হাকিমপুরের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ব্লাড টেস্ট করানো উচিৎ: বিএমএসএফ

হাকিমপুরের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ব্লাড টেস্ট করানো উচিৎ: বিএমএসএফ

সুপ্রভাত ডেস্ক: দিনাজপুরের হাকিমপুরে সাংবাদিকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহবুবুর আলমের বিরুদ্ধে। নিয়মিত অফিস করেন না এই কর্মকর্তা, সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী। অফিসে না পেয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে রাইজিংবিডি’র দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি মোসলেম উদ্দিনকে অকথ্য ভাষায় গালি এবং দেখে নিবে বলে হুমকি দেন এই কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএমএসএফ’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমেদ আবু জাফর বলেন, ঐ কর্মকর্তার ব্লাড টেস্ট করা দরকার, সম্ভবত তিনি সরকারের মঙ্গল চাননা। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এমন আচরণ করতে পারেন না। তারমত হীনমন্য লোক কি করে সরকারি চাকরী করেন। তার দ্বারা জনগনকে সরকারি সেবা কিংবা উন্নয়ন সম্ভব বলে মনে হয়না। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে অফিসে ঐ কর্মকর্তাকে না পেয়ে ফোন দিলে, মুঠোফোনে এসব অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন তিনি।

Pop Ads

রাইজিংবিডি’র দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি মোসলেম উদ্দিন বিএমএসএফকে জানান, গত দুই সপ্তাহে কয়েকদিন কিছু তথ্য নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যান। কিন্তু প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে অফিসে পাই না, তার অফিস কক্ষে তালা ঝুলানো দেখি। আবার সেবা নিতে আসা অনেক ভুক্তভোগীরা তাকে না পেয়ে ফিরে যান। বৃহস্পতিবার দুপুরে কিছু তথ্য পাবার আশায় সেই কার্যালয়ে আমি আবারও উপস্থিত হই। এইদিনও তিনি অফিসে আসেননি। তার অফিস কক্ষে তালা ঝুলানো।

এসময় ঐকর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে আপনি আজকেও অফিসে আসেননি। এমন কথা বলার সাথে সাথে তিনি আমার ওপর চড়াও হয়ে বলেন ফাজলামি করা বাদ দেন, বেয়াদব কোথাকার। কিসের সাংবাদিক আপনি, সাংবাদিকতা শিখায় দিবো আমি। আমি অফিস করি বা না করি আপনাকে কোন কৈফিয়ত দিতে রাজি নই। আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হবে। সাংবাদিক মোসলেম উদ্দিনকে কেন অপমান ও অপদস্ত করেছেন? জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহবুবুর আলম সাংবাদিকদের বলেন, এটা আমার ভুল হয়ে গেছে, আমার মাথা ঠিক ছিলো না, আমি অসুস্থ ছিলাম। আমাকে আপনারা মাফ করে দিন।

আগামী রোববার আপনারা সবাই আমার অফিসে আসুন, চায়ের দাওয়াত রইল। এবিষয়ে দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ডিএলও) আলতাফ হোসেন বলেন, একজন সাংবাদিক প্রতিটি দপ্তরে যাবেন এবং তথ্য সংগ্রহ করে সংবাদ লিখবেন, এটাই তাদের কাজ। আমার অফিসেও তারা আসবেন, আমি অফিস না করলে আমার বিরুদ্ধেও সাংবাদিকেরা লিখবেন। তিনি আরও বলেন, আমি এবিষয়ে আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আমি সব জানলাম, ঐ কর্মকর্তার সমস্যা আছে। আমি উনার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও এনটিভি’র হিলি প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, একজন গণমাধ্যম কর্মীকে একজন সরকারি কর্মকর্তা এভাবে আচরণ করতে পারেন না। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা আগামীতে আমরা কঠোর অবস্থানে যাবো।

বিএমএসএফ’র পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, প্রতিনিয়ত সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নানামুখী সমস্যা, মামলা-হামলার শিকার হন। সম্প্রতি বগুড়ার শাহজাহানপুরে দুই সাংবাদিক সরকারি ওএমএস’র চাল চুরির খবর জানতে গিয়ে চালচোরদের দ্বারা গণপিটুনি, ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজির মামলায় আসামী করা হয়।

এ ঘটনায় তারা কারাবন্দী। সাংবাদিকদের দমাতে অহরহ এমন ঘটনা ঘটছেই,থামানো যাচ্ছেনা। এসবের মোকাবেলা করতে প্রয়োজন সাংবাদিক সুরক্ষা আইন। এ আইনটি চালু হলে সাংবাদিকরা চোর,গুন্ডা,দূর্ণীতিবাজদের বিরুদ্ধে কলম চালাতে পারবে, দেশের সম্পদ রক্ষা পেলে সোনার বাংলা গড়ে ওঠবে।