চিরিরবন্দরের কারখানায় শীতের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে

17
চিরিরবন্দরের কারখানায় শীতের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে

শীত মৌসুমকে সামনে রেখে চিরিরবন্দরে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র পোশাক কারখানাগুলোতে শীতের পোশাক বা শীতবস্ত্র তৈরিতে শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন।

উপজেলার রানীরবন্দরে বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা ১৫-২০টি মিনি গার্মেন্টস মালিকরা এখন শীতের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মুসলমানদের দুই ঈদ, শীত মৌসুম এবং গরমের উপর নির্ভর করে রাজধানী ঢাকা থেকে কাপড়সহ অন্যান্য কাঁচামাল এনে পোশাক তৈরি করেন এসব ক্ষুদ্র পোশাক শিল্পের সাথে জড়িতরা। শীত আসার পূর্বেই বাজারে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে পোশাক উৎপাদনে মনোযোগী হন এ শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকরা।

Pop Ads

জানা গেছে, এসব কারখানায় শ্রমিকদের দিয়ে পোশাকগুলোতে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় ডিজাইন আর সেলাই মেশিন দিয়ে সেলাই এবং হাতের কাজ করা হয়। শীতের মৌসুম চলে আসায় অধিকাংশ কারখানায় এখন তৈরি হচ্ছে শীতের পোশাক। এসব কারখানায় তৈরি হওয়া শীতের পোশাক পাঠানো হয় নীলফামারী, ঠাকডরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারী বাজারে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এখানে এসেও পোশাক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

সরজমিন বিভিন্ন কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা তুঙ্গে। সব বয়সের মানুষের জন্য শীতবস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন কারিগররা। এসব কারখানায় শিশুদের জন্য বাহারি ডিজাইনের জ্যাকেট থেকে শুরু করে মেয়েদের জন্য হাল ফ্যাশনের শীতের পোশাক তৈরি হচ্ছে। যা শোভা পাচ্ছে দেশের বিভিন্ন শো-রুমে।

প্রতিটি কারখানায় শীত পোশাক তৈরিতে ধুম লেগেছে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কারিগররা তৈরি করছেন বাহারি ডিজাইনের শীতের পোশাক। এসব কারখানায় কেউ কাপড় কাটছেন। কেউবা সেই কাপড় মেশিনে সেলাই করছেন। সব কাজ শেষে লাগানো হচ্ছে বোতাম ও চেইন। কেউবা তৈরিকৃত পোশাক ক্যালেন্ডার করছেন। অন্যস্থানে করা হচ্ছে ডিজাইনের অ্যাম্ব্রয়ডারির কাজ। কারখানার সেলাই মেশিনের শব্দই বলে দিচ্ছে কারিগরদের কর্মব্যস্ততা। শ্রমিকরা চাহিদানুযায়ী পোশাক তৈরি করছেন।

গ্রামীণ শহর রানীরবন্দরে সুমাইয়া গার্মেন্টস ও মা গার্মেন্টসে পলাশ মহন্ত, মনির হোসেন, অহিদুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেনসহ একাধিক শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে-দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। এজন্য তারা শীতবস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। বাজার ধরতে বর্তমানে শার্ট-প্যান্ট, রেডিমেট শার্টসহ অন্যান্য পোশাক তৈরি ছেড়ে দিয়ে তারা শীতের পোশাক তৈরি করছেন। তারা শীতের পোশাক তৈরি করে থরে থরে সাজিয়ে রাখছেন।

এসব কারখানায় প্রোডাকশনের উপর কাজ করে থাকেন। একজন শ্রমিক দৈনিক ৮-১০টি জ্যাকেট তৈরি করতে পারেন। এতে তারা দৈনিক ৮শ’-১ হাজার টাকা আয় করছেন। একজন দক্ষ শ্রমিক প্রতিমাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করছেন। শীতের পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকরাও ভালো মজুরি পাচ্ছেন।

সুমাইয়া গার্মেন্টসের সত্ত্বাধিকারী মো. শাহজাহান আলী ও মা গার্মেন্টসের সত্ত্বাধিকারী মো. আতিয়ার রহমান জানান, সময় মতো শীতবস্ত্র মার্কেটে পৌঁছানোর জন্য তারা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েছেন। বিভিন্ন কারখানায় বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি কাপড়ের শীতবস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এখানে এসে শীতবস্ত্র ক্রয় করতে শুরু করেছেন। এবারের শীত মৌসুমে রানীরবন্দর থেকে পাইকারী দৈনিক ৮-১০ লাখ টাকার শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। এ মৌসুমে অন্তত ১০ কোটি টাকার কেনাবেচা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে শীত যদি আরো বৃদ্ধি পায় তাহলে শীতবস্ত্র বিক্রি আরো বৃদ্ধি পাবে।