ডিমের দাম ঠিক হচ্ছে এসএমএসে

ডিমের দাম ঠিক হচ্ছে এসএমএসে

রাজধানীর ডিমের বাজারগুলোতে চলছে নৈরাজ্য। ডিমের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে মোবাইল এসএমএসে। এতে করে ক্রয় রশিদ দিচ্ছে না কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। আর তা চাইলে ডিলারশিপ বাতিলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ আড়তদারদের।

শনিবার কাপ্তানবাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে মিলেছে এসব তথ্য। এসময় ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয় ৩০ হাজার টাকা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে খুচরায় হালিতে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। এতে নাভিশ্বাস সীমিত আয়ের মানুষের।

Pop Ads

সাত থেকে ১০দিন আগেও খুচরা বাজারগুলোতে যেখানে এক ডজন ডিমের দাম ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, শুক্রবার সেসব বাজারে এক ডজন ডিমের সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। পাড়া বা মহল্লার ভেতরের দোকানগুলোতে কোথাও কোথাও ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা ডজন পর্যন্ত ডিম বিক্রি হচ্ছে।

এবিষয়ে প্রান্তিক খামারি বলছেন, বাজারের তুলনায় প্রতি পিস ডিমে তারা ২ টাকা কম পান। কারণ ডিম বিক্রি পুরোটাই নিয়ন্ত্রিত। দেশের বিভিন্ন পোল্ট্রি ডিলার অ্যাসোসিয়েশন সমিতির মাধ্যমে ডিমের দাম কত হবে তা নির্ধারণ করে থাকেন। তাদের নির্ধারিত দামের বাইরে ডিম বিক্রির সুযোগ নেই এ অঞ্চলে।

এঅবস্থায় সারা দেশে ডিমের দর কত হবে তা নির্ধারিত হয় রাজশাহী, ঢাকা ও কিশোরগঞ্জ থেকে। প্রতিদিন সকালে ডিমের দর নির্ধারণ করে মোবাইল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুদে বার্তায় সবাইকে জানিয়ে দেয় সংগঠনগুলোর হর্তাকর্তারা। দেশের সব এলাকায় আড়তদাররা ডিম সংগ্রহ করলেও এই তিন এলাকায় সবচেয়ে বেশি ডিম সংগ্রহ করার কারণে এই তিন অঞ্চলের বাজার পর্যালোচনা করে ডিমের দাম ঠিক করা হয়।

তবে, আড়তদারদের দাবি, ডিমের বাজার চলে গেছে কিছু করপোরেট প্রতিষ্ঠানের হাতে। তারাই ক্রয় রশিদ দিচ্ছে না। করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও খামারিদের নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলেও জানাচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় রাজধানীর কাপ্তানবাজারে ডিমের আড়তে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান। এসময় ক্রয় রশিদ না থাকাসহ নানা অনিয়মে ৩ প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে তারা।

এদিকে ডিমের বাজারের এই অস্থিরতার কারণ নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরির কথা জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, যা প্রকাশ হবে রোববার। অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে ডিমের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়।

এ বছরের শুরুতে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজন প্রতি প্রায় ৩০ টাকা বেড়েছিল। এর আগে গত অগাস্টেও ডিমের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। পরে বর্ষা শেষে দাম কমে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা হয়।

তবে এবারে এক ডজন ডিমের দাম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা হওয়ার ঘটনাকে বলা হচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাসে ডিমের সর্বোচ্চ দাম। আর এই দাম বৃদ্ধির পেছনে একাধিক বিষয় কাজ করছে বলে দাবি করছেন ডিম ব্যবসার সাথে জড়িতরা।