৬৩ বছরের মধ্যে পাকিস্তানে ‘সবচেয়ে আর্দ্র এপ্রিল’ রেকর্ড

5
৬৩ বছরের মধ্যে পাকিস্তানে ‘সবচেয়ে আর্দ্র এপ্রিল’ রেকর্ড

১৯৬১ সালের পর সবচেয়ে আর্দ্র এপ্রিল দেখল পাকিস্তান। এই মাসে দেশটিতে স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া সংস্থার একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এএফপি শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের মেট্রোলজি বিভাগ শুক্রবার তাদের মাসিক জলবায়ু প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এপ্রিলে ৫৯.৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিক গড় ২২.৫ মিলিমিটারের চেয়ে ‘অনেক বেশি’।

Pop Ads

এ ছাড়া ‘১৯৬১ সালের পর সবচেয়ে আর্দ্র এপ্রিলে’ প্রবল বৃষ্টির কারণে বজ্রঝড় ও বাড়ি ধসে কমপক্ষে ১৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়ায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেখানে ৩৮ শিশুসহ ৮৪ জন মারা গেছে এবং সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এএফপি বলেছে, পাকিস্তান ক্রমবর্ধমানভাবে অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

সেই সঙ্গে দেশটিতে প্রায়ই ধ্বংসাত্মক মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়, যা সাধারণত জুলাই মাসে দেখা যায়। ২০২২ সালের গ্রীষ্মে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ অভূতপূর্ব বর্ষার বৃষ্টিতে নিমজ্জিত হয়েছিল। এতে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। বিশ্বব্যাংকের অনুমান অনুসারে দেশটির ৩০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছিল।

পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তরের মুখপাত্র জহির আহমদ বাবর বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন একটি প্রধান কারণ, যা আমাদের অঞ্চলের অনিয়মিত আবহাওয়ার ধরণকে প্রভাবিত করছে।’

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে এশিয়ার বেশির ভাগ অংশ তাপপ্রবাহের কারণে ঝলসে যাচ্ছে, সেখানে এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের জাতীয় মাসিক তাপমাত্রা ছিল ২৩.৬৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গড় তাপমাত্রা ২৪.৫৪ ডিগ্রির চেয়েও .৮৭ ডিগ্রি কম। পাশাপাশি সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে, যা গড়ের চেয়ে ৪৭৩ শতাংশ বেশি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, দক্ষিণ এশীয় দেশটির বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম জনসংখ্যা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের এক শতাংশেরও কমের জন্য তারা দায়ী।

তবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে চরম আবহাওয়ার জন্য দেশটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে গত মাসে ইউনিসেফ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা পাকিস্তানে শিশুদের বাঁচাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, পাকিস্তানের শিশুরা জলবায়ু সংকটের প্রভাবের অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।