সুপ্রভাত বগুড়া (স্বাধীন মতামত): চাইলেই হয়তো বাগিচার সুন্দর-সুরভিত ফুল দিয়ে একটি মালা গাঁথা যাবে,কিন্তু কবি জিল্লুর রহমানের মতো একজন কবি মনস্বী লেখক,বহুপ্রজ,মেধা তথা সাহিত্যমণীষার মননবিশ^ এবং ভাবনার সমগ্রতাকে এই অতি পরিমিত পরিসরে বিন্যস্ত বা ব্যাখ্যা বর্ণনা করা দূরহ কষ্টসাধ্য! তবে বোদ্ধা এবং সচেতন পাঠক প্রবরের নিকট তাঁর তাবৎ অনন্যতা ,নান্দনিকতা ও সৃজনকুশলতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলা নিষ্প্রয়োজন।
বহু পূর্বেই তিনি তাঁর সৃজনসত্তা ও কাব্যদ্যূতির আলোকে নির্মাণ করেছেন স্বতন্ত্র সড়কচিহ্ন।তার কাব্যগ্রন্থ ”ফোঁটায় ফোঁটায় উষ্ণ কিছু জল” পড়লে তার প্রতিভার স্বাক্ষর পাওয়া যায়। কবি জিল্লুর রহমানের কবিতার স্বাতন্ত্র এখানেই যে,তিনি ভাব ও ভাষার জটিলতা দিয়ে কবিতাকে অহেতুক দুর্বোধ্য করেন না। তার কবিতার বিষয় প্রেক্ষিত এবং সমগ্রতা কৃত্তিমত্তার কুটাভাসে আর্কীণ থাকে না। সময়ের সাথে সময়ের ব্যবধান বিস্তর সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি তার কবিতার সাথে সময়ের ও জীবনের দূরত্ব দুর করতে সদাসচেষ্ট।
তবে কেবল আধুনিকতায় নয়,কালোত্তীর্ণ সময়ের পরীক্ষায়ও তিনি একজন মিথোজীবি সাহিত্য ¯্রষ্টা। তার কবিতায় সমকালীন নি¤œ ও মধ্যবিত্ত মানুষের দু:খ ভাববোধ,সংকট শুন্যতা,সমস্যা ও সম্ভাবনার অতিরেখ শিল্পায়ন ঘটে। কখনো তীব্র শ্লেষে ,কখনো তীক্ষè ব্যঙ্গবিদ্রæপে কখনো বা সখেদ কৌতুকে রসসিক্ত মনোভঙ্গিতে তার কবিতা বাঙময় হয়। সর্বোপরি ভাষা,ছন্দ আর শব্দের বিন্যাস বা গাঁথুনির জন্য তার সকল কবিতায় থাকে মৌলিকতা।
কবিতায় তিনি সব্যসাচী ও সিদ্ধহস্ত এবং কবিতা তার সহজাত প্রবৃত্তির কুসুমপ্রসবণ হলেও মাঝে মাঝে কবিতার সমালোচনা ও কলাম লেখায়ও তিনি উজ্জ্বল। বলাবাহুল্য এখন অনলাইন নির্ভর হাইব্রিড কবিতার বাম্পার ফলন হলেও প্রবন্ধ/কলাম লেখার জন্য যে মৌলিক মেধা,শ্রম ও ধৈর্যে দরকার তা আমাদের মধ্যে নেই বললে চলে। প্রবন্ধের পথ কবিতার মতো মোটেই কুসুমাস্তীর্ণ নয়।
তাই তো আমরা অনেকে হাঁটি কবিতার সরলপথে। এই প্রেক্ষিতে তার সমৃদ্ধ প্রবন্ধ যাত্রা প্রণিধানযোগ্য। এবং স্বতন্ত্র আলোচনার দাবি রাখে। আশাকরি কবি জিল্লুর রহমান আরো ভাল ভাল কবিতা লিখে এগিয়ে যাবেন তার স্বভাবজাত প্রথা বিরোধী পথে । এবং সত্য, সুন্দর ও শাশ^তের সন্ধানে। তার সৌন্দর্যবিস্তারী এবং চেতনা সঞ্চারী মনোদৃষ্টির মীমাংসাসূত্র আবিষ্কারে তার গুণমুগ্ধরা উস্মুখ হবেন এই কামনা ব্যক্ত করছি।