শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে বহাল রাখার পাশাপাশি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানালো বিসিবি

শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে বহাল রাখার পাশাপাশি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানালো বিসিবি

বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে বহাল রাখার পাশাপাশি স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্য আলাদা আরেকটি স্টেডিয়াম নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শনিবার (৮ এপ্রিল) ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে যৌথ মিটিং শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

বৈঠকে বিসিবি ছাড়াও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুও অংশগ্রহণ করেন।

Pop Ads

সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু জানান, বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে ক্রিকেট ভেন্যু বহাল রাখা সংক্রান্ত বিসিবির একটি চিঠি বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাছুদার রহমান রহমান মিলনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘বগুড়ায় স্থানীয় পর্যায়ের ক্রিকেট খেলা চালু রাখতে সংস্থাটির নিজস্ব অর্থায়নে পৃথক একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে।’

বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাছুদার রহমান মিলন জানিয়েছেন, বগুড়ায় একটি মাত্র ক্রিকেট ভেন্যু রয়েছে। সে কারণে একই সঙ্গে জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ের খেলা চালাতে সমস্যা হয়। অনেক দেরিতে হলেও বিবিসি কর্তৃপক্ষ এটি অনুধাবন করতে পেরেছেন। আর সে কারণেই তারা পৃথক একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম এক সময় ফুটবল স্টেডিয়াম ছিল। তবে ২০০৪ সালে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে সেটিকে ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রূপান্তর করা হয়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মালিকানাধীন ওই স্টেডিয়ামটিকে প্রথমে বিসিবি ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর ভেন্যুটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৭ জন স্টাফ নিয়োগ দেয়।

পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ৩০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ওই স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে ঘোষণা করে। পরে সেটি আন্তর্জাতিক টেস্ট ভেন্যুর স্বীকৃতি পায়। ওই স্টেডিয়ামেই ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল শ্রীলঙ্কার চার উইকেটে পরাজিত করে। তবে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরের পর ওই ভেন্যুতে আন্তর্জাতিক আর কোনো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। এর পরিবর্তে জাতীয় লীগের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এর পাশাপাশি জেলা ক্রীড়া সংস্থার তত্ত্বাবধানে সেখানে স্থানীয় পর্যায়ের খেলা চলতে থাকে।

তবে স্থানীয় পর্যায়ের ক্রিকেট খেলার কারণে জাতীয় লীগের খেলা পরিচালনার সুযোগ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিসিবি আকস্মিকভাবে গত ২ মার্চ বগুড়া শহীদ চান্দু ক্রিকেট ভেন্যু বাতিলের ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে ওই ভেন্যু থেকে ম্যানেজারসহ ১৭ স্টাফকে অন্যত্র বদলি করে। এমনকি সরঞ্জামগুলোও সরিয়ে নেয়। এতে ক্রিকেটপ্রেমীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ভেন্যু বহাল রাখার দাবিতে সচেতন নগারিক এবং খেলোয়ড়াররা আন্দোলনে নামেন। শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে বহাল রাখার দাবিতে হুমায়ুন আহমেদ রুমেল নামে এক যুবক দুই দফা অনশনে বসেন।

বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পদাক মাছুদার রহমান মিলন বলেন, ‘নতুন একটি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ২১ বিঘা জমি প্রয়োজন। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা বগুড়া থেকে শফিউল ইসলাম সুহাস, তাওহিদ হৃদয়, তানজিদ হাসান তামিম, খাদিজাতুল কুবরা, ঋতু মনি এবং শারমিন আক্তারের মতো ক্রিকেটারদের তৈরি করেছি। আলাদা ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মিত হলে আমরা আরও ক্রিকেটার তৈরি করতে পারব।’