বিলাসিতা করে তোপের মুখে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক :প্রধানমন্ত্রী

44
বিলাসিতা করে তোপের মুখে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক :প্রধানমন্ত্রী

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে খচর বাঁচাতে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যখন বিমানে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে ভ্রমণ করতেন সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার উল্টো বিলাসিতা করছেন।

সম্প্রতি তিন নিউইয়র্কে যাওয়ার সময় প্যারিসে তার পরিবারের সাথে আইফেল টাওয়ার পরিদর্শন করেছিলেন। যখন পাকিস্তানিদের আমদানি বাঁচাতে কম চা পান করার আহ্বান জানানো হচ্ছে, তাদের প্রধানমন্ত্রী আইফেল টাওয়ারের উপরে একটি রেস্তোরাঁয় খাবার খেয়েছেন। ‘বিশেষ ফ্লাইটটি ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছিল, এবং তিনি সেখানে স্ত্রী এবং দুই সন্তানের সাথে ডিনার করেছিলেন। দূতাবাস দ্বারা বিল পরিশোধ করা হয়েছিল, যা ছিল জনপ্রতি ডিনার ছিল ৩০০ ইউরো,’ এক্সে (সাবেক টুইটার) সিনিয়র পাকিস্তানি সাংবাদিক জাহেদ হোসেন বলেছেন।

Pop Ads

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে পাকিস্তানের জনসাধারণের অসংখ্য প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, যারা কাকারকে ‘করদাতাদের অর্থ উপভোগ করার’ এবং ‘একটি বাচ্চার মতো আচরণ করছে যে তার পিতামাতা কীভাবে অর্থ উপার্জন করে তার কোন ধারণা নেই’ বলে অভিযোগ করছে। লেখিকা আয়েশা সিদ্দিকাও অন্তর্র্বতীকালীন প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘প্রশ্নটি এই নয় যে অর্থ অপচয় হয়নি তবে কেন তারা তাকে এটি করতে দিল?’

কাকারের এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসে যখন পাকিস্তান বছরের পর বছর ধরে অর্থনৈতিক সংকটের সাথে লড়াই করছে। কম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কারণে জুলাই মাসে আইএমএফ তাদেরকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। সরকারি সূত্র ডনকে নিশ্চিত করেছে যে, নিউইয়র্ক সিটিতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে কাকার প্যারিসে থেমেছিলেন।

আইফেল টাওয়ারে পারিবারিক নৈশভোজটি ভ্রমণের হাইলাইট বলে মনে হচ্ছে। জাতিসংঘে তার সফরের ফাঁকে বিশ্ব নেতাদের সাথে দেখা করার কথা ছিল কাকারের, কারো সাথে দেখা হয়নি বলে জানা গেছে। তার সময়সূচীতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যপে এরদোগান এবং একটি সরকারি মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক অন্তর্ভুক্ত ছিল। কোন বৈঠকই হয়নি, তবে তিনি লন্ডনে যাওয়ার আগে নিউইয়র্ক সিটিতে পাঁচ দিনের অবস্থানের সময় একটি সুন্দর তুর্কি ডিনার উপভোগ করেছিলেন বলে জানা গেছে, যেখানে তিনি গোপনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে দেখা করে থাকতে পারেন।

কাকার পাকিনি নেতাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন যারা ব্যয়বহুল বিদেশ সফর উপভোগ করেন। আসিফ আলি জারদারি, যিনি ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, একবার নিউইয়র্ক সফরের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ১১ লাখ ডলার বিল করেছিলেন, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন রিপোর্ট করেছে। তার মেয়াদে, জারদারি প্রায় ৩,২২৭ জন লোক নিয়ে ১৩৪টি বিদেশ সফর করেছেন। তিনি মোট ২৫৭ দিন বিদেশে কাটিয়েছেন।

নওয়াজের চার বছরের মেয়াদেও তাকে বিদেশে ২৬২ দিন কাটাতে দেখা গেছে। ২০১৬ সালে, নওয়াজ তার নিউইয়র্ক সফরে ৯ লাখ ডলারের বেশি খরচ করেছিলেন। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে শেহবাজ শরিফের জোট সরকারের প্রথম নয় মাসে, পাকিস্তান সরকার বিদেশী সফরে ২ লাখ ডলারের বেশি ব্যয় করেছে। সূত্র: দ্য প্রিন্ট।