কোনো অবস্থাতেই মানচিত্র বদলানো হবে না বলে ভারতকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নেপাল

কোনো অবস্থাতেই মানচিত্র বদলানো হবে না বলে ভারতকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নেপাল। ছবি-‌সংগৃহীত

সুপ্রভাত বগুড়া (আন্তর্জাতিক): কোনো অবস্থাতেই মানচিত্র বদলানো হবে না বলে ভারতকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নেপাল। অপেক্ষাকৃত ছোট্ট এ দেশটি নয়াদিল্লিকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের চাপের মুখে তারা কিছুতেই মানচিত্রে বদলাবে না।

আজ শুক্রবার (১২ জুন) নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম। সম্প্রতি লিপুলেখ গিরিপথ, লিম্পিয়াধুরা ও কালাপানিকে নিজেদের দেশের অংশ হিসেবে দেখিয়ে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে দেশটি।

Pop Ads

এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও নিজেদের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকার কথা জানিয়ে দিলো নেপাল। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি লিপুলেখ গিরিপথ থেকে কৈলাস-মানস সরোবরে যাওয়ার পথ পর্যন্ত একটি রাস্তার উদ্বোধন করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

তাতে প্রতিবাদ জানায় কেপি শর্মা ওলির সরকার। তারপরই ওই বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করে তারা। তা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় ভারত। এমনকি এর পেছনে চীনের উস্কানি থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় ভারত। তাতে দুদেশের মধ্যে উত্তাপ আরও বাড়ে।

এর পর কিছুটা সুর নরম করে পররাষ্ট্র সচিব স্তরে আলোচনার প্রস্তাব দেয় নেপাল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত দিল্লির তরফে কোনো সাড়াশব্দ মেলেনি। দীপ গয়ালি ভারতকে সাফ জানিয়ে দেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নেপালই একমাত্র দেশ, যা কখনো বিদেশি ঔপনিবেশিকদের হাতে ওঠেনি।

ভারত এবং চীন দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। কারো কথায় নিজেদের অধিকারের বিষয়ে প্রতিবাদ করা হচ্ছে না। নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গয়ালি সংবাদমাধ্যমে জানান, গেল বছরের নভেম্বরে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের মানচিত্র বদল করেছে ভারত।

এরপরেই আমরা এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত কারণ ওই এলাকাগুলো নেপালের মধ্যেই পড়ে। তবে কোন এলাকা নেপালের মধ্যে পড়ে তা নিয়ে আলোচনা দরকার ছিল বলেও তিনি জানান।

এর আগে গত মে মাসে বিতর্কিত ওই মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল। সম্প্রতি লিপুলেখ গিরিপথ থেকে কৈলাস-মানস সরোবরে যাওয়ার পথ পর্যন্ত একটি রাস্তার উদ্বোধন করেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এতে প্রতিবাদ জানায় নেপাল সরকার। উদ্বোধনের ঘটনার পরেই বিতর্কিত ওই মানচিত্র প্রকাশ করে তারা।

নেপালের এই পদক্ষেপে তীব্র আপত্তি জানায় ভারত। এমনকি এই পদক্ষেপের পেছনে চীনের উস্কানি থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় দেশটি। ফলে ২ দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে মানচিত্রের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব স্তরে আলোচনার প্রস্তাব দেয় নেপাল। তবে বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত দিল্লির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ভারতের কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গয়ালি। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র সচিব স্তরে আলোচনা করতে ভারতকে চিঠি দিয়েছিলাম আমরা। তবে এখনো পর্যন্ত তার উত্তর পাইনি। তবে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা করতে দুই দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এদিকে নেপালের সঙ্গে চলমান সমস্যা নিয়ে দিল্লির পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, এ নিয়ে আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারত। নেপালের ঐতিহ্যপূর্ণ সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বকে গভীর ভাবে সম্মান করি আমরা। সূত্র- আনন্দবাজার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here