লালপুরে নবাগত ওসির যোগদান, অবৈধ পুকুর খননকারী ও দালালদের পলায়ন

লালপুরে নবাগত ওসির যোগদান, অবৈধ পুকুর খননকারী ও দালালদের পলায়ন। ছবি-নাহিদ

সুপ্রভাত বগুড়া (লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: লালপুরে কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছিলো না ফসলি জমিতে পুকুর খনন। জেলা প্রশাসক শাহরিয়াজের কঠোর হুশিয়ারীর পরেও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে একের পর এক আবাদি জমি নষ্ট করে যাচ্ছিলো অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ব্যপক হারে প্রচার করা হয় । সোস্যাল মিডিয়াই প্রশাসনের দায়িত্ববোধ নিয়েও প্রশ্ন উঠে।

জেলা প্রশাসকের কঠোর হস্তক্ষেপে অন্য উপজেলা গুলোতে ভ্রাম্যমান আদালতের বেশ উপস্থিতি টের পেলেও লালপুরে সেটা ছিলো নগন্যই। জনসাধারণকে জিম্মি করেই এক প্রকার দাম্ভিকতার সাথে লালপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নেই ফসলি জমি নষ্ট শত শত পুকুর খনন চলছিলো। গ্রামীণ রাস্তায় অবৈধ ট্রাক্টর ও মাটি পড়ে রাস্তাগুলো নষ্ট হলেও প্রভাবশালী পুকুর খননকারীদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছিলো উপজেলার সাধারণ মানুষ। চুপচাপ দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না।

Pop Ads

তবে হঠাৎ করেই রাতারাতি অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রক্ষা পায় আবাদি জমি। গত ২৯ মার্চ লালপুর থানায় যোগদান করেন ওসি ফজলুর রহমান। তিনি এর আগে এখানে তদন্ত ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার যোগদানের পরেই পুকুর গুলো থেকে ভেকু (এক্সেভেটর) নিয়ে পালিয়ে যায় মাটির ব্যবসায়ীরা। রাস্তাগুলোই আর চোখে পড়ছে না অবৈধ ট্রাক্টর। চলমান পুকুর গুলো সমান্ত না করেই পুকুর থেকে পালিয়ে গেছে পুকুর খননকারীরা। কিন্ত কেন? কিভাবে হঠাৎ এমন পরিবর্তন হলো।

এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কিছু পুকুরখননকারী ও সাধারণ মানুষের কাছে কথা বললে জানা যায় লালপুর থানায় নতুন ওসি(অফিসার ইনচার্জ) যোগদান করেছে। তিনি এর আগেও এ থানায় কর্মরত ছিলেন। এ কারনে সকলেই তার সম্পর্কে জানে। তবে তাকেও ম্যানেজের কমতি রাখেননি মাটি ব্যাবসায়ীরা। কিন্তু কিছুতেই তাকে ম্যানেজ করতে না পেরে আপাতত বন্ধ আছে উপজেলার সমস্ত পুকুর। এ বিষয়ে কয়েকজন মাটির ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলেন, ওসি নতুন এসেছে। সবাই নতুন এলে এমন করেই।

কদিন পরেই ঠিক হয়ে যাবে। ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মিন্টু নামের এক যুবক বলেন, পুকুর খননকারীদের কাছে লালপুরবাসী জিম্মি হয়ে ছিলো। রাস্তাগুলোর এতোই খারাপ অবস্থা যে গত কিছুদিন আগে বৃষ্টি হওয়ায় আমার চোখের সামনে ৮ থেকে ১০জন দূর্ঘটনার শিকার হয়। জাতীয় দৈনিকে কর্মরত একজন সংবাদকর্মী বলেন, প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলায় ব্যপকহারে ফসলি জমিতে পুকুর খনন হয়েছে।

আমরা এ নিয়ে অনেক রিপোর্ট করেছি। তবুও বন্ধ হয়নি। তবে নবাগত ওসি ফজলুর রহমানের যোগদানের পর সবকিছু বন্ধ আছে । এজন্য অবশ্যই লালপুরবাসী তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। এ বিষয়ে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফজলুর রহমান বলেন, আদালতের নিশেধাক্কা অমান্য করেই ফসলি জমিতে পুকুর খনন চলছিলো। লালপুর থানা পুলিশ তাদের কঠোর হাতে দমন করেছে। শুধু তাই নয়, পদ্মা নদীতে অবৈধ বালু খেকোদের বিরুদ্ধেও নিয়মিত অভিযান চলছে। আমরা মাদক সহ লালপুরের আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি।