শীতের বার্তা নিয়ে হাজির ভোরের শিশির

52
শীতের বার্তা নিয়ে হাজির ভোরের শিশির

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে এখন চলছে হেমন্তকাল। হেমন্তের শুরুতেই দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। রাতের ঘন কুয়াশা ও ভোরে ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। দিনের বেলায় আবহাওয়া কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে শীত অনুভূত হচ্ছে। ভোরে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ, ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু এক অন্যরকম বৈচিত্রতা এনে দিয়েছে প্রকৃতিতে। যেনো নতুন ক্যানভাসে ফুটে উঠেছে প্রকৃতি। কার্তিকের এ প্রকৃতিই বলে দিচ্ছে শীত হয়তো এবার একটু আগেই চলে এসেছে।

শীতের আগমন শুরু হয়েছে মাদারীপুর শিবচরে। গত কয়েকদিন ধরেই দিনের বেলায় কিছুটা গরম অনুভূত হলেও সন্ধ্যা নামার পর একটু একটু করে কুয়াশা জড়িয়ে ধরছে প্রকৃতিকে। সকালেও দেখা গেছে সেটি। এতে হালকা শীতের অনুভূতি জাগিয়ে দিয়েছে।

Pop Ads

শীতের আগমনী বার্তায় প্রস্তুতিও শুরু করেছে এ এলাকার মানুষ। বস্তাবন্দী রাখা গরম কাপড় বের করতে শুরু করেছে। সন্ধ্যায় ও ভোরে হাঁটা-হাঁটি শেষে জমছে চায়ের আড্ডা। শীতের এই সময়টি উপভোগের সুন্দর সময় বলে মনে করেন অনেকে। তবে দিনের বেলায় ঘটছে শীতের ঠিক বিপরীত।

স্থানীয়রা জানান, দিনে কিছুটা গরমভাব থাকে। আবার মাঝরাতের দিকে বেশ ঠাণ্ডা পড়ে। ভোর থেকে আবার কুয়াশাও দেখা যাচ্ছে। এমন আবহাওয়ায় ঠাণ্ডা-কাঁশির প্রকোপ বাড়তে পারে।

সরেজমিন দেখা গেছে, শিবচর উপজেলায় শীতকালের ফসল গম, আলু, টমেটো, গাজর, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মরিচ, সরিষাসহ নানা রকমের রবিশস্য চাষাবাদের ব্যাপক প্রস্তুতি। শিবচরে ও আশপাশের এলাকার কৃষিনির্ভর পরিবারের কৃষকরা জমিতে গিয়ে দিনরাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মৌসুমি ফসল চাষের জন্য। কুয়াশার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে আবহমান বাংলার চিরচেনা এসব দৃশ্য।

সকালে হাঁটতে বের হওয়া তাসনুভা তুশিন যায়যায়দিনকে বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে ঠান্ডা নামছে। আর এই সময়ে গরম কাপড় পড়তে হচ্ছে। তবে রাত ও সকালে ঠান্ডা লাগলেও দিনের বেলা গরম পড়ছে। পরিবেশ ও প্রকৃতি এনে দেয় শীতের আগমনী বার্তায় এক অন্য রকম অনুভূতি।

উপজেলা হাঁটতে বের হওয়া মো. হাসান মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ভোর বেলায় কুয়াশা দেখা দেওয়ায় শীতশীত অনুভূত হচ্ছে। তাছাড়া দিনে গরম লাগলে ও মাঝরাতে শীত করছে। সকাল বেলা হাঁটতে খুব ভাল লাগলেও কুয়াশা স্মরণ করিয়ে দেয় যে শীত এসে গেছে।

পাঁচ্চর এলাকার ভ্যান চালক রুবেল মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যার পর রাস্তায় কুয়াশা ও শীত অনুভব হয়। রাত যত বাড়ে শীতের অনুভুতিও তত বেশি দেখা যায়। শীতের কারণে ঠাণ্ডা লাগায় রাত সাড়ে ১০টার পর আর বাইরে থাকি না। বাড়িতে চলে আসি।

এদিকে শীতের আগমনী বার্তায় স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে শোভা পাচ্ছে নানা রকমের শীতের গরম পোশাক। ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন মার্কেটে শীতের পোশাক দোকানিরা তুলেছেন।

ব্যবসায়ী রানা আহম্মেদ যায়যায়দিনকে বলেন, শীতের আগমনী বার্তায় গত বছরের বিভিন্ন শীতের পোশাক দোকানে উঠিয়েছি। শীতের পোশাক বিক্রি শুরু না হলেও বাচ্চাদের পোশাক কিছু বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে বেচাকেনা শুরু হবে।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য আলভী যায়যায়দিনকে বলেন, শীতের আগমনী বার্তা প্রকৃতিতে এনে দেয় এক অন্যরকম অনুভূতি। ঘাসের ডগায় শিশির আর ফোঁটা ফোঁটা কুয়াশা পূর্ণতা দেয় শীতের সৌন্দর্যের। এদিকে শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।

চরজানাজাত ইউনিয়নের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম যায়যায়দিনকে বলেন, আমাদের ওয়ার্ডটি যেন একবারেই প্রত্যন্ত গ্রামের প্রতিচ্ছবি। খোলা জায়গা বেশি থাকার কারণে এখানে কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে প্রতিদিন। এখানকার অনেক পরিবার এখনো কৃষিনির্ভর। ইতোমধ্যে শীতের আগমনী বার্তায় প্রস্তুতিও শুরু করেছেন এলাকার মানুষ। বস্তাবন্দি রাখা গরম কাপড় বের করতে শুরু করেছেন।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোছাঃ সেলিনা আক্তার বলেন, শীতে আসতে শুরু করেছে। শীতের সময়ে রোগ বালায়ের প্রকোপ দেখা দেয় । তাই এ সময় রোগীসহ সবাইকেই বেশি সতর্ক থাকতে হবে।