শর্তের জালে পোশাক রপ্তানি

4
শর্তের জালে পোশাক রপ্তানি

নিষেধাজ্ঞায় পড়লে দেশ থেকে পোশাক না নেয়ার শর্ত আরোপ করেছে একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, প্রথমবারের মতো এলসির সাধারণ শর্তে এটি দেয়া হয়েছে। যাতে বলা হয়, বাংলাদেশ কোনও নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লে তারা পণ্য নেবে না। এমনকি জাহাজীকরণের পরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনও ঘটনা ঘটলে মিলবে না অর্থ।

Pop Ads

এতে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলতে ব্যাংকগুলো অনীহা প্রকাশ করতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তৈরী পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি। ফারুক হাসান বলেন, নতুন শর্ত দেয়ায় দুশ্চিন্তা বাড়লো। কারণ, মূল ঋণপত্রের বিপরীতে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র খুলতে নাও পারে কিছু ব্যাংক। কেননা নতুন এই শর্তের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির পর অর্থপ্রাপ্তির বিষয়টিতে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

তিনি বলেন, ক্রেতা পণ্য না নিলে স্টক হয়ে যাবে। ফলে সমস্যা বাড়বে। উদ্যোক্তারা দুশ্চিন্তায় পড়বেন। তবে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আমরা মনে করি না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমনীতি বিশ্বের সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য। অন্য দেশে ক্রয়াদেশ দেয়ার ক্ষেত্রেও হয়তো একই ধরনের শর্ত দিচ্ছে বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান।

গত ১৬ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী শ্রম অধিকার সুরক্ষায় নতুন নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। সেসময় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, যারা শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করবে, হুমকি দেবে, ভয় দেখাবে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

গত ২০ নভেম্বর এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বাণিজ্যসচিবকে চিঠি দেয় ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস। তাতে বলা হয়, নতুন মার্কিন শ্রম নীতির টার্গেট হতে পারে বাংলাদেশ। কারণ, শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের ওপর এই নীতি আরোপের সুযোগ রয়েছে।

ইতোমধ্যে পণ্যের জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে সতর্কবার্তা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তারা বলেছে, শুধু শ্রম আইন সংশোধন আর শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করলেই হবে না। নিশ্চিত করতে হবে মানবাধিকারও। যেখানে বিরোধীদের মত প্রকাশ এবং সমাবেশের স্বাধীনতা থাকবে। তবেই ইইউ’তে অব্যাহত থাকবে বাংলাদেশের পণ্যে জিএসপি সুবিধা।