জেনে নিন কোন ডালে আছে কি কি পুষ্টিগুণ !

সুপ্রভাত বগুড়া (স্বাস্থ্য-কণিকা): বাংলায় একটি কথা প্রচলিত আছে “ডাল নাকি গরীবের মাংস”। কথাটা কিন্তু মিথ্যে নয়। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টি, ভিটামিন ও খনিজ আমরা এই ডাল থেকেই পেয়ে থাকি। শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে ডালের গুরুত্ব অপরিসীম।

তাই ডাল খেতে পছন্দ করেন সবাই, তবে অনেকের বিশেষ কোনও ডালের প্রতি আসক্তি থাকতে পারে। তবে কোন ডালের কী পুষ্টি গুণ তা জেনে নিয়ে খাদ্য তালিকায় রাখাটাই ভাল। ডাল আমাদের জাতীয় খাদ্য।

Pop Ads

এক একজনের পছন্দের তালিকায় এক এক রকম ডাল জায়গা জুড়ে নিয়েছে, তবে আপনি যে ডালই পছন্দ করুন না কেন, তার পুষ্টি গুণ কতটা সেটা অবশ্যই যাচাই করে নেওয়া উচিত। বাজারে সাধারণত যে ডাল পাওয়া যায়, সেগুলোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে একটু জেনে নিন।  

মুগ ডালের পুষ্টি গুণ
সাধারণত বাজারে দুই প্রকারের মুগ ডাল পাওয়া যায়। একটা খোসা ছাড়া হলুদ রঙের আর একটি খোসা সমেত সবুজ রঙের। এই ডাল খুব সহজে হজম হয়ে যায়, যারা নিজেদের ওজন নিয়ে খুবই সতর্ক, তাদের জন্য এই ডাল খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন। মুগ ডালে প্রোটিন, প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার ও ভিটামিন বি১ -এ ভরপুর।    

উপকারিতা: 
– ওজন কমাতে সাহায্য করে। 
– গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মুগডাল খুবই উপকারী। 
– শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে মুগ ডাল।

মুসুরি ডালের পুষ্টি গুণ
বাঙালির বেশির ভাগ রান্নাঘরেই বোধহয় মুসুরি ডালের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার, পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি১ প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এই ডালের মধ্যে। লাল রঙের মুসুরি ডালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন থাকে। মাত্র এক কাপ মুসুর ডালে ২৩০ ক্যালোরি, প্রায় ১৫ গ্রাম ফাইবার এবং ১৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে।   

 উপকারিতা: 
– মুসুরি ডাল পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে, সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।  
– শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি থাকলে অবশ্যই মুসুরি ডাল খান, কারণ এই ডাল পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে। 
– শরীরে জমে থেকে কোলেস্টেরল দূর করে, শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।  

অড়হর ডাল
আমাদের দেশে অড়হর ডাল বেশি একটা ব্যবহার হয় না। তবে এই খুবই সুস্বাদু। এই ডালে রয়েছে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি এবং পটাসিয়াম। আপনার শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে এই ডাল।

উপকারিতা:
– অড়হর ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
– নিয়মিত ফাইবার গ্রহণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়, স্ট্রোক এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
– এতে ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। যা মহিলাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
– এই অড়হর কার্বোহাইড্রেটের একটি ভাল উৎস। এর সাহায্যে দেহর শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। 

বিউলির ডাল
এই ডাল দুই রকমের। একটি খোসা ছাড়া সাদা রঙের, আর একটি কালো। আমাদের দেশে এই ডাল তেমন প্রসিদ্ধ নয়, তবে ভারতের বিভিন্ন স্থানে এটি প্রসিদ্ধ। পাঁপড় তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হয় এই ডাল। ডাল মাখানি থেকে তড়কা এবং রান্নাতেই ব্যবহৃত হয় এই ডাল। পুষ্টিতে ভরা এই ডাল যেমন সুস্বাদু তেমনি বিভিন্ন গুণে ভরপুর।  

উপকারিতা: 
– বিউলির ডালে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়।
– পেটের জ্বালা দূর করে।
– আপনার ত্বককে চকচকে ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এই ডাল।

ছোলার ডাল
ছোলার ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন পাওয়া যায়। ছোলার ডাল আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহ করতে সহায়ক। ছোলার ডাল খাওয়া যুবকদের জন্য বেশি উপকারী বলে মনে করা হয়। এতে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে, যা পেশি গঠনে সাহায্য করে।

উপকারিতা: 
– ছোলার ডাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
– এতে কোলেস্টেরলের পরিমাণও খুব কম।
– ছোলার ডাল খাওয়া রক্তাল্পতা, জন্ডিস, কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুব উপকারী বলে বিবেচিত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here