সুপ্রভাত বগুড়া (জীবন-জীবীকা): করোনার মধ্যেই বগুড়ার মার্কেটগুলোতে চলছে ঈদের কেনা কাটার মহা উৎসব। গতকাল বগুড়ায় মার্কেট খোলার প্রথম দিন থেকেই সব বয়সী মানুষ ঈদের কেনাকাটা করতে মার্কেটগুলোতে হুমরি খেয়ে পড়েছেন। তাদের চলাফেরায় মনে হচ্ছে করোনা শতর্কতায় সামাজিক দুরত্ব তো দুরের কথা স্বাস্থ্য বিধি মানতে যেন বেমারুম ভুলে গেছেন অনেকেই।
অনেকেই মার্কেটে, দোকানের সামনে এবং রাস্তায় ঘোরাফেরা করছেন নাক মুখ বের করে গলায় মাস্ক ঝুরিয়ে। গতকালের মত আজও সকাল ১০টার আগেই মার্কেটমুখী সড়কগুলোতে মানুষের ঢল নামতে দেখো যায়। প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনেই কেনা কাটার সময় মানা হচ্ছেনা সামাজিক দুরত্ব।
শুধু তাই নয় রিক্সা-ভ্যান এমনটি সিএনজি ও ব্যাটারী চালিত অটোতে পর্যন্ত তীল ধারনের জায়গা নেই। কেনা কাটা বিষয়ে দোকান পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্টানকে সিমীত আকারে খোলার নির্দেশনা থাকলেও বাজার মুখি মানুষ যেন ধরেই নিয়েছেন লকডাউন শেষ। সবাই রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মুক্ত বিহঙ্গের মত। কোন ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছেনা সরকারী নির্দেশনা।
শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে ও সড়কে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেলেও মার্কেট ও বাজারমুখি জনতার চাপে তারা অসহায় হয়ে পড়ছেন। শুধু তৈরি পোশাক কিংবা জুতা-স্যান্ডেলের দোকানই নয় শহরে রড-সিমেন্টসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সব দোকানই খুলেছে। তবে অন্যান্য দোকানের তুলনায় ঈদের কেনাকাটার জন্য শহরের সবচেয়ে বড় বিপণি বিতান ‘নিউ মার্কেট’-এ মানুষের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সেখানে বেচা-কেনার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা শারীরিক দূরত্বও কেউ রাখছেন না। পছন্দের পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল ও কসমেটিকসহ অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য ক্রেতাদেরকে একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি, এমনকি ঠেলাঠেলিও করতে দেখা গেছে। অনেককে তাদের শিশু সন্তানদের নিয়েও কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।
নিউ মার্কেটের হাতে গোনা কয়েকটি বড় দোকানে বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পড়তে দেখা গেলেও ছোট-খাট দোকানগুলোতে বিক্রেতারা ন্যুনতম কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। বগুড়া বিআরটিসি শপিং কমপ্লেক্স ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিয়ামুল হক নিটু জানান, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে তারা দুপুর ১২টা পর্যন্ত দোকানগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু দোকানিরা ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বেচা-কেনা করতে চান।
তিনি বলেন, প্রতিটি দোকানে যাতে সুরক্ষা মেনে বেচা-কেনা করা হয় সেই বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করবো। এদিকে মার্কেটগুলোতে মানুষের উপড়েপড়া ভিড়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন।
তিনি বলেন, দোকান-পাট ও মার্কেট খোলা হলে সেখানে মানুষ ভিড় করবে বলেই আমরা আশঙ্কা করেছিলাম। যেহেতু আমরা সচেতন নই তাই কোন কিছু দিয়েই মানুষের ভিড় ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।
বগুড়া পুলিশের মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনতান চক্রবর্তী জানান, সরকারিভাবেই প্রত্যেককে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বলা হয়েছে। এটা হলো ব্যক্তি সচেতনতার বিষয়। কেউ যদি না মানে তাহলে তাকে জোর করে মানানো খুব কঠিন। তিনি বলেন, ‘বিকেল ৪টার পর যাতে কোন দোকান খোলা না থাকে সে বিষয়টি আমরা খুব কঠোরভাবে দেখবো।