সুপ্রভাত বগুড়া ডেস্ক: কাকতালীয় হলেও গত ৮ শতাব্দীর প্রতিটিতেই প্রায় একই সময়ে আঘাত হেনেছে প্রাণঘাতি মহামারি। যা কেড়ে নিয়েছে কোটি মানুষের প্রাণ। আর গেলো ৪০০ বছরে প্রতি শতকের ২০ সালেই আঘাত হেনেছে মহামারি।
চলতি শতাব্দীতে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের অপর নাম নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। করোনা মহামারিতে প্রতিদিনই হাজারো মানুষের মৃত্যু ঘটছে বিশ্বজুড়ে। এমনকি ভাইরাসাটি ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি ও স্পেনসহ বিশ্বের প্রতিটি দেশে।
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারিতে এরিমধ্যে মারা গেছেন সোয়া ২ লাখেরও বেশি মানুষ। আর আক্রান্ত ৩২ লাখের ওপরে। ঠিক ১০০ বছরে আগে, ১৯২০ সালে “স্প্যানিস ফ্লু” নামে এক মহামারির দেখা দেয়। ১৯১৮ তে শুরু হলেও ২০ সালে তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।
মাত্র ২ বছরে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। আর এতে বিশ্বজুড়ে মারা যায় ৫ কোটির বেশি মানুষ। ১৮২০ সালেও বিশ্বজুড়ে ভয়ঙ্কর আঘাত হানে কলেরা। এশিয়ার দেশগুলোতে এর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকায় ইতিহাসে এটি ‘এশিয়াটিক কলেরা’ নামেও পরিচিত।
এ রোগে ভারত ও পূর্ব এশিয়ায় মারা যায় কয়েক লাখ মানুষ। কলেরাটি মহামারি রূপ ধারণ করে ছড়িয়ে পড়ে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক ও সিরিয়া হয়ে জানবিবার পর্যন্ত।
আর একই সময়ে ইউরোপ ও আফ্রিকাতে বসন্তে মারা যায় প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ। সাল ১৭২০, ফ্রান্সের মার্সেই নগরীতে প্রাদুর্ভাব ঘটে মহামারী প্লেগের। মাত্র ২ বছরের ব্যবধানে শহরটিতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। শহর থেকে মৃতদেহ সরাতে কয়েদিদের মুক্তি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
আর প্লেগে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ১০ লাখের মতো হয়। ১৬১৬ সালে লন্ডন দেখে মহামারির আসল রূপ। স্মলপক্স, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও টাইফাসসহ অজানা সব ভাইরাস জ্বরে ঘরে ঘরে মানুষ মরতে শুরু করে।
শহরের ৯০ শতাংশ মানুষ অজানা রোগে আক্রান্ত হয়। লন্ডন পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। ১৬২৯ থেকে ১৬৩১ সালে ইতালিতে ছড়িয়ে পড়া প্লেগ রোগে আড়াই লাখ মানুষ মারা যায়।
১৫১৯ সালে বর্তমান মেক্সিকোতে স্যালমোনেলা জাতীয় ব্যাকটেরিয়া নিশ্চিহ্ন করে দেয় জনপদ। মেক্সিকোকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া এই রোগের কারণে অ্যাজটেক সভ্যতা পুরোপুরি ধ্বংসের মুখে পড়ে। আর এই অঞ্চলের ৮০ শতাংশ মানুষ মারা যায়।