শাজাহানপুরে ইউএনও’র বিদায় বেলাতেও অভিযোগ !

শাজাহানপুরে ইউএনও’র বিদায় বেলাতেও অভিযোগ ! ছবি-ওহাব

সুপ্রভাত বগুড়া (আবদুল ওহাব শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বদলী হয়ে চলে গেলেন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা পারভিন। এ উপজেলায় তার কার্যকাল এক বছর তিনমাস। এর মধ্যেই জনমনে অভিযোগ উঠেছে সীমাহীন। এসব কারনে দীর্ঘ একমাস যাবত তিনি অফিসে আসছিলেন না। বাসায় বসে শুধু অফিসিয়াল জরুরি ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করতেন।

আর নিয়মিত অফিস না করায় দৈনন্দিন সেবা থেকে বঞ্ছিত হয়ে আসছিল উপজেলার সাধারণ জনগণ। এমন নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিত তিনি বদলি হয়ে চলে গেলেন। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস, এমন পরিস্থিতিতে নীরবে সোমবার ২৫ জানুয়ারী দুপুরে তিনি বদলী হয়ে চলে যাবার সময়ও রাস্তায় তার চলমান গাড়ির সামনে গিয়ে দাড়ান উপজেলা পরিষদের চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মচারী (মালী) ইদ্রিস আলী।

Pop Ads

বিদায় লগ্নেও তার গাড়ী থামিয়ে অভিযোগ করেন। “স্যার আমার বেতন বিলে স্বাক্ষরটা করে গেলেন না স্্যার…? আমি পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।” জানাযায়, এরকম তার প্রতি অসন্তষ্ট ছিল অনেকেই। আর এসব কারনে তার বদলীর আদেশ পেলেও তাকে উপজেলা চেয়ারম্যানগন, কোন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, মুক্তিযোদ্ধাগন ও উপজেলা পরিষদ থেকে তাকে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়নি।

এমন অভিযোগ রয়েছে আরও অনেকের। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে বাল্যবিয়ে ইভটিজিং, রাস্তার গাছ কাটা ও নানা অপরাধ সংঘটিত হলেও সেবা না পেয়ে জনগনের দুর্ভোগ হয়ে পড়েছিল অন্তঃহীন। অনিয়মিত অফিস করায় বিভিন্ন সেকটরে অভিযোগ দিতে এসে জনগনকে ফিরে যেতে হয়েছে বাধ্য হয়ে। শুধু তাই নয়, দৈনন্দিন সেবা থেকেও বঞ্ছিত হয়ে আসছেন উপজেলার সাধারণ জনগণ।

এসবের মধ্যেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে তাকে রাজশাহী পরিবেশ অধিদফতরে বদলি করা হয়। তার এই বদলি হয়ে চলে যাবার কথা শুনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরনের খবরও পাওয়া গেছে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, নিয়মিত অফিসে না আসা, অধস্তন কর্মকর্তা, কর্মচারী, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষের সাথে দূর্ব্যবহার, দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখা, সরকারি মোবাইল ফোন রিসিভ না করা সহ নানা কারণে বিতর্কিত হয়ে পড়েন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা পারভীন।

একপর্যায়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ এবং তার গাড়ী অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটে। এমনকি তার অপসারণ চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম। তার অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মি, এমনকি তার অধ:স্তন কর্মকর্তা-কর্মচারিগণও তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

এছাড়াও জনমনে অভিযোগ প্রসংগে আরও জানাযায়, চল্লিশ দিনের কর্মসুচির কর্মসৃজনের লোকজন দিয়ে উপজেলার রাস্তাঘাট ও গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন না করে তিনি সরকারি প্রকল্পগুলোতে তাদেরকে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এনিয়ে শুধু জনপ্রতিনিধি নয়, সচেতন জনগনের মাঝেও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, চল্লিশ দিনের কর্মসুচির কর্মসৃজনের লোকজনকে সরকারি প্রকল্পগুলোতে শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানোর কারনে উপজেলার রাস্তাঘাট ও গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাই এ থেকে পরিত্রান পাওয়া একান্ত জরুরি। তবে এ রকম নানা অভিযোগ জনমনে বিরাজ করার মাঝেই তার এই বদলী জনমনে অনেকটা প্রশান্তির বাতাস এনে দিয়েছে।