কাবা শরিফ দেখলে বা ওমরাহ করলে কি হজ ফরজ হয়?

2
কাবা শরিফ দেখলে বা ওমরাহ করলে কি হজ ফরজ হয়?

কাবা দেখা বা উমরাহ করার দ্বারা হজ ফরজ হয়ে যাওয়ার কথাটি সহিহ নয়। হজ ফরজ হওয়ার সাথে কাবা দেখা বা উমরাহ করার কোনো সম্পর্ক নেই। সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপরই কেবল হজ ফরজ হয়।
وَلِلهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الْبَیْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَیْهِ سَبِیْلًا

অর্থাৎ, মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বাইতুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ করা ফরজ। (সুরা আলে ইমরান ৯৭)

Pop Ads

সামর্থ্য দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, হজের মৌসুমে কারো কাছে প্রয়োজন অতিরিক্ত এ পরিমাণ সম্পত্তি থাকা, যার মাধ্যমে যানবাহনে করে সে মক্কায় আসা-যাওয়া করতে পারে। যাদের ভরণ-পোষণ তার জিম্মায় রয়েছে হজ থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত তাদের খরচ নির্বাহ করতে সক্ষম হয়।

এমনিভাবে বর্তমানে ভিসা ও হজ আদায়ের অনুমতিও আইনীভাবে হজের সামর্থ্যরে অন্তর্ভুক্ত। আগের যুগে যেহেতু ভিসার আইনী বাধ্যবাধকতা ছিল না, তাই হজের মাসসমূহে কেউ উমরাহ করতে মক্কায় পৌঁছে গেলে বাকি দিনগুলো সেখানে অবস্থান করত হজ আদায় করতে কোনো আইনী বাধা ছিল না।

এজন্য ফুকাহায়ে কেরাম এমন ব্যক্তিকে সামর্থ্যবান গণ্য করে তার উপর হজ ফরজ হওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু বর্তমানে যেহেতু উমরার ভিসা দ্বারা হজ করা বা হজ পর্যন্ত মক্কায় অবস্থান করার সুযোগ নেই, সেজন্য এখন হজের মৌসুমেও উমরা করার দ্বারা হজ ফরজ হবে না। (আলমাসালিক ফিল মানাসিক ১/২৫৭; যুবদাতুল মানাসিক, পৃষ্ঠা ২১, ইরশাদুস সারি ইলা মানাসিকি মুল্লা আলী আলকারী, পৃষ্ঠা ৪১, ইমদাদুল আহকাম ২/১৬৩)

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, تَعَجّلُوا إِلَى الْحَجِّ يَعْنِي الْفَرِيضَةَ فَإِنّ أَحَدَكُمْ لَا يَدْرِي مَا يَعْرِضُ لَهُ তোমরা দ্রুততর সময়ের মধ্যে ফরয হজ্ব আদায় কর। কেননা তোমাদের কেউই একথা জানে না যে, আগামীতে তার ভাগ্যে কী আছে। (মুসনাদে আহমাদ ২৮৬৭)

হযরত উমর (রা.) বলেন, من أطاق الحج فلم يحج، فسواء عليه يهوديا مات أو نصرانيا যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্ব করল না তার ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করা আর খ্রিস্টান হয়ে মৃত্যুবরণ করা সমান কথা। (তাফসিরে ইবনে কাসির ২/৮৪)