বগুড়ার হাজরাদিঘীতে ক্রিকেট জুয়ার টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্মম নির্যাতন

66
বগুড়ার হাজরাদিঘীতে ক্রিকেট জুয়ার টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্মম নির্যাতন

বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়নের হাজরাদিঘীতে ক্রিকেট জুয়ারি স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রিয়া আক্তার এখন হাসপাতালের বিছানায় নিদারুণ যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।

স্বামী তাকে শুধু বেধড়ক মারধোর করেই ক্ষান্ত হয়নি, রান্না করার গরম খুন্তি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্নস্থানে ছ্যাঁকা দিয়েছে। এতে তার শরীরে ফসকা পড়েছে। যৌতুকের ৩ লাখ টাকা না পেয়ে তার ওপর এই নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ ।

Pop Ads

নির্যাতিত রিয়া আক্তার (২৭) বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের বাঘোপাড়া গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে। তার স্বামীর নাম মো: রায়হান উদ্দীন। তার বাড়ি বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়নের হাজরাদিঘী উত্তরপাড়ায়। রিয়া আক্তারকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রিয়ার বড়ভাই শামীম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গত আড়াই বছর আগে হাজরাদিঘী উত্তরপাড়ার মৃত আকবর আলী শাহ’র ছেলে চশমা ব্যবসায়ী মো: রায়হান উদ্দীনের সাথে তার ছোট বোন রিয়া আক্তারকে ধুমধাম করে বিয়ে দেন।

সে সময় যৌতুক হিসাবে রায়হানকে ৭ লাখ টাকা, ফ্রিজ, রঙ্গিন টিভি সহ প্রয়োজনীয় দামি আসবাবপত্র দেয়া হয়। বিয়ের পর তাদের ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তার বয়স এখন দেড় বছর। কিন্তু বিয়ের পর জানতে পারেন তার বোনের স্বামী চশমা ব্যবসার আড়ালে একজন ক্রিকেট জুয়ারি।

আইপিএল ক্রিকেট খেলায় বাজি ধরে বহু টাকা হেরে নি:স্ব হয়ে গেছে। এ জন্য তার যখন টাকার প্রয়োজন হয় তখন সে তার বোনের কাছে টাকা চেয়ে যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকা না পেলে তার বোনকে ধারাবাহিকভাবে নির্যাতন করে। কিন্তু তার বোন সব নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছিল।

এক পর্যায়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে ফের তার স্বামী রায়হান তার বোনের কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। কয়েকদিন আগে চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলায় বাজি ধরে আরও বহু টাকা হেরেছে রায়হান। এ জন্য তার টাকার প্রয়োজন ছিল।

তাই রায়হান তার বোনের কাছে যৌতুক হিসাবে ওই পরিমাণ টাকা দাবি করে আবারও তাকে বেধড়ক নির্যাতন শুরু করে। এই নির্যাতনে যোগ দেয় তার শাশুড়িও। এক পর্যায়ে তার স্বামী রান্না করার গরম খুন্তি এনে দু’হাত ও পা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেয়।

এতে সে গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর লোকমুখে খবর পেয়ে তারা তার শশুড়বাড়িতে গিয়ে তার বোনকে মুমূর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে ওই হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এ ব্যাপারে শামীম হোসেন বলেন, তার বোনের ওপর নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মো: সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, ঘটনাটি তিনি জেনেছেন। আজ হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে নির্যাতিত ওই নারীর জবানবন্দি নেয়া হবে। তবে আজ বুধবার (২৫ অক্টোবর) পর্যন্ত থানায় বাদি মামলা দায়ের করেননি। মামলা দায়ের করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।