ঐতিহাসিক ‘ইস্তাম্বুল সনদ’  থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে তুরস্ক

সুপ্রভাত বগুড়া (আন্তর্জাতিক): নারী অধিকার বিষয়ক ঐতিহাসিক ‘ইস্তাম্বুল সনদ’  থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে তুরস্ক। এদিকে সনদ ত্যাগের বিরুদ্ধে তুরস্কের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন নারীরা। খবর বিবিসি বাংলা’র। নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা। কাউন্সিল অব ইউরোপের সেক্রেটারি জেনারেল মারিয়া বুরিচ বলেছেন, আঙ্কারার এই সিদ্ধান্ত তুরস্কের ভেতর এবং বাইরে নারীদের সুরক্ষার পরিপন্থী।

তুরস্কের পরিবার বিষয়ক মন্ত্রী জেহরা জুমরুট তুরস্কের ওই সনদ থেকে বেরিয়ে যাবার কোন কারণ দেখাননি। তিনি বলেছেন, তার দেশের সংবিধানে নারীর অধিকার সংরক্ষিত রয়েছে। তবে দেশটির বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির নেতা গোকচে গোকচেন টুইট করে বলেন, সনদটি ত্যাগ করার অর্থ হলো তুরস্কে ‘নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রাখা এবং তাদের হত্যার শিকার হতে দেয়া।’

Pop Ads

‘ইস্তাম্বুল সনদ’ নামে পরিচিত ইউরোপীয় এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী প্রতিটি দেশের জন্য বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে- তাদেরকে ‘বৈবাহিক সম্পর্কের ভেতরে ধর্ষণ’ এবং ‘মেয়েদের খৎনা রোধ’ সহ নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে আইন তৈরি করতে হবে। এতে পারিবারিক সহিংসতা রোধ ও তার বিচারের কথাও আছে।

কিন্তু তুরস্কের রক্ষণশীলরা বলছেন, এই সনদে যে নারী-পুরুষের সাম্যের কথা বলা হয়েছে, তাতে পরিবারকে হেয় করা হয়েছে। তা ছাড়া চুক্তিতে যৌন-অভিরুচির জন্য কারো বিরুদ্ধে বৈষম্য না করার কথা আছে। যা ‘সমকামিতাকে উৎসাহিত করে’ বলে রক্ষণশীলরা মনে করছেন। তুরস্কের একটি সংগঠনের হিসেব মতে গত বছর সেখানে কমপক্ষে ৩শ’ নারী হত্যার শিকার হয়েছেন।

আরও বেশি সংখ্যক নারীকে সন্দেহজনক অবস্থায় মৃত পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় ‘সুলে সেত’ নামে এক তরুণীর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। আক্রমণকারীরা তাকে এক বহুতল অফিস ভবনে ধর্ষণের পর জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয়।

যাতে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে মনে হয়। তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান প্রায় দুই দশক ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন এবং তার সমালোচকরা তার বিরুদ্ধে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্যহানি এবং সামাজিক রক্ষণশীলতা প্রসারের অভিযোগ আনেন।