শাজাহানপুরে সড়ক দখল করলেও উচ্ছেদ করা হয়না যুগের পর যুগ

শাজাহানপুরে সড়ক দখল করলেও উচ্ছেদ করা হয়না যুগের পর যুগ। ছবি-ওহাব

দখলবাজদের দৌড়াত্ব বেপরোয়া !!

সুপ্রভাত বগুড়া ( আবদুল ওহাব (বগুড়া) শাজাহানপুর প্রতিনিধি : বগুড়ার শাজাহানপুরে সড়কগুলো দখল করে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা নির্মান করেছে টাউট বাটপাররা। এসব দোকান পজিশন বিক্রি করে তারা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আর ব্যাবস্থা না নেয়ায় এ উপজেলায় সরকারি সড়কের ভুমি দখলের প্রতি এতো লোভ যা সাধারন বিবেককেও হার মানিয়েছে। দখলবাজদের দৌড়াত্বে উপজেলার বেশীরভাগ সড়ক এখন সংবীর্ণ হয়ে পড়েছে।

এসব কারনে দৈনন্দিন যাতায়াতে জনগনের ভোগান্তি সীমাহীন হলেও তথাপি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়না বছরের পর বছর। ফলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ তুলেছে এলাকার সাধারন জনগন।
উপজেলার মাঝিড়া-দুবলাগাড়ি সড়ক, টেংগামাগুর- নয়মাইল সড়ক, বীরগ্রাম-মাঝিড়া সড়ক, নয়মাইল-আমরুল ইউপি সড়ক, নয়মাইল- দাড়িগাছা সড়ক, আড়িয়াবাজার- ডেমাজানি সড়ক, মাদলা- জালশুকা-বাগবাড়ি সড়ক এবং কাটাবাড়িয়া, রাণীরহাট-শাবরুল, বনানী ও গন্ডগ্রাম এলাকার সড়কে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করায় সড়কগুলো সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে।

Pop Ads

দুটি পরিবহন দুদিক থেকে একসাথে চলাচল করতে পারছেনা। এতে করে জনসাধারনের শুধু ভোগন্তিই হচ্ছেনা, জরুরী প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবায় এ্যম্বুলেন্সে রোগী পরিবহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, প্রশাসনের গাড়ি ও থানা পুলিশের গাড়ি যাতায়াতে বিলম্ব ও হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর বছরের পর বছর সড়কগুলোতে এভাবে দখল চলমান থাকলেও কর্তাদের ঘুম ভাঙ্গছেনা কিছুতেই।

দেখাগেছে, এসব স্থােেন রয়েছে একাধিক সড়কের সংযোগস্থল ও বাজার। নিত্য প্রয়োজনে জনসাধারনের চলাচল এসব স্থানে সব সময়। জনসমাগম লেগেই থাকে। শুধু তাই নয়, শাজাহানপুর উপজেলাটি বগুড়া শহর সংলগ্ন হওয়ায় এখানকার মানুষের জীবন এবং জীবিকা বগুড়া শহর কেন্দ্রিক। সংগত কারনে এসব পথে মানুষের ও পরিবহন চলাচল উল্লেখযোগ্য হারে বেশী। অথচ এসব রাস্তা দখল করে একের পর এক অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে শতশত দোকান। আর দিনে দুপুরে এভাবে দোকান গড়ে উঠলেও দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ নেই কারও।

জানাগেছে, মাঝিড়া থেকে দুবলাগাড়ী সড়কটি প্রস্থে প্রায় ২৬ ফুট, কোথাও আরও বেশী। কিন্তু সরেজমিনে ১৮ ফুটও নেই। কাটাবাড়িয়া মোড়ে ৩০ ফুট প্রস্থের সড়কটি এখন ১৮ ফুট হয়ে পড়েছে। নয়মাইল ষ্ট্যান্ডের দাড়িগাছা সড়কটি প্রস্থে ৩৬ ফুট হলেও এখন ২০ ফুটও নেই। জমাদারপুকুর ষ্ট্যন্ডে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের একমাস যেতে না যেতেই আবারও শুরু হয়েছে দখল। এনিয়ে পাশের মার্কেট মালিকদের সাথে মারপিটের ঘটনাও ঘটেছে। একই অবস্থা অন্যন্য সড়কগুলোরও।

স্থানীয়রা বলছেন, চোখের সামনে সড়ক দখল করে বছরের পর বছর অতিবাহিত করলেও কর্তাদের নীরবতায় এভাবে দখলের আগ্রাসনে সংকীর্ণ হচ্ছে সড়ক। জনসাধারনও র্দুবৃত্তদের ভয়ে মুখ খোলেনা। দেখেও না দেখার ভান করছেন। ফলে অবৈধ দখলকারীদের সাহস ও দৌড়াত্ব দিন দিন বেড়েই চলছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে জানান, প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সড়ক দখল চলছে মহা উৎসবের সত। কিন্তু এসব দেখভাল করার দায়িত্বে যারা আছেন, তারা না ধরলে আমরা ধরবো কি করে। তারা অভিযোগ করে বলেন, স্থানগুলো ব্যাস্ততম ও গুরুত্বপুর্ন বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানালেও কোন ব্যাবস্থা নেয়া হয়না।

আর গোহাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জমাদার পুকুর বণিক সমিতির সভাপতি আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু জানান, রাতের আধারে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করে সড়কগুলো সংকীর্ণ করেছে টাউটরা। কিন্তু ব্যবস্থা না নেয়ায় এদের দৌড়াত্ব দিনদিন বেড়েই চলছে। আর ভোগান্তি হচ্ছে জনগনের যাতায়াতে।

এ সম্পর্কে শাজাহানপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) আশিক খান এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, উচ্ছেদ অভিযান একটা জটিল বিষয়। স্থানগুলো দেখে প্রতিবেদন দেওয়ার পর তা মন্জুর হলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কবে হবে এই উচ্ছেদ, সেই প্রতীক্ষার প্রহর গুণছে এলাকার সাধারন জনগন।