জয়পুরহাট ফাঁক-ফোকরে কারখানা দখল শিরোনামে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদ জানালেন রফিকুল ইসলাম

জয়পুরহাট ফাঁক-ফোকরে কারখানা দখল শিরোনামে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদ জানালেন রফিকুল ইসলাম। ছবি-প্রতিবেদক

সুপ্রভাত বগুড়া (জয়পুরহাট প্রতিনিধি): জয়পুরহাটে ফাঁক- ফোকরে কারখানা দখল নামে যমুনা টিভির অনুসন্ধানি প্রতিবেদনটি প্রতারনা ও উদ্দ্যেশ্যমুলক। তিনি তার নিজ ছোট ভাই মোঃ আবু সাইমের নামে এসব কথা বলেন। প্রতিবেদনে মোঃ আবু সাইম বলেন তার নিজের তৈরী কারখানা জোর করে মোঃ রফিকুল ইসলাম দখল করতে চায়। এমন প্রতিবেদনের পেক্ষিতে মোঃ রফিকুল ইসলাম বিস্তারিত তথ্য দেয় যা নিম্নরুপ গত ২০০৬-২০০৭ ইং অর্থ বছরে ডাঃ মোঃ মতলেবুর রহমান ও মোঃ রফিকুল ইসলাম মিলে জামালগঞ্জ বাজারে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করে। দুই জনেই সৌদি আরবে অবস্থান করায় প্রতিষ্ঠানের নামকরন করা হয় সৌদি-বাংলা এগ্রোভেট।

উক্ত প্রতিষ্ঠানে বিসিক শিল্পনগরীর অনুমোদন ক্রমে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির পুষ্টি-প্রিমিক্স তৈরী পূর্বক বাজারজাত করে। মোঃ রফিকুল ইসলাম ২০০০ হতে ২০০৯ ইং মার্চ মাস পর্যন্ত কাজের তাগিদে সৌদি আরবে অবস্থান করায় মাঝে-মধ্যে দেশে যাওয়া-আসা করতেন। সর্বশেষ ২০০৯ সালের মার্চ মাসে তিনি দেশে ফিরে এসে ব্যবসার হাল ধরেন। দেশে আসার পূর্বে তার ৪র্থ ভাই মোঃ শাহিনুর ইসলাম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি দেখাশুনা করতেন। ডাঃ মোঃ মতলেবুর রহমান সৌদি আরবে অবস্থান করায় প্রতি ৫ মাস পর পর দেশে আসেন এবং ৪০(চল্লিশ) দিন দেশে অবস্থান করতেন। তিনি দেশের বাহিরে (সৌদি আরবে) অবস্থান করায় প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সাল হতে মোঃ রফিকুল ইসলাম পরিচালনা করেন।

Pop Ads

মোঃ রফিকুল ইসলামের চার ভাইদের মধ্যে মোঃ আবু সাইম তৃতীয় ভাই। সে ২০০০ সাল হতে বিভিন্ন কোম্পনীতে চাকরী করতেন। পিতা-মাতার পরামর্শে ২০০৮ সালে সর্বশেষ নাভানা (ভেটেরিনারী) কোম্পানীর চাকরী ছেড়ে দিলে ২০০৯ সালের মে মাসে তাকে বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে মৌখিক ভাবে এই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয় মোঃ রফিকুল ইসলাম। প্রথমত মার্কেটিং ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করে সে। ব্যবসার প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম গত ২০১২সালে মোঃ আবু সাইমকে মৌখিকভাবে পরিচালক পদে পদন্নোতি দেয়।

পরিচালক পদে পদন্নোতি পাওয়ার পর বিশ্বস্ততার খাতিরে ( ছোট ভাই) প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল যাবতীয় কাগজপত্র সে দেখাশুনা করেন। বিগত ২০১১ সালে মোঃ রফিকুল ইসলাম বিসিক শিল্পনগরী, দাদরা জন্তিগ্রাম, সদর উপজেলা, জয়পুরহাট এর এ-৪৬ নম্বর প্লট বরাদ্দ পেলে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি গত ২০১২ সালে স্থানান্তরিত করা হয়। ২০১২সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ডাঃ মোঃ মতলেবুর রহমান ‘সৌদি-বাংলা এগ্রোভেট’ এর নামে লাইসেন্স এর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে ‘সৌদি-বাংলা এগ্রোভেট’ লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়।

মোঃ আবু সাইম ২০১৫-২০১৬ ইং অর্থ বছর থেকে লোভের বশবর্তী হয়ে, গোপনে তার নামে ট্রেড লাইসেন্স, ইনকাম ট্যাক্স, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্সসহ সকল দপ্তরের কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করে কয়েকটি ব্যাংকে প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে নিজ নামে হিসাব খোলেন। এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড জয়পুরহাট শাখা থেকে প্রতিষ্ঠানের নামে যৌথ এ্যাকাউন্ট খুলে ব্যবসায়িক পরিধি বৃদ্ধির জন্য ব্যাংক লোন নেওয়ার পরামর্শ দেন। তাতে সম্মত হন ব্যবস্থাপনা পরিচালক । তারা ডাঃ মোঃ মতলেবুর রহমান ও মোঃ রফিকুল ইসলাম নামে এ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি এবং ব্যাংক লোন নেয়ার জন্য জমি মর্গেজ এর দলিলাদি মোঃ আবু সাইম এর হাতে প্রদান করা হয়।

কিন্তু সে প্রতারনা করে তার একক নামের এ্যাকাউন্ট খুলে মর্গেজ দাতা ও জামিন দার দেখিয়ে (যা আমাদের জামিনদার হিসেবে অজানা) ৫০,০০,০০০/-(পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা ঋন নেয়। সেই টাকা থেকে সৌদি-বাংলা আইডিয়াল মাদ্রাসার জায়গার জন্য ১০(দশ) শতক জমি ক্রয়বাবদ বায়না স্বরূপ ৪০,০০,০০০/-(চল্লিশ লক্ষ) টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে মোঃ আবু সাইম এর জালিয়াতি তারা জানতে পারলে তাকে প্রতিষ্ঠান হইতে বহিষ্কার করা হয় এবং জয়পুরহাট সদর থানায় ১৭/০৬/২০১৯ তারিখে জিডি করে যার নাম্বার ৭৫৬ ।

পরবর্তীতে জিডির কপি পত্রিকায় (করতোয়া) বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপর তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দ্বারা শালিশী বৈঠকে সমঝোতা হলে সকল দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ দাখিলের পর তদন্ত সাপেক্ষে সকল দপ্তরের লাইসেন্স আবার তাদের নামে নবায়ন হয় এবং যা বর্তমানে আছে। তারা নতুন করে একজন অংশিদার বৃদ্ধি করে গত ২৯/০৮/২০১৯ ইং তারিখে জয়পুরহাট জেলা ভুমি রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিঃ দলিল নং-ওঠ-০৪/১৯ উক্ত প্রতিষ্ঠানটি অংশিদারী কারবার নামা দলিল মূলে (১) ডাঃ মোঃ মতলেবুর রহমান (চেয়ারম্যান), (২) মোঃ রফিকুল ইসলাম(ব্যবস্থাপনা পরিচালক), (৩) রাবেয়া বসরী (পরিচালক) হিসেবে অংশিদার হন।

অংশিদারী কারাবার নামা দলিল মূলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি চলছে। বর্তমানে উক্ত প্রতিষ্ঠানের সকল কাগজপত্র তাদের ৩ জনের নামেই নবায়ন (হালনাগাদ) আছে। এরপরেও মোঃ আবু সাইম ঢাকা জয়েন স্টক হতে প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে মিল রেখে “সৌদি-বাংলা এগ্রোভেট লিমিটেড” নাম দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে, যা প্রতারনার শামিল এবং উদ্দেশ্যমূলক। ইতি মধ্যে মালিকানা দাবিদার মোঃ আবু সাইম পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দাখিল করে এবং ২৬/১০/২০২০ইং তারিখে বিসিক শিল্পনগরীর ফ্যাক্টরীতে লাঠি-সোটা ও দেশীয় অস্ত্রসহ ২৫-৩০জন সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা, মারধর ও ভাংচুর করে ফ্যাক্টরীর ক্ষতি সাধন করে বলে বলেন ব্যবস্থানা পরিচালক ।

পরবর্তীতে বিসিক কর্মকর্তাসহ তারা উক্ত বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করলে মালিকানা দাবিদার মোঃ আবু সাইমকে নিয়ে ২৬/১১/২০২০ইং তারিখে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অপরাধ) জয়পুরহাট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল), জয়পুরহাট সহ অফিসার ইনচার্জ, জয়পুরহাট সদর থানা, জয়পুরহাট ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত), জয়পুরহাট সদর থানা জয়পুহাটকে নিয়ে বিষয়টির ব্যপারে বিস্তারিত অনুসন্ধান করেন। যার অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে মোঃ আবু সাইম কাগজ পত্র জালিয়াতির করেছেন তা তিনি নিজ মুখে স্বীকার করে । বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে সৌদি-বাংলা এগ্রোভেট এর ডি.এল.এস লাইসেন্স নং ০৯৬, যা তাদের নামে নবায়ন করা আছ