ব্যাপক চাহিদার পরও অ্যালোভেরা উৎপাদনে অনীহা কেন?

8
ব্যাপক চাহিদার পরও অ্যালোভেরা উৎপাদনে অনীহা কেন?

দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও, উৎপাদন খরচই তুলতে পারছেন না নাটোরের অ্যালোভেরা চাষিরা। ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এই মহৌষধ ভেষজ। অথচ উৎপাদন খরচ কেজিতে ১৪ টাকা। এতে লোকসানে হিমশিম অবস্থা চাষিদের। তাই অ্যালোভেরা উৎপাদনে চাষিদের মধ্যে অনীহা সৃষ্টি হচ্ছে
কৃষকরা জানান, সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ঔষধি গ্রামে মাঠজুড়ে অ্যালোভেরার আবাদ হলেও গত ৩ বছর ধরে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত তারা। স্থানীয়ভাবে বাজার ব্যবস্থা না থাকায় কয়েকজন ব্যবসায়ী প্রতিকেজি অ্যালোভেরা কেনেন নামমাত্র দামে। অ্যালোভেরা উৎপাদনে অনীহা দেখা দিয়েছে।

এ ছাড়া, বিদেশি প্রতিষ্ঠান এখান থেকে অ্যালোভেরা কিনলেও দাম দিচ্ছে কেজিপ্রতি ৭ টাকা করে। অথচ কেজিতে উৎপাদন খরচ দাঁড়ায় ১৪ টাকা। তাই বর্তমান দামে লোকসান গুনছেন কৃষকরা। ২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ গ্রামের অ্যালাভেরা বিক্রি হতো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। কিন্তু করোনাকালে দরপতন হওয়ার পর এখনো তা কাটিয়ে না ওঠায় হতাশ চাষিরা।

Pop Ads

কৃষক জয়নাল হোসেন বলেন, বিদেশে রফতানি হওয়ায় ২০০৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ঔষধি গ্রাম থেকে প্রতি কেজি অ্যালোভেরা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়। করোনার অজুহাতে ২০২০ সালে দাম কমতে থাকে। এরপর আর দাম বাড়েনি।

কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়ভাবে দাম না পাওয়ায় তাদের অনেক কৃষক সরাসরি ঢাকায় পাঠান। সেখানে ১৫ টাকায় বিক্রি হলেও ঢাকায় গিয়ে টাকা আনতে হয়। এ ছাড়া টাকা পেতেও দেরি হয়।

নাটোরের সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ঔষধি গ্রামে মাঠজুড়ে দেখা যায় অ্যালোভেরার আবাদ। ছবি: সময় সংবাদ

ব্যবসায়ী ওহিদুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় প্রতি কেজি অ্যালোভেরা ১৫/১৬ টাকা দাম দেয়। পরিবহন খরচসহ তাদের লাভের অংশ রেখে তারা ৮/১০ টাকায় কেনেন।

কৃষক ও ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, গত ৩ বছরে অ্যালোভেরা চাষে তিনি ৪ লাখ টাকা লোকসান গুনেছেন। অ্যালোভেরা চাষিদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ না থাকায় কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। নাটোর থেকে সারা দেশে অ্যালোভেরা সরবরাহ হয়। চাষিরা ঐক্যবদ্ধ হলে লোকসান গুনতে হতো না।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, করোনার কারণে অ্যালোভেরা রফতানি বন্ধ হওয়ার পর আর চালু সম্ভব হয়নি। রফতানি শুরু না হলে কৃষকরা লাভবান হবেন না। তাই স্থানীয় কৃষি বিভাগ রফতানির উদ্যোগ নিতে বিভিন্ন দফতরে যোগাযোগ করছে।
প্রতিবছর নাটোরের এই ঔষধি গ্রামে প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন অ্যালোভেরা উৎপাদন হয়।