে শেষের কয়েক মিনিট ব্রয়েল করা যায়।

১০. ব্যস! হয়ে গেল খাসির আস্ত রান রান্না। এবার সার্ভিং ডিসে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

টিপস:
১. ওভেন না থাকলে অল্প আঁচে হাঁড়ির মুখ ভাল করে ফয়েল দিয়ে আটকে রান রান্না করবেন। একদম সিদ্ধ হবার পর ক্রিমসহ বাকি মশলা দিয়ে আবার ফয়েল দিয়ে ঢেকে দমে রেখে দেবেন। একটা হাঁড়িতে পানি দিয়ে তার উপর এই রানের হাঁড়িটি রেখে দিলে সুন্দর দম হবে।

২. খাসির রান থেকে পুরো চর্বি সরাবেন না। কিছু রাখলে ভাল। এতে নরম আর জুসি থাকে।

৩. খোসাসহ কাঁচা পেঁপে বাটা আর ব্রাইন করা, এই কাজ দুটো অবশ্যই করবেন।

৪. রানের পা নিতে চাইলে রগটা এমনভাবে কাটুন যাতে পা টা বাঁকিয়ে আনা যায়। এতে হাড়িতে ফিট করতে সুবিধা হবে। আবার দেখতেও ভাল লাগবে।