বিষ্ণুপুর গ্রামের দেয়ালে দেয়ালে হুমকির পোস্টার

160
বিষ্ণুপুর গ্রামের দেয়ালে দেয়ালে হুমকির পোস্টার

মুরইল ইউনিয়ন: গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেয়ালে রহস্যময় হুমকির পোস্টারে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রামবাসী জানায়, সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা চেয়ে প্রায় সবার বাড়ির দেয়ালে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতের যেকোনো সময় পোস্টারগুলো লাগিয়েছে দুর্বৃত্তরা। টাকা না দিলে ছেলে-মেয়েদের ক্ষতি করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনা ঘটেছে বগুড়ার কাহালু উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে। ওই গ্রামে চার শতাধিক পরিবারের বসবাস করে ।

রবিবার (১ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিষ্ণুপুর গ্রামের ৩০০-৪০০ ঘরের দেয়ালে ‘শ্যাডো’ বাহিনীর পোস্টার লাগানো। সেখানে লেখা, ‘আসসালামু আলাইকুম, সর্বনিম্ন ২০০ থেকে ৫০০০ টাকা ৬ তারিখের মধ্যে দিতে হবে। না হলে ৭ তারিখ থেকে আপনাদের ছেলে-মেয়ে হারিয়ে গেলে আমার কোনো কিছু করার থাকবে না। আমি বা আমরা কে সেটা না খুঁজে আমি যা বলছি সেটা করার চেষ্টা করেন। তাহলে কিচ্ছু হবে না।

Pop Ads

অল্প কিছু টাকার জন্য বাচ্চাদের বিপদে ফেলাবেন না। যদি ছেলে মেয়েদের মঙ্গল চান তাহলে লোয়া পুকুরে সোলার লাইটের সঙ্গে যে বক্স থাকবে নিজের টাকার সঙ্গে নাম কাগজে লিখে ওই বক্সে ফেলান আর নিজের বাচ্চাকে সুরক্ষিত রাখুন। আমার এই কাগজ আপনি পড়ছেন, তাহলে মনে করেন আপনার ছেলে মেয়েকে তুলে আনতেও পারব। দয়া করে টাকাটা দিয়েন আমরা ছেলেগুলা ভালো না। ভালো থাকবেন ৬ তারিখ পর্যন্ত আল্লাহ হাফেজ। এরপর ইংরেজিতে ঝযধফড়ি লেখা দেখা যায় পোস্টারে।’

সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির দেয়ালে এমন পোস্টার লাগানো দেখে ভীত এবং আতঙ্কিত হয়েছে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। অনেকে তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে একা পাঠাচ্ছেন না। আবার অনেকে ছেলে-মেয়ে কাছে রেখে বাড়িতে বসে আছেন এমনকি বাইরে খেলাধুলা করতেও যেতে দিচ্ছে না।

বিষ্ণুপুর গ্রামের মাঝাগাড়ি পাড়ার সোহেল ইবনে নূর প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সকালে সবার চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখি আমাদের পাড়ার সবার বাড়ির দেয়ালে কে বা কাহারা টাকা চেয়ে পোস্টার লাগিয়ে গেছে। এ নিয়ে আমরা অনেক ভয়ে আছি। তবে যে কাজটি করেছে সে পরিচিত কেউ হতে পারে। কারণ সবার কাছে একই পরিমাণ টাকা চায়নি। সামর্থ্য বুঝে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। যা সন্দেহজনক।’

আশা খাতুন নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘আমার কাছে ২০০ টাকা চাওয়া হয়েছে ৷ আমার ছেলেকে আজ আমি স্কুলে যেতে দেইনি। কী একটা ভয়ের মধ্যে পড়ে গেলাম। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।’

আরিফুল ইসলাম আরিফ নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার বাড়ির দেয়ালে পোস্টার লাগানো হয়েছে। আমার কাছে ৫০০০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে।’

মুরইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ‘বিষ্ণুপুর গ্রামের প্রায় ৪০০ ঘরে একটি চক্র টাকা চেয়ে পোস্টার লাগিয়েছে। আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।’

বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘বিষ্ণুপুর গ্রামের ঘটনা অবগত হওয়া মাত্রই পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করেছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।