করোনা সংক্রমণের তীব্র জটিলতা প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে ভিটামিন-ডি

সুপ্রভাত বগুড়া (জীবন-জীবীকা): ভিটামিন ডি করোনা সংক্রমণের তীব্র জটিলতা প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। শরীরের প্রদাহমূলক প্রতিক্রিয়া কমিয়ে এই উপকার করে থাকে ভিটামিন ডি। গবেষণার দেখা গেছে, শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি নিশ্চিত করতে পারলে এই সংক্রমণ থেকে কিছু না কিছু প্রতিরক্ষা পাওয়া সম্ভব।

দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় জানা যায়, ভিটামিন ডি ও কোভিড-১৯ এর মধ্যে ইতিবাচক যোগসূত্র পাওয়া গেছে। গবেষণাটি ইঙ্গিত করছে যে, ভিটামিন ডি করোনা সংক্রমণের তীব্র জটিলতা প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

Pop Ads

ভিটামিন ডি ভাইরাসটির প্রতি শরীরের প্রদাহমূলক প্রতিক্রিয়া কমিয়ে এই উপকার করে থাকে। আরেকটি গবেষণাও বলছে যে, শরীরে ভিটামিন ডি এর মাত্রা বাড়িয়ে উল্লেখযোগ্য সুরক্ষা পাওয়া যেতে পারে। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, শ্বাসতন্ত্রীয় সংক্রমণে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টের ব্যবহার নিরাপদ ও প্রতিরক্ষামূলক।

এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যেসব রোগীর ভিটামিন ডি ঘাটতি ছিল তারা এই পুষ্টির সাপ্লিমেন্ট সেবনে সংক্রমণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি কমাতে পেরেছিল। তবে বিজ্ঞানীরা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেননি যে, কোন পর্যায়ের ডোজের ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারে কোভিড-১৯ এর জটিলতা কমবে বা প্রতিরোধ হবে।

তবে বিভিন্ন গবেষণার আলোকে এটা আশা করা যায়, শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি নিশ্চিত করতে পারলে এই সংক্রমণ থেকে কিছু না কিছু প্রতিরক্ষা পাওয়া সম্ভব। অনেকের ক্ষেত্রে অল্প প্রতিরক্ষার প্রভাবেও মৃত্যু হার কমতে পারে।

তাহলে কিভাবে পাবেন ভিটামিন ডি? * প্রথমত আপনাকে খাবার ও সূর্যালোক থেকে শরীরে যথেষ্ট মাত্রায় ভিটামিন ডি নিশ্চিতের চেষ্টা করতে হবে।

* স্যালমন ও টুনার মতো চর্বিযুক্ত মাছ, ডিম ও রোদে শুকানো মাশরুমে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এছাড়া ভিটামিন ডি ফর্টিফায়েড প্রাণীজ দুধ, আমন্ড মিল্ক, অরেঞ্জ জুস ও ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালেও ভিটামিন ডি পাবেন।

* রোদে সময় কাটিয়ে শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদন করতে পারেন। ত্বক সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসলে শরীর ভিটামিন ডি তৈরি হয়। প্রতিদিন ১৫-২৫ মিনিট সরাসরি রোদ পোহালেই যথেষ্ট। গবেষকদের মতে, সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে রোদ পোহানো ভালো। এসময় শরীরের এক-তৃতীয়াংশ যেন সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসে।

প্রতিদিন কতটুকু ভিটামিন ডি দরকার? প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ভিটামিন ডি’র মাত্রা হচ্ছে ৬০০ আইইউ, কিন্তু বয়স ৭০ বছরের উর্ধ্বে হলে এর সঙ্গে আরও ২০০ আইইউ যোগ করতে হবে। অনেকেই সূর্যালোকে সময় কাটিয়ে ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে এই চাহিদা মেটাতে পারেন, কিন্তু সকলের জন্য একথা প্রযোজ্য নয়।

সূর্যালোকের উপস্থিতিতে শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদন এবং খাবার থেকে এই পুষ্টি শোষণ ও প্রক্রিয়া ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। মনে রাখবেন, বয়স বাড়লে রোদের সংস্পর্শে ত্বকের ভিটামিন ডি উৎপাদনের সামর্থ্য হ্রাস পায়। কালো ত্বকের শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করতে আরেকটু বেশি সময় রোদে থাকতে হবে। যারা ঘর থেকে তেমন বের হবেন না, তাদের এই পুষ্টির ঘাটতি থাকার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া কিছু রোগও ভিটামিন ডি ঘাটতির কারণ হতে পারে। স্থূল মানুষদেরও কম মাত্রায় ভিটামিন থাকতে পারে, কারণ এই ভিটামিন চর্বিতে দ্রবণীয় বলে শরীরের চর্বিতে আটকা পড়ে ও রক্তপ্রবাহে পৌঁছতে পারে না। রক্ত পরীক্ষায় ভিটামিন ডি এর মাত্রা জানা যাবে।

কখন ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন? সূর্য ও খাবার থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না পেলে পুষ্টির সাপ্লিমেন্ট সেবন করা অযৌক্তিক কিছু নয়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সাপ্লিমেন্টের ৬০০ থেকে ৮০০ আইইউ সেবন করা ভালো, কিন্তু আপনি চাইলে ২,০০০ আইইউ পর্যন্ত গ্রহণ করতে পারবেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত এর চেয়ে বেশি সেবন করা যাবে না।

এতে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভিটামিন ডি এর জন্য কড লিভার অয়েল গ্রহণ করলে এতে শরীর ভিটামিন এ পেয়ে থাকে, বেশিমাত্রায় সেবন করলে লিভার বিষক্রিয়ায় ভুগতে পারে ও হাড় ভঙ্গুরপ্রবণ হতে পারে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ভিটামিন ডি ঘাটতি কাটিয়ে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা যায়। তাহলে করোনা সংক্রমণ ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে।

অতএব, ভিটামিন ডি এর ব্যাপারে সচেতন না থাকলে দ্রুত নিজেকে শুধরে নিন। হয়তো এই সংশোধনে আপনি করোনাভাইরাসকে রুখে দিতে সক্ষম হবেন। kfgd প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য রোদ পোহান, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান ও প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্ট সেবন করুন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here