শাজাহানপুরে পরিবেশ দূষনের অপরাধে কারখানা বন্ধের নির্দেশ

শাজাহানপুরে পরিবেশ দূষনের অপরাধে কারখানা বন্ধের নির্দেশ।

সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শাজাহানপুরে গ্রামের অভ্যন্তরে ও আবাসিক এলাকায় এসিডের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ দূষন করে পরিত্যাক্ত ব্যাটারী গলিয়ে সীসা তৈরী করার অপরাধে কারখানার মালিক রবিউল হাসান (৩৫) কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সেই সাথে কারখানাটি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। দীর্ঘদিন যাবত কারখানাটি বেনামে পরিচালিত হয়ে আসছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গজারিয়া গ্রামের নবাব আলী ব্যাপারীর ছেলে।

মঙ্গলবার ১২ জানুয়ারী উপজেলা সহকারী ভুমি কমিশনার আশিক খান এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। তিনি জানান, শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের বামুনিয়া গ্রামের খিয়ার পাড়ার অভ্যন্তরে এসিডের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ দূষন করে পরিত্যাক্ত ব্যাটারী গলিয়ে সীসা তৈরী করে আসছিল অভিযুক্ত ও দন্ডিত ওই ব্যাক্তি। ফলে এলাকার গাছপালা, পশুপাখি ও মানুষের জীবন দূষনীয় বাতাসের প্রভাবে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে পড়েছিল। স্থানীয় জনগনের এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।

Pop Ads

কারখানাটি বিষয়ে তিনি জানান, কারখানাটি প্রাচীর বেষ্টিত একটি উঁচু টিনের ঘর। পাশে একটি উঁচু চিমনি। ঘরের মধ্যে গর্ত করে মাটির চুলার মতো চুল্লি বানানো হয়েছে। আগুনের তাপে পরিত্যক্ত ব্যাটারির কোষগুলো সিমেন্টের মতো জমাট বাঁধে। চুল্লির মধ্যে কাঠ ও কয়লা দিয়ে পরতে পরতে এসিড মিশ্রিত জমাট বাঁধা বর্জ্য সাজানো হয়। এরপর আগুন ধরিয়ে দিয়ে একটি পাম্পের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক পাখা দিয়ে প্রচুর বেগে বাতাস দেওয়া হয়। কাঠ ও কয়লা পুড়ে একটি আগুনের কুন্ডলী সৃষ্টি হয়। সীসা পুড়লে তরল হয়।

এরপর একটি লম্বা চামচ দিয়ে বর্জ্য সরিয়ে সীসা লোহার তৈরি কড়াইতে রাখা হয়। ঘন দূষিত ধূসর ধোঁয়া চিমনি দিয়ে বের হয়ে যায়। দিনের বেলা সীসা ও বর্জ্য চেনা যায় না। সীসা রাতে চকচক করে। এ জন্য রাতে সীসা গলানো হয়। সীসা উচ্চ তাপমাত্রায় গলানোর সময় সহযোগী হিসেবে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইডসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর যৌগ উৎপাদিত হয় এবং তা দ্রæত বাতাসের সঙ্গে মিশে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এতে পরিবেশ দূষিত হয়। আশঙ্কা দেখা দেয় অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ ও ক্যানসারের মতো বড় রোগের। যা করোনাকলীন এসময়ে আরও বিপদজনক হতে পারে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা বিষয়ে উপজেলা সহকারী ভুমি কমিশনার মোঃ আশিক খান বলেন, এধরনের কর্মকান্ড এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় ও জনজীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ।

তাই উক্ত অপরাধের কারণে এবং কারখানার পরিচালক রবিউল হাসানের অবস্থানগত ও পরিবেশগত কোন ছাড়পত্র না থাকায় বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি অবৈধ সীসা উৎপাদন কারখানাটি বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে সতর্ক করা হয়।