আত্রাইয়ে এক বৃদ্ধা মায়ের মানবেতর জীবনযাপন

আত্রাইয়ে এক বৃদ্ধা মায়ের মানবেতর জীবনযাপন। ছবি-আবুহেনা

সুপ্রভাত বগুড়া (আবুহেনা,আত্রাই নওগাঁ প্রতিনিধি): বৃদ্ধ বয়সে কেউ ঠিকমত খোঁজ রাখছেনা বৃদ্ধ মায়ের। বয়সের ভারে এখন নানা রোগ শোকের বাসা বাঁধছে শরীরে হয়েছে প্যারালাইসিস। কিছুটা হলেও সরকারের দেওয়া বয়স্কভাতার টাকায় চলে বৃদ্ধ জোহরা বেওয়ার ওষুধপত্র। আল্লাহ যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হায়াত দারাস করেন। হ্যাঁ এভাবেই কথাগুলো বলেছেন সন্তানের অবহেলার জোহরা বেওয়া (৭০) নামে এক বৃদ্ধ মা।

ওই বৃদ্ধ মহিলা জোহরা বেওয়া নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের হাটুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং থাকেন ছেলের বৌমার কাছে। বৃদ্ধ বয়সে তার চলার শক্তি আল্লাহ কেড়ে নিয়েছে। সঙ্গ দেয়ারও মানুষ নেই। জোহরা বেওয়ার বয়স ৭০ ছুই ছুই । এক ছেলে ও তিন মেয়ের তার। স্বামী মারা গেছে অনেক আগে । চোখের পাশে, কপালে ও হাতে যে দাগগুলো, তা কিন্তু তার বয়সের ছাপ নয়। হোচটে আঘাতের চিহ্ন ওগুলো। বৃহস্প্রতিবার (১৩ আগষ্ট) হাটুরিয়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,টিনের চাউনি টিনের বেড়া বদ্ধ অন্ধকার ঘরে বৃদ্ধা জোহরার বসবাস। ক্ষুধার যন্ত্রনায় সময় সময় বৃদ্ধা হাউ মাউ করে কাঁদছেন। ডাক্তার দেখাতে পারেননি অর্থ সংকটে।

Pop Ads

তিনি অন্ধকার ঘরের মধ্যে একা বসবাস করেন। বৃদ্ধা জোহরার বয়স্ক ভাতার কার্ডের টাকা সহ জমি রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছে বৃদ্ধার কাছে থেকে।বৃদ্ধা জোহরা সব হারিয়ে নিঃস্ব মানবেতর জীবনযাপন করছে।জীবন মৃত্যুর এই সন্ধিক্ষণে । জোহরা বেওয়ার উপর শারীরিক মানসিক নির্যাতন দিন দিন বাড়ছে জানা গেছে বিধবা জোহরা দেওয়ার জমি তার ছেলে জহির আলী এবং তার স্ত্রী শুকেদা বেগম গোপনে প্রতারণা করে লিখে নিয়ে একটি ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে অনেকটা আবদ্ধ করে রেখেছে যেখানে কোন লাইট ফ্যান এর ব্যবস্থা নেই, নিয়মিত খাবারও দেয় না। পেশাব পায়খানা করতে চাইলে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে।

জমি লিখে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ পাওয়ায় বিধবা জোহরার মেয়েরা অভিমান করে দেখাশোনা করে না বা করতে গেলে জহির উদ্দিনের স্ত্রী শুকেদা বেগম গালিগালাজ করে। প্রতিবেশীরা কোন খাবার দাবার দিলে সেটি নিয়ে ঝগড়া বিবাদ বাধায়। এই গরমের মধ্যে প্রতিবেশীর অনেকেই ফ্যান ও ইলেকট্রিক বিল দিতে চাইলেও শোকেদা বেগম বিদ্যুতের লাইন দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে বারবার।

প্রচন্ড গরমের সময় বিধবা জহুরা বেওয়া আহাজারি করতে থাকলে উল্টা বকাঝকা শুরু করে দেয় তার ছেলেও স্ত্রী শুকেদা। কি অমানবিক জমি লিখে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করছে। আশপাশের ঘরের সবাই ফ্যান ছেড়ে দিয়ে ঘুমাচ্ছে আর বিধবা জহুরা গরমের চোটে আহাজারি করতে শোনা গেছে বলে প্রতিবেশীরা জানাই। ধিক ঐ সন্তান নাতিপুতিদের যারা ফ্যান ছেড়ে দিয়ে ঘুমাচ্ছে পাশে বিধবা অসহায় মানুষ গরমে কাতরাচ্ছে।

বৃদ্ধা জোহরার মেয়ে শেফালী মায়ের মানবেতর জীবনযাপনের কথা বলতে চোখে ছলছল জল নিয়ে বলে, আমার মা খুব কষ্টে আছে।তাঁকে দেখার কেউ নেই।আমি মেয়ে হয়ে ও মায়ের সেবা করতে পারছি না।এমনই হতভাগ্য মেয়ে আমি।মাকে কাছে রেখে সেবা করতে চাইলে। মা যদি মারা যায় কেস করার হুমকি দেয় আমার ভাই। হাটকালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো.আব্দুস শুকুর সরদার জানান,আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা সত্যি ই কষ্টের।

আমি জানতাম না যে ছেলে মাকে এমন কষ্টে রাখতে পারে। আমি যখন জানলাম এর একটি ব্যবস্থা আমি করবো। হাটুরিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য মো.আফজাল হোসেন বলেন,বৃদ্ধা আমার প্রতিবেশীই ধরা যায়। বৃদ্ধার ছেলে ও ছেলের বউ কে অনেকবার বলেছি। তারা যেন বৃদ্ধার সাথে ভালো ব্যবহার করে। তারা ও অসহায় মানুষ।

বিষয়টি আত্রাই উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিধবা জোহরার প্রতিবেশীরা। ধিক এমন সন্তানকে। কিছুক্ষণ বিদ্যুৎ চলে গেলে কি অবস্থা হয় আমাদের আর বিধবা জোহরা এই প্রচÐ গরমে ঝোপের মধ্যে বন্দিদশায় রয়েছেন টিনের বেড়া দিয়ে তৈরি ঘরের কোনো জানালা নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here